ঢাকা ০৯:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরমে শীতের সবজি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫০:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 106

৭১: ভ্যাপসা গরমের মধ্যেই এখন রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মিলছে শীতের সবজি। এর মধ্যে রয়েছে বাঁধাকপি, ফুলকপি ও শিম। তবে দাম বেশ চড়া। শীতের মৌসুমে যে শিমের কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হয়, তা এখন ২০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের ফুলকপি, বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমান বাজার চিত্র হিসাবে নতুন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম তুলনামূলক কম। কারণ গত বছর সবজির দাম বর্তমানের তুলনায় কম ছিল। গত বছর ফুলকপি, বাঁধাকপি বাজারে যখন নতুন আসে তখন দাম এর চেয়ে বেশি ছিল। এদিকে আকাশচুম্বী এমন দামের পরও এক শ্রেণির ক্রেতা নতুন এ সবজি কিনতে বাজারে ছুটছেন।

তারা বলছেন, বাজারে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম চড়া। এর মধ্যে নতুন আসা সবজির দাম চড়া হবেÑএটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া নতুন সবজির প্রতি সবারই এক ধরনের আকর্ষণ থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট আকারের ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। আর শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা কেজি।

শীতের এসব আগাম সবজির এমন দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী আনসার আহমেদ বলেন, এবার শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম তুলনামূলক কম। গত বছর নতুন অবস্থায় শিমের কেজি ২৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর গত বছর নতুন অবস্থায় বাঁধাকপি, ফুলকপির পিস বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকার ওপরে, এখন ৪০ টাকায়ও বিক্রি করছি। তিনি বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের সবজির দাম বেশি। এখন ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি বিক্রি হচ্ছে না। সেখানে ৪০ টাকা দিয়ে এক পিস ফুলকপি, বাঁধাকপি পাওয়া ক্রেতাদের জন্য সুখবরই।

রামপুরা ও খিলগাঁও বাজারে শিমের কেজি ২০০ টাকা এবং বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৫০ টাকা পিস বিক্রি করেন ব্যবসায়ী সজল। তিনি বলেন, শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি কয়েকদিন ধরেই বাজারে আসছে। নতুন আসায় এখন এগুলোর দাম একটু বেশি। কিছুদিন গেলে এবং সরবরাহ বাড়লে এসব সবজির দাম আরও কমে যাবে। সেই সঙ্গে অন্যান্য সবজির দামও কমবে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহের মতো এখনো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকায়। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। পটল, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা পিস। ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারে ক্রেতা হারুন উর রশিদ বলেন, সবজির এখন যে দাম তাতে মাছ-মাংসের চেয়ে সবজির পেছনেই বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। দুই মাসের বেশি হয়ে গেছে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে এখন নতুন সবজি হিসেবে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম পাওয়া যাচ্ছে। ৮০ টাকা দিয়ে দুটি ফুলকপি কিনেছি, এতে আমাদের চরজনের পরিবারে বড়জোর দুইবেলা খাওয়া হবে।

আরেক ক্রেতা বলেন, দামের কারণে সবজি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছি। মাঝে মধ্যে অল্প পরিমাণ সবজি কিনি। এরপরও ১০০ টাকার সবজি দিয়ে একদিন চলে না।

খিলগাঁও বাজারে রাবেয়া খাতুন বলেন, নতুন সবজি হওয়ায় শখ করে ৫০ টাকা দিয়ে একটি ফুলকপি কিনেছি। কিন্তু সাইজ ছোট। আমাদের চারজনের পরিবারে একবেলাও হবে না। অন্য সবজিও কেনার উপায় নেই। ২০০ টাকা নিয়ে সবজি কিনতে এলে দেখা যায়, খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে।facebook sharing button whatsapp sharing button

Tag :

শেয়ার করুন

গরমে শীতের সবজি

আপডেট টাইম : ০৫:৫০:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

৭১: ভ্যাপসা গরমের মধ্যেই এখন রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মিলছে শীতের সবজি। এর মধ্যে রয়েছে বাঁধাকপি, ফুলকপি ও শিম। তবে দাম বেশ চড়া। শীতের মৌসুমে যে শিমের কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হয়, তা এখন ২০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের ফুলকপি, বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমান বাজার চিত্র হিসাবে নতুন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম তুলনামূলক কম। কারণ গত বছর সবজির দাম বর্তমানের তুলনায় কম ছিল। গত বছর ফুলকপি, বাঁধাকপি বাজারে যখন নতুন আসে তখন দাম এর চেয়ে বেশি ছিল। এদিকে আকাশচুম্বী এমন দামের পরও এক শ্রেণির ক্রেতা নতুন এ সবজি কিনতে বাজারে ছুটছেন।

তারা বলছেন, বাজারে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম চড়া। এর মধ্যে নতুন আসা সবজির দাম চড়া হবেÑএটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া নতুন সবজির প্রতি সবারই এক ধরনের আকর্ষণ থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট আকারের ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। আর শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা কেজি।

শীতের এসব আগাম সবজির এমন দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী আনসার আহমেদ বলেন, এবার শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম তুলনামূলক কম। গত বছর নতুন অবস্থায় শিমের কেজি ২৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর গত বছর নতুন অবস্থায় বাঁধাকপি, ফুলকপির পিস বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকার ওপরে, এখন ৪০ টাকায়ও বিক্রি করছি। তিনি বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের সবজির দাম বেশি। এখন ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি বিক্রি হচ্ছে না। সেখানে ৪০ টাকা দিয়ে এক পিস ফুলকপি, বাঁধাকপি পাওয়া ক্রেতাদের জন্য সুখবরই।

রামপুরা ও খিলগাঁও বাজারে শিমের কেজি ২০০ টাকা এবং বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৫০ টাকা পিস বিক্রি করেন ব্যবসায়ী সজল। তিনি বলেন, শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি কয়েকদিন ধরেই বাজারে আসছে। নতুন আসায় এখন এগুলোর দাম একটু বেশি। কিছুদিন গেলে এবং সরবরাহ বাড়লে এসব সবজির দাম আরও কমে যাবে। সেই সঙ্গে অন্যান্য সবজির দামও কমবে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহের মতো এখনো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকায়। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। পটল, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা পিস। ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারে ক্রেতা হারুন উর রশিদ বলেন, সবজির এখন যে দাম তাতে মাছ-মাংসের চেয়ে সবজির পেছনেই বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। দুই মাসের বেশি হয়ে গেছে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে এখন নতুন সবজি হিসেবে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম পাওয়া যাচ্ছে। ৮০ টাকা দিয়ে দুটি ফুলকপি কিনেছি, এতে আমাদের চরজনের পরিবারে বড়জোর দুইবেলা খাওয়া হবে।

আরেক ক্রেতা বলেন, দামের কারণে সবজি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছি। মাঝে মধ্যে অল্প পরিমাণ সবজি কিনি। এরপরও ১০০ টাকার সবজি দিয়ে একদিন চলে না।

খিলগাঁও বাজারে রাবেয়া খাতুন বলেন, নতুন সবজি হওয়ায় শখ করে ৫০ টাকা দিয়ে একটি ফুলকপি কিনেছি। কিন্তু সাইজ ছোট। আমাদের চারজনের পরিবারে একবেলাও হবে না। অন্য সবজিও কেনার উপায় নেই। ২০০ টাকা নিয়ে সবজি কিনতে এলে দেখা যায়, খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে।facebook sharing button whatsapp sharing button