পৌষের শীতে কাঁপছে দেশ
- আপডেট টাইম : ০১:২১:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫
- / 5
জানুয়ারির শুরুতেই পৌষের শীতে জবুথবু সারাদেশ। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে এসেছে। অন্যদিকে রাজধানী ঢাকায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ার দাপটে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। এমন পরিস্থিতি আরও দুই থেকে তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দিনভর রাজধানীর আকাশে দেখা মেলেনি সূর্যের। ঢাকার রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল ব্যস্ত নগরী। নিম্ন তাপমাত্রার সঙ্গে হিমেল বাতাস যোগ হওয়ায় অনুভূত হয় তীব্র শীত।
এদিন রাজধানীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘন কুয়াশার কারণে রাজধানীসহ সারা দেশেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতি থাকবে আরও দুই থেকে তিন দিন।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি কোথাও কোথাও ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কমে গেছে। বিশেষ করে রংপুর ও ঢাকা বিভাগে তাপমাত্রা অনেক কমেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ১৩ দশমিক ৮, যা বুধবার ছিল ১৫; রাজশাহীতে ছিল ১২, ২ ডিগ্রি কমে ১০ দশমিক ৫; রংপুরে বুধবারেও ১২ দশমিক ৫, বৃহস্পতিবারও তাই ছিল; ময়মনসিংহে বৃহস্পতিবার দুই ডিগ্রি কমে ১৩ দশমিক ৫, ছিল ১৫; সিলেটেও ছিল ১৬ দশমিক ২, বৃহস্পতিবারও ১৬ দশমিক ২, চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার ১৬ দশমিক ৫, ছিল ১৫ দশমিক ৭; খুলনায় বৃহস্পতিবার দুই ডিগ্রি কমে ১২ দশমিক ৩, যা বুধবার ছিল ১৪ দশমিক ৫; বরিশালে ছিল ১৪ দশমিক ৩, বৃহস্পতিবার প্রায় একই ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর বাইরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকা জেলাগুলো হচ্ছে— ঈশ্বরদীতে ১০, দিনাজপুরে ১০ দশমিক ২, বাঘাবাড়ি ও বদলগাছিতে ১০ দশমিক ৪ এবং যশোরে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
প্রসঙ্গত, তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়, ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি আর ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস
দেশে চলতি মাসে তিন থেকে পাঁচটি শৈত্যপ্রবাহের শঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকায় শীতের অনুভূতি বাড়বে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রায় পার্থক্য কম থাকায় চলতি মাসে শীতের অনুভূতি বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে দু-একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দুটি মাঝারি থেকে তীব্র এবং দেশের অন্যত্র তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে শীতের অনুভূতি বাড়বে।
এদিকে হাড় কাঁপানো শীতে সবচেয়ে কষ্টে পড়েছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তীব্র শীতে মিলছে না কাজ। দিনমজুর-নিম্ন আয়ের মানুষের দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। তাদের এই তিক্ত অবসর কাটছে আগুন জ্বালিয়ে। এই তাপই যেন শীতে তাদের একমাত্র ভরসা।
নিউজ লাইট ৭১