ঢাকা ০৫:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বছরে পাচার হয় ৭৫ হাজার কোটি’: সিআইডি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৭:৩৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / 23

মুঠোফোনের আর্থিক সেবা ব্যবস্থা (এমএফএস) ব্যবহার করে গত চার মাসে হুন্ডির মাধ্যমে ২০ কোটি সত্তর লাখ টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই সেবাকে কাজে লাগিয়ে হুন্ডি ব্যবসা করে এমন পাঁচ হাজার বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় এর এজেন্টদের চিহ্নিত করা গেছে। যারা গেল চার মাসে ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং গত এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এই পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং চ্যানেল বহির্ভূত অবৈধভাবে মোবাইল ব্যাংকিং হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায়, দেশের প্রবাসী আয়ের তুলনামূলক কিছুটা হলেও ভাটা পড়ে। হুন্ডি বন্ধে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না। উল্টো দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।

এমন অবস্থায় দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণ তদন্ত করতে গিয়ে এই পাচারকারী চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি। চক্রের গ্রেপ্তার ১৬ জনের মধ্যে ছয়জন বিকাশ এজেন্ট, তিনজন বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসার, তিনজন বিকাশের ডিএসএস, দু’জন হুন্ডি এজেন্ট, একজন হুন্ডি এজেন্টের সহযোগী এবং একজন হুন্ডি পরিচালনাকারী।

গ্রেফতারকৃতেরা হলেন, দিদারুল আলম সুমন, খোরশেদ আলম ইমন, রুমন কান্তি দাস জয়, রাশেদ মাঞ্জুর ফিরোজ, আক্তার হোসেন, হোসাইনুল কবির, নবীন উল্লাহ, মো. জুনাইদুল হক, আদিবুর রহমান, আসিফ নেওয়াজ, ফরহাদ হোসাইন, আবদুল বাছির, আবদুল আউয়াল সোহাগ, ফজলে রাব্বি ও মাহাবুবুর রহমান সেলিম।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার এবং দেশের বাইরে অবস্থানরতদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে মানি লন্ডারিং অপরাধ করার তথ্য পাওয়া যায়। হুন্ডি চক্রটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তা দেশে না পাঠিয়ে এর সমপরিমাণ অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করে।

মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত চক্র তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ থাকে। প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে এবং দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চায় তাদের দেয়। দ্বিতীয় গ্রুপটি পাচারকারী ও তার সহযোগীরা দেশীয় মুদ্রায় উক্ত অর্থ এমএফএস এজেন্টকে দেয়।

আর তৃতীয় গ্রুপ তথা এমএফএস এজেন্টরা বিদেশে অবস্থানকারীর কাছ থেকে প্রাপ্ত এমএফএস নম্বরে দেশীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করে। এসব চক্র প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে এমএফএস ব্যবহার করে ক্যাশ ইনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হুন্ডি করছে।

আটকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সিআইডি প্রধান।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

বছরে পাচার হয় ৭৫ হাজার কোটি’: সিআইডি

আপডেট টাইম : ০৭:৩৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

মুঠোফোনের আর্থিক সেবা ব্যবস্থা (এমএফএস) ব্যবহার করে গত চার মাসে হুন্ডির মাধ্যমে ২০ কোটি সত্তর লাখ টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই সেবাকে কাজে লাগিয়ে হুন্ডি ব্যবসা করে এমন পাঁচ হাজার বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় এর এজেন্টদের চিহ্নিত করা গেছে। যারা গেল চার মাসে ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং গত এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এই পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং চ্যানেল বহির্ভূত অবৈধভাবে মোবাইল ব্যাংকিং হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায়, দেশের প্রবাসী আয়ের তুলনামূলক কিছুটা হলেও ভাটা পড়ে। হুন্ডি বন্ধে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না। উল্টো দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।

এমন অবস্থায় দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণ তদন্ত করতে গিয়ে এই পাচারকারী চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি। চক্রের গ্রেপ্তার ১৬ জনের মধ্যে ছয়জন বিকাশ এজেন্ট, তিনজন বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসার, তিনজন বিকাশের ডিএসএস, দু’জন হুন্ডি এজেন্ট, একজন হুন্ডি এজেন্টের সহযোগী এবং একজন হুন্ডি পরিচালনাকারী।

গ্রেফতারকৃতেরা হলেন, দিদারুল আলম সুমন, খোরশেদ আলম ইমন, রুমন কান্তি দাস জয়, রাশেদ মাঞ্জুর ফিরোজ, আক্তার হোসেন, হোসাইনুল কবির, নবীন উল্লাহ, মো. জুনাইদুল হক, আদিবুর রহমান, আসিফ নেওয়াজ, ফরহাদ হোসাইন, আবদুল বাছির, আবদুল আউয়াল সোহাগ, ফজলে রাব্বি ও মাহাবুবুর রহমান সেলিম।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার এবং দেশের বাইরে অবস্থানরতদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে মানি লন্ডারিং অপরাধ করার তথ্য পাওয়া যায়। হুন্ডি চক্রটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তা দেশে না পাঠিয়ে এর সমপরিমাণ অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করে।

মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত চক্র তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ থাকে। প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে এবং দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চায় তাদের দেয়। দ্বিতীয় গ্রুপটি পাচারকারী ও তার সহযোগীরা দেশীয় মুদ্রায় উক্ত অর্থ এমএফএস এজেন্টকে দেয়।

আর তৃতীয় গ্রুপ তথা এমএফএস এজেন্টরা বিদেশে অবস্থানকারীর কাছ থেকে প্রাপ্ত এমএফএস নম্বরে দেশীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করে। এসব চক্র প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে এমএফএস ব্যবহার করে ক্যাশ ইনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হুন্ডি করছে।

আটকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সিআইডি প্রধান।

নিউজ লাইট ৭১