ঢাকা ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিটি মেট্রোপলিটন এলাকায় একটি থানাতে হলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নারীদের রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 123

নিউজ লাইট ৭১: প্রতিটি থানাকে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায় পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, প্রতিটি মেট্রোপলিটন এলাকায় একটি থানাতে হলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নারীদের রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

যা অল্প সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হবে। পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশকেই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেয়ে পুলিশই সবচেয়ে বেশি আইনের প্রয়োগ করতে পারে।

গতকাল রোববার সকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৭তম ক্যাডেট উপ-পরিদর্শক (এসআই) ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, জনগণের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার বিভিন্ন আইনকে সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযোগী করেছে। আইনের শাসন নিশ্চিত করতে পুলিশকে এগিয়ে আসতে হবে।

মামলার যথাযথ তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা, মামলার বাদি, ভিকটিম ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদানসহ অর্পিত দায়িত্ব নির্মোহভাবে পালন করতে হবে। জনগণকে আইনি সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সদস্যদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতেত হবে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীসহ সকল সেবাপ্রত্যাশী জনগণের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে।

এর আগে আইজিপি ৩৭তম এসআই ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। এক বছর মেয়াদি এই প্রশিক্ষণে নতুন নিয়োগ পাওয়া এক হাজার ৭৫৯ জন এসআই অংশ নেন।

এর মধ্যে নারী সদস্য ১৩৭ জন। প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী পাঁচজনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আইজিপি। এ সময় পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ নাজিবুর রহমান, উপাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ-হিল বাকী, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) একেএম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার হুমায়ুন কবীর, রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, জবাবদিহিতামূলক ও জনবান্ধব পুলিশবাহিনী গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশ’ হবে অনন্য দৃষ্টান্ত। বর্তমানে পুলিশবাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, সন্ত্রাস দমন, মাদকের অপব্যবহার ও বিস্তার রোধে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

সামপ্রতিক বছরগুলোতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পুলিশের পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।‘বর্তমান সরকার পুলিশের কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে নতুন ও বিশেষায়িত ইউনিট গঠন, ধারাবাহিকভাবে জনবল বাড়ানো, কর্মদক্ষতার উন্নয়নে দেশে-বিদেশে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের সুব্যবস্থা, অত্যাধুনিক লজিস্টিকস ও ইকুইপমেন্ট সরবরাহের সুব্যবস্থা করছে।

আইজিপি তার বক্তব্যে জানান, নতুন প্রযুক্তির বিকাশ ও বিশ্বায়নের সঙ্গে অপরাধের প্রকৃতি, মাত্রা ও অপরাধ সংগঠনের কৌশলে নিয়ত পরিবর্তন ঘটছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, পুলিশকেও তাই অপরাধ মোকাবিলা, কলা-কৌশল প্রয়োগ এবং প্রযুক্তি ও লজিস্টিকস ব্যবহারে সক্ষমতা অর্জন করতে হচ্ছে।

অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা থেকে শুরু করে পুলিশের প্রাত্যহিক কাজের পরিসরে সাইবার ক্রাইম রোধ, ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম নিয়ন্ত্রণ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ ব্যবস্থাপনা, জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন ইত্যাদি সংযোজিত হয়েছে। জনগণের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার বিভিন্ন আইনকে সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযোগী করেছে।

এসময় জেন্ডার গাইডলাইন্স অনুসরণ, নারী সহায়তা কেন্দ্র, শিশু হেল্প ডেস্ক প্রবর্তন, ডিএমপিতে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন, সারা দেশে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা, পুলিশবাহিনীতে ধারাবাহিকভাবে বর্ধিত হারে নারী সদস্য নিয়োগ, বাংলাদেশ পুলিশে কর্ম পরিবেশের উন্নয়ন, বেবি-ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং পুলিশ সদস্যদের আজীবন রেশনসহ বিভিন্ন সরকারের নেয়া বিভিন্ন যুগোপযোগী ও ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন আইজিপি।

Tag :

শেয়ার করুন

প্রতিটি মেট্রোপলিটন এলাকায় একটি থানাতে হলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নারীদের রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে

আপডেট টাইম : ১০:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: প্রতিটি থানাকে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায় পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, প্রতিটি মেট্রোপলিটন এলাকায় একটি থানাতে হলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নারীদের রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

যা অল্প সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হবে। পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশকেই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেয়ে পুলিশই সবচেয়ে বেশি আইনের প্রয়োগ করতে পারে।

গতকাল রোববার সকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৭তম ক্যাডেট উপ-পরিদর্শক (এসআই) ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, জনগণের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার বিভিন্ন আইনকে সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযোগী করেছে। আইনের শাসন নিশ্চিত করতে পুলিশকে এগিয়ে আসতে হবে।

মামলার যথাযথ তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা, মামলার বাদি, ভিকটিম ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদানসহ অর্পিত দায়িত্ব নির্মোহভাবে পালন করতে হবে। জনগণকে আইনি সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সদস্যদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতেত হবে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীসহ সকল সেবাপ্রত্যাশী জনগণের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে।

এর আগে আইজিপি ৩৭তম এসআই ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। এক বছর মেয়াদি এই প্রশিক্ষণে নতুন নিয়োগ পাওয়া এক হাজার ৭৫৯ জন এসআই অংশ নেন।

এর মধ্যে নারী সদস্য ১৩৭ জন। প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী পাঁচজনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আইজিপি। এ সময় পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ নাজিবুর রহমান, উপাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ-হিল বাকী, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) একেএম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার হুমায়ুন কবীর, রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, জবাবদিহিতামূলক ও জনবান্ধব পুলিশবাহিনী গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশ’ হবে অনন্য দৃষ্টান্ত। বর্তমানে পুলিশবাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, সন্ত্রাস দমন, মাদকের অপব্যবহার ও বিস্তার রোধে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

সামপ্রতিক বছরগুলোতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পুলিশের পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।‘বর্তমান সরকার পুলিশের কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে নতুন ও বিশেষায়িত ইউনিট গঠন, ধারাবাহিকভাবে জনবল বাড়ানো, কর্মদক্ষতার উন্নয়নে দেশে-বিদেশে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের সুব্যবস্থা, অত্যাধুনিক লজিস্টিকস ও ইকুইপমেন্ট সরবরাহের সুব্যবস্থা করছে।

আইজিপি তার বক্তব্যে জানান, নতুন প্রযুক্তির বিকাশ ও বিশ্বায়নের সঙ্গে অপরাধের প্রকৃতি, মাত্রা ও অপরাধ সংগঠনের কৌশলে নিয়ত পরিবর্তন ঘটছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, পুলিশকেও তাই অপরাধ মোকাবিলা, কলা-কৌশল প্রয়োগ এবং প্রযুক্তি ও লজিস্টিকস ব্যবহারে সক্ষমতা অর্জন করতে হচ্ছে।

অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা থেকে শুরু করে পুলিশের প্রাত্যহিক কাজের পরিসরে সাইবার ক্রাইম রোধ, ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম নিয়ন্ত্রণ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ ব্যবস্থাপনা, জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন ইত্যাদি সংযোজিত হয়েছে। জনগণের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার বিভিন্ন আইনকে সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযোগী করেছে।

এসময় জেন্ডার গাইডলাইন্স অনুসরণ, নারী সহায়তা কেন্দ্র, শিশু হেল্প ডেস্ক প্রবর্তন, ডিএমপিতে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন, সারা দেশে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা, পুলিশবাহিনীতে ধারাবাহিকভাবে বর্ধিত হারে নারী সদস্য নিয়োগ, বাংলাদেশ পুলিশে কর্ম পরিবেশের উন্নয়ন, বেবি-ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং পুলিশ সদস্যদের আজীবন রেশনসহ বিভিন্ন সরকারের নেয়া বিভিন্ন যুগোপযোগী ও ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন আইজিপি।