ঢাকা ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শান্তি চাই, যুদ্ধ না : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৭:২২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২
  • / 30

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। সংঘাত না, আমরা উন্নতি চাই বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (২৯ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির ও শান্তির দূত। এ জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ তাকে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছিল।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করেছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তার দাবি, ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেছেন, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এই নীতি বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন। যে নীতি আমরা এখনো মেনে চলি। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করার দিকে মনোনিবেশ করেছি।

বাংলাদেশ সব সময় চায়; শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক দাবি করে সরকারপ্রধান বলেন, যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। সংঘাত না, আমরা উন্নতি চাই। জাতির পিতার শান্তি সেনানীরূপে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘ব্লু হেলমেট’ পরিবারের সদস্য হয়। আজ আমরা সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের ৩৪ বছর উদযাপন করছি।

জাতিসংঘে শান্তিরক্ষীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে গত ৩৪ বছর যাবত বাংলাদেশের প্রতিটি শান্তিরক্ষী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। আজ সমগ্র বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বজনবিদিত।

এ সময় বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী সকল শান্তিরক্ষীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ মিশনে কার্যকর অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের অবস্থানকে সুসংহত করেছে। একই সঙ্গে সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের দেশের পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রীয় এবং অরাষ্ট্রীয় অপশক্তিগুলো নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

তার দাবি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে এ নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমরা আমাদের শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করে তুলছি।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, পিপল পিস প্রোগ্রেস : দ্য পাওয়ার অফ পার্টনারশিপ-২০২২ সালের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আমরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরও জোরালো ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার করছি। আমি বিশ্বাস করি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর তরুণ সদস্যরা ২১ শতকের বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম।

আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সদা প্রস্তুত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ১২১টি দেশের ৭৫ হাজার ৫১৬ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের ছয় হাজার ৮২৫ জন শান্তিরক্ষী রয়েছেন; যা বিশ্বে নিয়োজিত সর্বমোট শান্তিরক্ষীর নয় দশমিক দুই শতাংশ।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের ৫১৯ জন নারী শান্তিরক্ষী বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউজ লাইট ৭১

 

facebook sharing button
twitter sharing button
pinterest sharing button
email sharing button
sharethis sharing button
Tag :

শেয়ার করুন

শান্তি চাই, যুদ্ধ না : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৭:২২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২

যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। সংঘাত না, আমরা উন্নতি চাই বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (২৯ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির ও শান্তির দূত। এ জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ তাকে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছিল।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করেছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তার দাবি, ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেছেন, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এই নীতি বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন। যে নীতি আমরা এখনো মেনে চলি। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করার দিকে মনোনিবেশ করেছি।

বাংলাদেশ সব সময় চায়; শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক দাবি করে সরকারপ্রধান বলেন, যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। সংঘাত না, আমরা উন্নতি চাই। জাতির পিতার শান্তি সেনানীরূপে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘ব্লু হেলমেট’ পরিবারের সদস্য হয়। আজ আমরা সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের ৩৪ বছর উদযাপন করছি।

জাতিসংঘে শান্তিরক্ষীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে গত ৩৪ বছর যাবত বাংলাদেশের প্রতিটি শান্তিরক্ষী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। আজ সমগ্র বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বজনবিদিত।

এ সময় বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী সকল শান্তিরক্ষীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ মিশনে কার্যকর অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের অবস্থানকে সুসংহত করেছে। একই সঙ্গে সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের দেশের পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রীয় এবং অরাষ্ট্রীয় অপশক্তিগুলো নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

তার দাবি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে এ নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমরা আমাদের শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করে তুলছি।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, পিপল পিস প্রোগ্রেস : দ্য পাওয়ার অফ পার্টনারশিপ-২০২২ সালের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আমরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরও জোরালো ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার করছি। আমি বিশ্বাস করি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর তরুণ সদস্যরা ২১ শতকের বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম।

আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সদা প্রস্তুত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ১২১টি দেশের ৭৫ হাজার ৫১৬ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের ছয় হাজার ৮২৫ জন শান্তিরক্ষী রয়েছেন; যা বিশ্বে নিয়োজিত সর্বমোট শান্তিরক্ষীর নয় দশমিক দুই শতাংশ।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের ৫১৯ জন নারী শান্তিরক্ষী বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউজ লাইট ৭১

 

facebook sharing button
twitter sharing button
pinterest sharing button
email sharing button
sharethis sharing button