ঢাকা ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সজাগ দৃষ্টি রাখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪৮:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / 68

সম্প্রতি বিভিন্ন দাবিতে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দলটির এই রাজনৈতিক কর্মসূচি চলাকালে রাজপথে তারা যেন কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে রাজপথের অবস্থান ধরে রাখতে কোনো ধরণের কর্মসূচি নির্ধারণ না করলেও মাঠ দখলে রাখার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হচ্ছে। বর্তমান সময়ে করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ঠ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া এরই মধ্যে টিকাদান কর্মসূচিও শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে স্থবিরতা কাটিয়ে রাজনীতির মাঠও চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। ফলে সামজিক দূরত্ব মেনে দৃশ্যমান বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এক কথায় স্থবিরতা কাটিয়ে রাজপথে সক্রিয় হচ্ছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এদিকে দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে চলতি বছর বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থগিত হওয়া মুজিববর্ষের কর্মসূচিগুলো পালন করতে চায় দলটি। এছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে জমকালো অনুষ্ঠান উপহার দিতে চায় ক্ষমতাসীন এ দলটি। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে চলমান নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতির উপর। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগের মতই রাজপথে দেখা যাবে নেতাকর্মীদের।

সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে, ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি বরিশালে, ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনায়, ১ মার্চ রাজশাহীতে, ৩ মার্চ ঢাকা উত্তরে ও ৪ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সমাবেশ করবে বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।

এদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সভা-সমাবেশ, প্রতিনিধি সভা ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মূল দলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সহযোগী সংগঠনগুলোকেও ঘোষিত কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তবে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের এ কর্মসূচি বিএনপির পাল্টাপাল্টি নয় বলেও পরিষ্কার করেছেন তিনি। কর্মসূচি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাসী নয়। আমাদের এ কর্মসূচি পূর্বনির্ধারিত এবং প্রতি বছরের মতো এবারও তা পালন করা হবে।’

বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় হওয়ার মাধ্যমে রাজপথ দখলে রাখতে চায় দলটি। এরই মধ্যে সে রকম কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, করোনা শুরুর পর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ভাটা পড়ে। যদিও নেতাকর্মীরা জনগণের সেবায় নিয়োজিত ছিলো সব সময়। তবে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি আনতে আবারো রাজপথে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

এদিকে একই সময়ে বিএনপির কর্মসূচিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের নেতারা দাবি করছেন, যে যার মত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবে।

এ প্রসঙ্গে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, ‘দল হিসেবে বিএনপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি দিতে হবে, এরকম আমরা মনে করি না। আমাদের নেত্রী কয়েকদিন আগে পার্লামেন্টের বক্তৃতায় বলেছেন দেশে শক্তিশালী বিরোধী দলের দরকার। বিরোধী দল আমাদের সমালোচনা করবে, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করবে, এজন্য এটি থাকা প্রয়োজন।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, ‘বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তারা সেটা পালন করবে। বিএনপি যদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চায়, তারা সেটা করতে পারে। কিন্তু অশান্তিপূর্ণ কিছু করলে সেখানে আমাদের কিছু বলার রয়েছে, সরকারের রয়েছে, প্রশাসনের রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির মাঠ পর্যায়ে কোনো কাজ নেই, তাদের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। ওরা আছে ষড়যন্ত্রের মধ্যে। ষড়যন্ত্র করেই একবার ক্ষমতায় এসেছিলো জিয়াউর রহমান। তারা সেই পথে এগোতে চাচ্ছে, কিন্তু বাংলার মাটিতে সেটি সম্ভব না। এ ব্যাপারে আমরা খুবই সচেতন রয়েছি।’

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

সজাগ দৃষ্টি রাখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ

আপডেট টাইম : ০৬:৪৮:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

সম্প্রতি বিভিন্ন দাবিতে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দলটির এই রাজনৈতিক কর্মসূচি চলাকালে রাজপথে তারা যেন কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে রাজপথের অবস্থান ধরে রাখতে কোনো ধরণের কর্মসূচি নির্ধারণ না করলেও মাঠ দখলে রাখার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হচ্ছে। বর্তমান সময়ে করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ঠ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া এরই মধ্যে টিকাদান কর্মসূচিও শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে স্থবিরতা কাটিয়ে রাজনীতির মাঠও চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। ফলে সামজিক দূরত্ব মেনে দৃশ্যমান বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এক কথায় স্থবিরতা কাটিয়ে রাজপথে সক্রিয় হচ্ছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এদিকে দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে চলতি বছর বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থগিত হওয়া মুজিববর্ষের কর্মসূচিগুলো পালন করতে চায় দলটি। এছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে জমকালো অনুষ্ঠান উপহার দিতে চায় ক্ষমতাসীন এ দলটি। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে চলমান নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতির উপর। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগের মতই রাজপথে দেখা যাবে নেতাকর্মীদের।

সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে, ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি বরিশালে, ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনায়, ১ মার্চ রাজশাহীতে, ৩ মার্চ ঢাকা উত্তরে ও ৪ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সমাবেশ করবে বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।

এদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সভা-সমাবেশ, প্রতিনিধি সভা ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মূল দলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সহযোগী সংগঠনগুলোকেও ঘোষিত কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তবে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের এ কর্মসূচি বিএনপির পাল্টাপাল্টি নয় বলেও পরিষ্কার করেছেন তিনি। কর্মসূচি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাসী নয়। আমাদের এ কর্মসূচি পূর্বনির্ধারিত এবং প্রতি বছরের মতো এবারও তা পালন করা হবে।’

বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় হওয়ার মাধ্যমে রাজপথ দখলে রাখতে চায় দলটি। এরই মধ্যে সে রকম কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, করোনা শুরুর পর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ভাটা পড়ে। যদিও নেতাকর্মীরা জনগণের সেবায় নিয়োজিত ছিলো সব সময়। তবে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি আনতে আবারো রাজপথে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

এদিকে একই সময়ে বিএনপির কর্মসূচিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের নেতারা দাবি করছেন, যে যার মত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবে।

এ প্রসঙ্গে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, ‘দল হিসেবে বিএনপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি দিতে হবে, এরকম আমরা মনে করি না। আমাদের নেত্রী কয়েকদিন আগে পার্লামেন্টের বক্তৃতায় বলেছেন দেশে শক্তিশালী বিরোধী দলের দরকার। বিরোধী দল আমাদের সমালোচনা করবে, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করবে, এজন্য এটি থাকা প্রয়োজন।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, ‘বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তারা সেটা পালন করবে। বিএনপি যদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চায়, তারা সেটা করতে পারে। কিন্তু অশান্তিপূর্ণ কিছু করলে সেখানে আমাদের কিছু বলার রয়েছে, সরকারের রয়েছে, প্রশাসনের রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির মাঠ পর্যায়ে কোনো কাজ নেই, তাদের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। ওরা আছে ষড়যন্ত্রের মধ্যে। ষড়যন্ত্র করেই একবার ক্ষমতায় এসেছিলো জিয়াউর রহমান। তারা সেই পথে এগোতে চাচ্ছে, কিন্তু বাংলার মাটিতে সেটি সম্ভব না। এ ব্যাপারে আমরা খুবই সচেতন রয়েছি।’

নিউজ লাইট ৭১