জোর করে দেয়া হয়নি ৬ সমন্বয়কের বিবৃতি , স্বজনরা জানালেন
- আপডেট টাইম : ০৩:২৫:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
- / 21
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের বিবৃতি জোর করে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে দেখা করে তারা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
স্বজনরা বলেন, ছয় সমন্বয়ক স্বেচ্ছায় বিবৃতি দিয়েছেন। জোর করে বিবৃতি নেয়া হয়নি।
অপরদিকে সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা মনে করি আমাদের ডিবি কার্যালয় মানুষের আস্থার জায়গা। মানুষ যখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে বা আমরা নিয়ে আসি, আমরা তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করি।
ডিবি হেফাজতে থাকা সমন্বয়কদের নিয়ে তিনি বলেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা গতকাল রাতে ও আজকে তাদের সঙ্গে দেখা করেছে। সমন্বয়করা ভালো আছে, তাদের স্বজনরা আমাদের ধন্যবাদও দিয়েছে।
জোর করে বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে গুজব উল্লেখ করে হারুন বলেন, ডিবি কার্যালয় আস্থার জায়গা। সেখানে কাউকে জোর করে রাখা হয়না, অন্যায়-অত্যাচার করা হয়না, বিবৃতি নেওয়া হয় না। সমন্বয়করা বুঝেছে এবং আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছে, সরকার তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। এজন্যই তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে।
সমন্বয়করা কবে বাড়িতে ফিরবে এ প্রসঙ্গে ডিবিপ্রধান বলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলছি, পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি, যেহেতু আমরা তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছি। খুব শিগগিরই তারা পরিবারের কাছে ফিরে যাবে।
এর আগে গতকাল রোববার রাতে ডিবি হেফাজত থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। তাদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।
আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা ইতোমধ্যে সরকার পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে এই মুহূর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।
লিখিত বার্তায় স্বাক্ষর করেন আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম।
রোববার বিকেলে ডিবি হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের দেখা করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। বিকেলে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্যদের স্বজনরা মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ের পাশের রাস্তায় জড়ো হন। বেশ কিছুক্ষণ অবস্থানের পরও ডিবি কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে তারা কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিভাবকরা বলেন, ডিবি হেফাজতে সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব সমন্বয়কারীর মুক্তিরও দাবি জানান তারা। তবে, এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেছেন, নিরাপত্তা দিতেই নাহিদ, সারজিস, আসিফ ও হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কোটা আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়কারীকে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। সহিংসতার পেছনের কারিগরদের খুঁজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গুজবে কান না দিয়ে পরিবারকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন তিনি।
গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) নিরাপত্তার কথা বলে আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে হাসপাতাল থেকে মিন্টো রেডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। পরে শনিবার (২৭ জুলাই) সারজিস, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমকেও ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়।
নিউজ লাইট ৭১