৪৯ জন অভিবাসী শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন
- আপডেট টাইম : ০৬:৩৯:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২০
- / 91
মালয়েশিয়ায় চলমান করোনা মহামারীতে কর্মহীন হয়ে আর্থিক সংকটে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে প্রায় ৪৯ জন অভিবাসী শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে নয়জন বাংলাদেশি শ্রমিক। এ ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেছেন দেশটির মানবাধিকার সংস্থার এক কর্মী। তার মতে, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার একাধিক সংবাদমাধ্যম হারিয়ান মেট্রো, মালয়েশিয়া কিনি এবং বুকিত আমান (সিআইডি) ও বালাই পুলিশের আলাদা প্রতিবেদনে থেকে ওই তথ্য জানিয়েছে।
মৃত অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়াও মিয়ানমারের ১৪ জন, নেপালের নয়জন, ভারতের পাঁচজন, ইন্দোনেশিয়ার ছয়জন, পাকিস্তানের দুই জন, ভিয়েতনামের একজন এবং ব্রিটিশ নাগরিক একজন ও অস্ট্রেলিয়ার একজন নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের এখনো পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। জুস নামে এক অনলাইনে প্রতিবেদনে লিখেছে, দেশটিতে ১৮ মার্চ থেকে শুরু করে একটানা দীর্ঘ লকডাউনে অনেক মানুষ তাদের কাজ হারিয়েছে। এমতাবস্থায় চরম আর্থিক ও খাদ্য সঙ্কটে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে অভিবাসী শ্রমিকদের কর্মজীবন। লকডাউন চলাকালীন মালয়েশিয়ান নাগরিকেরা প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট হারে সরকারের আর্থিক অনুদান পেয়েছে। যার ফলে মালয়েশিয়ানদের দৈনন্দিন জীবন স্বাভাবিকভাবে কাটলেও অনাহারে দিন কাটানো অভিবাসীদের কপালে জোটেনি এক মুঠো সরকারি সাহায্য। বেসরকারিভাবে অনেকে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করার চেষ্টা করলেও তা সব অভিবাসী পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
মালয়েশিয়ার তেনেগানিটারের (মানবাধিকার সংস্থা) নির্বাহী পরিচালক গ্লোরিন দাস এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, অভিবাসীকর্মীদের আত্মহত্যার সংখ্যা আরো বেশি। সব ঘটনা মিডিয়াতে আসেনি। সরকার তার নাগরিকদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করলেও বিদেশিরা কোনো সহযোগিতা পায়নি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য সমস্যা। বিদেশীদের সরকারের সঠিক পন্থায় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুনর্বাসন করা উচিত। তাদের সমমর্যাদা দিয়ে করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে এবং এখন তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
আরেক মানবাধিকার সংস্থা এনএসআই-এর নির্বাহী পরিচালক অ্যাড্রিয়ান পেরেরা বলেন, মালয়েশিয়া তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য বারবার ভুলে যায় অভিবাসী শ্রমিকরা দেশের উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এমনকি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, তাদের দ্বারা মালয়েশিয়ায় অপরাধও কম হয়। অথচ এখানে বিদেশিদের অপরাধীর মতো দেখা হয় ও তাদের করোনাভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকি হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে।
নিউজ লাইট ৭১