ঢাকা ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেসবুক তার নাম পরিবর্তন করে হয়েছে ‘মেটা’

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৭:০৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১
  • / 40

মার্ক জাকারবার্গ

ফেসবুক তার নাম পরিবর্তন করে হয়েছে ‘মেটা’। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এটির পরিসর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির (ভিআর) মতো ক্ষেত্রগুলোতে বাড়িয়েছে। ফলে এখন একটি জায়গায় সবকিছু আরো ভালভাবে ‘অন্তর্ভুক্ত’ করা যাবে। খবর বিবিসির।

তবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্মগুলোর কোন নাম পরিবর্তন হচ্ছে না। নাম বদলাবে শুধুমাত্র তাদের মালিকানাধীন মূল কোম্পানির।

সম্প্রতি ফেসবুকের একজন কর্মচারী চাকরি ছাড়ার পর ওই কোম্পানি সম্পর্কে বিভিন্ন গোপন তথ্য ফাঁস করে। এরপর একের পর নেতিবাচক খবর প্রকাশ হতে থাকে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নাম পরিবর্তন করলো ফেসবুক।

ফ্রান্সেস হাউগেন কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছিলেন, তারা গ্রাহকদের ‘নিরাপত্তার চেয়ে কোম্পানির মুনাফাকে’ প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ২০১৫ সালে গুগল তাদের মূল কোম্পানির নাম বদলে অ্যালফাবেট রাখে। তবে এই নামটি সামনে আসেনি।

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এ নতুন নাম ঘোষণা করেন। তিনি মূলত ‘মেটাভার্স’ নামে একটি অনলাইন দুনিয়া তৈরির পরিকল্পনা উন্মোচন করেছেন, যেখানে মানুষ ভার্চুয়াল পরিবেশে ভিআর হেডসেট ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি, গেইম খেলা এবং যোগাযোগ করতে পারবে।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা যা কিছু করছি এবং ভবিষ্যতে করবো, সেটা বিদ্যমান ব্র্যান্ডটি সম্ভবত উপস্থাপন করতে পারছে না, তাই পরিবর্তন দরকার।’

এক ভার্চুয়াল কনফারেন্সে জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি আশা করি যে, সময়ের সাথে সাথে আমাদের মেটাভার্স কোম্পানি হিসাবে দেখা হবে। আর আমরা সামনে যা তৈরি করতে যাচ্ছি, সেটার ওপর ভিত্তি করেই আমাদের কাজ ও পরিচয় গড়ে উঠবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আমাদের ব্যবসাকে দুটি ভিন্ন অংশ হিসাবে দেখছি, একটি অংশ আমাদের অ্যাপস পরিবারের জন্য এবং আরেকটি অংশ ভবিষ্যতের প্ল্যাটফর্মে কাজের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আর এর অংশ হিসাবে আমাদের সময় এসেছে একটি নতুন কোম্পানি ব্র্যান্ড গ্রহণ করা, যাতে আমরা যা কিছু করি, আমরা কে এবং আমরা কী তৈরি করতে চাই- এই বিষয়গুলোকে প্রতিফলিত করে।’

কোম্পানিটি বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে তাদের সদরদপ্তরে একটি নতুন সাইনবোর্ড উন্মোচন করে, তার থাম্বস-আপ ‘লাইক লোগোটিকে সরিয়ে একটি নীল অসীম আকৃতির লোগো বসিয়েছে।

জাকারবার্গ বলেন, সময়ের সাথে সাথে ব্যবহারকারীদের কোম্পানির অন্যান্য পরিষেবাগুলো ব্যবহারের জন্য আর ফেসবুক ব্যবহার করা লাগবে না। নতুন নামটি সেই বিষয়টি প্রতিফলিত করে। তিনি বলেন, ‘মেটা’ শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ থেকে, যার অর্থ ‘গণ্ডির বাইরে’।

একজন বহিরাগতের কাছে, মেটাভার্স দেখতে ভিআর-এর একটি সংস্করণের মতো হতে পারে, কিন্তু কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে এটি ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হতে পারে।

সেখানে মানুষ কম্পিউটারে কাজ করার পরিবর্তে, মেটাভার্স নামের ভার্চুয়াল জগতে হেডসেটের সাহায্যের প্রবেশ করতে পারবে। যেখানে সব ধরণের ডিজিটাল পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন করা যাবে।

আশা করা হচ্ছে যে, ভার্চুয়াল জগতটি কাজ, খেলা এবং কনসার্ট থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্যও ব্যবহার করা যাবে।

ফেসবুক বলছে, তারা পহেলা ডিসেম্বর থেকে নতুন স্টক টিকার এমভিআরএস-এর অধীনে তাদের শেয়ার লেনদেন শুরু করতে চায়।

ফাঁস হওয়া নথি: প্রতিষ্ঠানটির সুখ্যাতির ওপর বার বার আঘাত এসেছে। সবশেষ ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করেছে যে, মহামারি চলাকালীন নীতি-নির্ধারকদের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের ভুল তথ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফেসবুক আটকে রেখেছে।

সাবেক কর্মচারী হাউগেন গণমাধ্যমের সামনে যেসব অভ্যন্তরীণ নথি ফাঁস করেছেন, তার ওপর ভিত্তি করে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছিল।

অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ফেসবুক এক গবেষণায় দেখেছে যে ইনস্টাগ্রাম কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের ব্যবহারকারীদের ঘৃণামূলক বক্তব্য সরাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে।

জাকারবার্গ ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে বলেছেন, ফাঁস হওয়া নথিগুলোকে ‘একটি সমন্বিত প্রয়াসে এমনভাবে বেছে বেছে ব্যবহার করা হয়েছে, যেন প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে একটি মিথ্যা চিত্র দাঁড় করানো যায়।’

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

ফেসবুক তার নাম পরিবর্তন করে হয়েছে ‘মেটা’

আপডেট টাইম : ০৭:০৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১

ফেসবুক তার নাম পরিবর্তন করে হয়েছে ‘মেটা’। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এটির পরিসর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির (ভিআর) মতো ক্ষেত্রগুলোতে বাড়িয়েছে। ফলে এখন একটি জায়গায় সবকিছু আরো ভালভাবে ‘অন্তর্ভুক্ত’ করা যাবে। খবর বিবিসির।

তবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্মগুলোর কোন নাম পরিবর্তন হচ্ছে না। নাম বদলাবে শুধুমাত্র তাদের মালিকানাধীন মূল কোম্পানির।

সম্প্রতি ফেসবুকের একজন কর্মচারী চাকরি ছাড়ার পর ওই কোম্পানি সম্পর্কে বিভিন্ন গোপন তথ্য ফাঁস করে। এরপর একের পর নেতিবাচক খবর প্রকাশ হতে থাকে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নাম পরিবর্তন করলো ফেসবুক।

ফ্রান্সেস হাউগেন কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছিলেন, তারা গ্রাহকদের ‘নিরাপত্তার চেয়ে কোম্পানির মুনাফাকে’ প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ২০১৫ সালে গুগল তাদের মূল কোম্পানির নাম বদলে অ্যালফাবেট রাখে। তবে এই নামটি সামনে আসেনি।

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এ নতুন নাম ঘোষণা করেন। তিনি মূলত ‘মেটাভার্স’ নামে একটি অনলাইন দুনিয়া তৈরির পরিকল্পনা উন্মোচন করেছেন, যেখানে মানুষ ভার্চুয়াল পরিবেশে ভিআর হেডসেট ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি, গেইম খেলা এবং যোগাযোগ করতে পারবে।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা যা কিছু করছি এবং ভবিষ্যতে করবো, সেটা বিদ্যমান ব্র্যান্ডটি সম্ভবত উপস্থাপন করতে পারছে না, তাই পরিবর্তন দরকার।’

এক ভার্চুয়াল কনফারেন্সে জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি আশা করি যে, সময়ের সাথে সাথে আমাদের মেটাভার্স কোম্পানি হিসাবে দেখা হবে। আর আমরা সামনে যা তৈরি করতে যাচ্ছি, সেটার ওপর ভিত্তি করেই আমাদের কাজ ও পরিচয় গড়ে উঠবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আমাদের ব্যবসাকে দুটি ভিন্ন অংশ হিসাবে দেখছি, একটি অংশ আমাদের অ্যাপস পরিবারের জন্য এবং আরেকটি অংশ ভবিষ্যতের প্ল্যাটফর্মে কাজের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আর এর অংশ হিসাবে আমাদের সময় এসেছে একটি নতুন কোম্পানি ব্র্যান্ড গ্রহণ করা, যাতে আমরা যা কিছু করি, আমরা কে এবং আমরা কী তৈরি করতে চাই- এই বিষয়গুলোকে প্রতিফলিত করে।’

কোম্পানিটি বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে তাদের সদরদপ্তরে একটি নতুন সাইনবোর্ড উন্মোচন করে, তার থাম্বস-আপ ‘লাইক লোগোটিকে সরিয়ে একটি নীল অসীম আকৃতির লোগো বসিয়েছে।

জাকারবার্গ বলেন, সময়ের সাথে সাথে ব্যবহারকারীদের কোম্পানির অন্যান্য পরিষেবাগুলো ব্যবহারের জন্য আর ফেসবুক ব্যবহার করা লাগবে না। নতুন নামটি সেই বিষয়টি প্রতিফলিত করে। তিনি বলেন, ‘মেটা’ শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ থেকে, যার অর্থ ‘গণ্ডির বাইরে’।

একজন বহিরাগতের কাছে, মেটাভার্স দেখতে ভিআর-এর একটি সংস্করণের মতো হতে পারে, কিন্তু কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে এটি ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হতে পারে।

সেখানে মানুষ কম্পিউটারে কাজ করার পরিবর্তে, মেটাভার্স নামের ভার্চুয়াল জগতে হেডসেটের সাহায্যের প্রবেশ করতে পারবে। যেখানে সব ধরণের ডিজিটাল পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন করা যাবে।

আশা করা হচ্ছে যে, ভার্চুয়াল জগতটি কাজ, খেলা এবং কনসার্ট থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্যও ব্যবহার করা যাবে।

ফেসবুক বলছে, তারা পহেলা ডিসেম্বর থেকে নতুন স্টক টিকার এমভিআরএস-এর অধীনে তাদের শেয়ার লেনদেন শুরু করতে চায়।

ফাঁস হওয়া নথি: প্রতিষ্ঠানটির সুখ্যাতির ওপর বার বার আঘাত এসেছে। সবশেষ ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করেছে যে, মহামারি চলাকালীন নীতি-নির্ধারকদের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের ভুল তথ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফেসবুক আটকে রেখেছে।

সাবেক কর্মচারী হাউগেন গণমাধ্যমের সামনে যেসব অভ্যন্তরীণ নথি ফাঁস করেছেন, তার ওপর ভিত্তি করে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছিল।

অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ফেসবুক এক গবেষণায় দেখেছে যে ইনস্টাগ্রাম কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের ব্যবহারকারীদের ঘৃণামূলক বক্তব্য সরাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে।

জাকারবার্গ ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে বলেছেন, ফাঁস হওয়া নথিগুলোকে ‘একটি সমন্বিত প্রয়াসে এমনভাবে বেছে বেছে ব্যবহার করা হয়েছে, যেন প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে একটি মিথ্যা চিত্র দাঁড় করানো যায়।’

নিউজ লাইট ৭১