ঢাকা ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছি‌লো বিভিন্ন পেশার মানুষের যাতায়াত, চলতো নেশার আড্ডা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৬:০১:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২
  • / 36

উত্তরায় বা‌রে ডি‌বির অভিযান নিয়ে ব্রিফিং। ছবি: নিউজ লাইট ৭১

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ এলাকার ৩৫ নম্বর বাড়িতে চল‌তো হিন্দি গান আর ডিজে পার্টি। বস‌তো নেশার আসরও। বাড়িতে প্রতিদিন অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলতো।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের অভিযোগের ভি‌ত্তি‌তে ওই বা‌ড়ি‌তে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালায় ডিএম‌পির গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। এ সময় ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাড়িটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দেশি, বিদেশি ব্রান্ডের ৫০০ বোতল মদ ও ছয় হাজার ক্যান বিয়ার।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বাড়িটির সপ্তম তলায় গিয়ে দেখেন তরুণ-তরুণীদের হুড়োহুড়ি। বাড়িটির বিভিন্ন ফ্লোরে বিদেশি মদ ও বিয়ার মজুদের প্রমাণ পায় গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। বিপুল পরিমাণ মদের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে কথিত এই বারের কর্মকর্তারা কোনো সঠিক তথ্য জানাতে ব্যার্থ হন।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি জানান, কথিত `কিং ফিশার’ বারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিসহ বার মালিকের মুক্তার হোসেনসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

ভবনটিতে এই কার্যক্রম কি ব্যানারে চলতো প্রশ্ন করা হলে ডিবি প্রধান বলেন, কিংফিশার রেস্টুরেন্টে নামে এই ভবনের এসব কার্যক্রম চলতো। কথিত এই বারের মালিক মুক্তার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। মুক্তারের নারায়নগঞ্জ, উত্তরা, মিরপুরসহ বেশ কয়েকটি বার রয়েছে।

মুক্তার হোসেনের কাছে বারের কয়টি লাইসেন্স জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বৃহস্প‌তিবার যখন ভবনটিতে অভিযান চালাই, তখন সেখানের ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ম্যানেজার আমাদের বলেছেন মুক্তার মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জেসহ ৫টি বার চালায়। সেগুলো একই লাইসেন্সের কিনা সেটা আমরা জানি না। তবে আমরা উত্তরার যে ভবনটিতে অভিযান পরিচালনা করেছি সেখানে কিংফিশার রেস্টুরেন্টের নামে এসব কার্যক্রম চলতো।

ম্যানেজারের বরাত দিয়ে গোয়েন্দা প্রধান আরও জানান, মুক্তার ২০০৮ সালের দিকে বারিধারায় বেবিলিয়ন নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করতেন। লেকভিউ নামে গুলশান-২ একটি রেস্টুরেন্টে ছিল সেখানেও সে কাজ করতো ওয়েটার হিসেবে। বারের ওয়েটার থেকে এখন শতকোটি টাকার মালিক মুক্তার। রাজধানীসহ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বাড়ি-গাড়ি। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তান বসবাস করে। তবে মুক্তারের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি গোয়েন্দা পুলিশ।

মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ৩৫ জনের মধ্যে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কয় জন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। এই কর্মকাণ্ডে সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কোরিয়ান নাগরিক জড়িত কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করছি।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

ছি‌লো বিভিন্ন পেশার মানুষের যাতায়াত, চলতো নেশার আড্ডা

আপডেট টাইম : ০৬:০১:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ এলাকার ৩৫ নম্বর বাড়িতে চল‌তো হিন্দি গান আর ডিজে পার্টি। বস‌তো নেশার আসরও। বাড়িতে প্রতিদিন অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলতো।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের অভিযোগের ভি‌ত্তি‌তে ওই বা‌ড়ি‌তে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালায় ডিএম‌পির গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। এ সময় ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাড়িটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দেশি, বিদেশি ব্রান্ডের ৫০০ বোতল মদ ও ছয় হাজার ক্যান বিয়ার।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বাড়িটির সপ্তম তলায় গিয়ে দেখেন তরুণ-তরুণীদের হুড়োহুড়ি। বাড়িটির বিভিন্ন ফ্লোরে বিদেশি মদ ও বিয়ার মজুদের প্রমাণ পায় গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। বিপুল পরিমাণ মদের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে কথিত এই বারের কর্মকর্তারা কোনো সঠিক তথ্য জানাতে ব্যার্থ হন।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি জানান, কথিত `কিং ফিশার’ বারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিসহ বার মালিকের মুক্তার হোসেনসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

ভবনটিতে এই কার্যক্রম কি ব্যানারে চলতো প্রশ্ন করা হলে ডিবি প্রধান বলেন, কিংফিশার রেস্টুরেন্টে নামে এই ভবনের এসব কার্যক্রম চলতো। কথিত এই বারের মালিক মুক্তার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। মুক্তারের নারায়নগঞ্জ, উত্তরা, মিরপুরসহ বেশ কয়েকটি বার রয়েছে।

মুক্তার হোসেনের কাছে বারের কয়টি লাইসেন্স জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বৃহস্প‌তিবার যখন ভবনটিতে অভিযান চালাই, তখন সেখানের ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ম্যানেজার আমাদের বলেছেন মুক্তার মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জেসহ ৫টি বার চালায়। সেগুলো একই লাইসেন্সের কিনা সেটা আমরা জানি না। তবে আমরা উত্তরার যে ভবনটিতে অভিযান পরিচালনা করেছি সেখানে কিংফিশার রেস্টুরেন্টের নামে এসব কার্যক্রম চলতো।

ম্যানেজারের বরাত দিয়ে গোয়েন্দা প্রধান আরও জানান, মুক্তার ২০০৮ সালের দিকে বারিধারায় বেবিলিয়ন নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করতেন। লেকভিউ নামে গুলশান-২ একটি রেস্টুরেন্টে ছিল সেখানেও সে কাজ করতো ওয়েটার হিসেবে। বারের ওয়েটার থেকে এখন শতকোটি টাকার মালিক মুক্তার। রাজধানীসহ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বাড়ি-গাড়ি। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তান বসবাস করে। তবে মুক্তারের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি গোয়েন্দা পুলিশ।

মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ৩৫ জনের মধ্যে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কয় জন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। এই কর্মকাণ্ডে সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কোরিয়ান নাগরিক জড়িত কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করছি।

নিউজ লাইট ৭১