রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ৪২ সদস্যকে গ্রেপ্তার
- আপডেট টাইম : ০৮:৪৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০
- / 100
নিউজ লাইট ৭১: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী সন্দেহে ৪২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ছিনতাই ও ছিনতাইকালে হত্যার মতো ঘটনায় তারা জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল বাতেন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, শুক্রবার দিনভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭৪টি মোবাইল ফোন, একটি ট্যাব, একটি ল্যাপটপ জব্দ ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ১৩টি ছুরি ও ২টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ছিনতাইকারী ও সালাম পার্টির সক্রিয় সদস্য। এরা সাতরাস্তা, নাবিস্কো, মহাখালী, বনানী, গুলশান-১, গুলশান লিংক রোড, রামপুরা ব্রিজ, ধানমন্ডি, বংশাল, চকবাজার, কলাবাগান, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় সরু সড়কে যাতায়াতকারী রিকশা বা হেঁটে যাতায়াত করা যাত্রীদের ছুরি দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই করত।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলা হয়, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট না থাকায় ও অধিকাংশ ল্যাম্পপোস্ট নষ্ট থাকায় গলিগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। এতে ওই সব এলাকায় ছিনতাইকারীরা ছিনতাই করে সহজেই পার পেয়ে যায়। যেসব এলাকায় এমন অবস্থা, সেখানে পুলিশের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নজর দেওয়া দরকার। নগরবাসীকেও ওই সব এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ছিনতাইকারীরা সুযোগ পেলেই ছিনতাই করে। তাদের আইনের আওতায় এনে সাজার ব্যবস্থা না করা হলে অপরাধ কমানো সম্ভব হবে না।
বেশির ভাগ সময় গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এবং অন্ধকার গলিতে ছিনতাই হয়ে থাকে। ছিনতাইকারীরা তাদের সুবিধামতো কোনো স্থানে রিকশার যাত্রী অথবা পথচারীদের সালাম দেয় যেন তারা পরস্পর পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। সালাম পেয়ে রিকশার যাত্রী-পথচারী থামলে তারা কাছে এসে চাকু দিয়ে আঘাত করার ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে পেট্রল জোরদারসহ গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হবে। ধরা হবে ছিনতাইকারীদের।
ডিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, ছিনতাইকৃত মোবাইল যন্ত্রাংশের দোকান ও মোবাইল কেনা-বেচা করে এমন দোকানে বিক্রি করে। ধরা পড়া ঠেকাতে দোকানদার চোরাই মোবাইল কিনে বিক্রি না করে এর ক্ষুদ্র-যন্ত্রাংশ বিক্রি করে। এমনকি দোকানিরা মোবাইলের মাদারবোর্ড ও আইএমইআই নম্বর পাওয়া যাবে এমন পার্টস বিক্রি করে না। এসব মোবাইল ফোন মেরামত দোকানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। চোরাই মোবাইলের বিক্রি ও কেনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের আমরা চিহ্নিত করেছি। অচিরেই সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসী মামলা করতে নিরুৎসাহিত হয়, এর পেছনে পুলিশের দায় আছে কিনা এমন প্রশ্নে আবদুল বাতেন বলেন, এটা দায়িত্বশীলতা। কোথাও কোনও অপরাধ হলে তা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেওয়া। এছাড়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয় না অপরাধ সম্পর্কে জানা কিংবা অপরাধীকে শনাক্ত করা।
এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, নগরবাসীকে বলতে চাই, আপনারা থানায় যাবেন, অভিযোগ দেবেন। থানা যদি মামলা বা অভিযোগ নিতে অপারগতা প্রকাশ করে তবে আমাদের ঊর্ধ্বতনদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।
শুক্রবার ভোরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় রিকশা থেকে পড়ে তারানা বেগমের মৃত্যু বিষয়ে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। এই ব্যাপারে মামলা হবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।