ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনাভাইরাস শনাক্ত করবে মেডিকেল রোবট

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৮:৪০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 132

নিউজ লাইট ৭১: ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে অধ্যয়নরত পাঁচ শিক্ষার্থী তৈরি করেছেন মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিকেল নামে একটি মেডিকেল রোবট। রোবটটি শনাক্ত করতে সক্ষম হবে করোনাভাইরাস।
এই রোবট চলাফেরাসহ সালাম দিয়ে নিজের নাম, দেশের নাম, জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলতে পারে।
পাঁচ শিক্ষার্থীর দাবি, মানুষের শরীরের তাপমাত্রা, হৃদয়ের কম্পন, অক্সিজেনের পরিমাণ ও রক্তচাপ পরিমাপসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নীরিক্ষাও করতে সক্ষম এটি। দেশে এটিই প্রথম মেডিকেল রোবট।
ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রোমেডিকেল বিভাগ সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এই রোবট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ও নিরাপদ নয়। কিন্তু এই রোবট আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে গিয়ে তার শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, ইজিসি, হার্টবিট ও অক্সিজেনের পরিমাণ পরিমাপ করতে পারবে। পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে ওষুধ ও খাবার সরবরাহের কাজও করতে পারবে এই রোবট।
ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, মি. ইলেক্ট্রোমেডিকেল রোবট মানুষের শরীরের রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ, ইসিজি, হৃদয়ের কম্পন, (হার্টবিট), কোলেস্টরল, ইউরিক এসিড ও ব্লাড সুগার পরিমাপসহ রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে সক্ষম। এজন্য রোবটটিতে বি পি মনিটর, ইসিজি সেন্সর, পাল্স অক্সিমেটরি সেন্সর, জি সি ইউ সেন্সর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও থার্মাল স্ক্যানার যুক্ত করা হয়েছে। আর চলাফেলা করার জন্য এরমধ্যে ক্যামেরা ও আল্ট্রাসনিক সেন্সর লাগানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এসব ফিচার ব্যবহারও করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি এই রোবট বানানোর কাজ শুরু করেন এই পাঁচ শিক্ষার্থী। টানা ১৫দিন কাজ করে তারা এই রোবট বানান। গত ২৩ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের কাছে রোবটটি হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা।
ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের ল্যাবে এই রোবট বানানো হয়। এতে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। যার সিংহভাগ শিক্ষার্থীরাই যোগাড় করেছেন। তবে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অল্প কিছু আর্থিক সহযোগিতাও পেয়েছেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, পালস্ অক্সিমেটরি সেন্সরে আঙ্গুল রাখলেই হৃদয়ের কম্পন হার্টবিট ও অক্সিজেনের পরিমাণ দেখা যাবে। রোবটের হাতে থাকা রক্তচাপ পরিমাপ যন্ত্র দিয়ে সহজেই উচ্চ রক্তচাপ ও নিম্ন রক্তচাপ জানা যাবে। এছাড়া জি.সি.ইউ সেন্সরের মাধ্যমে কোলেস্টরল, ইউরিক এসিড, ব্লাড সুগার ও ব্লাড গ্রুপ জানা যাবে। তারা আরো জানান, মাদকাসক্ত শনাক্ত করতে এবং আগুন লাগার খবর দিতে রোবটটিতে অ্যালকোহল ডিটেক্টর ও ফায়ার অ্যালার্ম যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি যে কোনো জায়গা থেকে মুঠোফোনে রোবটটি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপস্ তৈরির কাজও করছেন ওই পাঁচ শিক্ষার্থী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ছাত্র-শিক্ষকরা তাদের স্বল্প সামর্থ্যের মধ্যে এই রোবট তৈরি করেছে। কেউ অর্থায়ন করলে রোবটটিকে আরো কার্যকর করা সম্ভব।’

Tag :

শেয়ার করুন

করোনাভাইরাস শনাক্ত করবে মেডিকেল রোবট

আপডেট টাইম : ০৮:৪০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে অধ্যয়নরত পাঁচ শিক্ষার্থী তৈরি করেছেন মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিকেল নামে একটি মেডিকেল রোবট। রোবটটি শনাক্ত করতে সক্ষম হবে করোনাভাইরাস।
এই রোবট চলাফেরাসহ সালাম দিয়ে নিজের নাম, দেশের নাম, জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলতে পারে।
পাঁচ শিক্ষার্থীর দাবি, মানুষের শরীরের তাপমাত্রা, হৃদয়ের কম্পন, অক্সিজেনের পরিমাণ ও রক্তচাপ পরিমাপসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নীরিক্ষাও করতে সক্ষম এটি। দেশে এটিই প্রথম মেডিকেল রোবট।
ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রোমেডিকেল বিভাগ সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এই রোবট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ও নিরাপদ নয়। কিন্তু এই রোবট আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে গিয়ে তার শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, ইজিসি, হার্টবিট ও অক্সিজেনের পরিমাণ পরিমাপ করতে পারবে। পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে ওষুধ ও খাবার সরবরাহের কাজও করতে পারবে এই রোবট।
ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, মি. ইলেক্ট্রোমেডিকেল রোবট মানুষের শরীরের রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ, ইসিজি, হৃদয়ের কম্পন, (হার্টবিট), কোলেস্টরল, ইউরিক এসিড ও ব্লাড সুগার পরিমাপসহ রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে সক্ষম। এজন্য রোবটটিতে বি পি মনিটর, ইসিজি সেন্সর, পাল্স অক্সিমেটরি সেন্সর, জি সি ইউ সেন্সর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও থার্মাল স্ক্যানার যুক্ত করা হয়েছে। আর চলাফেলা করার জন্য এরমধ্যে ক্যামেরা ও আল্ট্রাসনিক সেন্সর লাগানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এসব ফিচার ব্যবহারও করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি এই রোবট বানানোর কাজ শুরু করেন এই পাঁচ শিক্ষার্থী। টানা ১৫দিন কাজ করে তারা এই রোবট বানান। গত ২৩ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের কাছে রোবটটি হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা।
ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের ল্যাবে এই রোবট বানানো হয়। এতে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। যার সিংহভাগ শিক্ষার্থীরাই যোগাড় করেছেন। তবে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অল্প কিছু আর্থিক সহযোগিতাও পেয়েছেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, পালস্ অক্সিমেটরি সেন্সরে আঙ্গুল রাখলেই হৃদয়ের কম্পন হার্টবিট ও অক্সিজেনের পরিমাণ দেখা যাবে। রোবটের হাতে থাকা রক্তচাপ পরিমাপ যন্ত্র দিয়ে সহজেই উচ্চ রক্তচাপ ও নিম্ন রক্তচাপ জানা যাবে। এছাড়া জি.সি.ইউ সেন্সরের মাধ্যমে কোলেস্টরল, ইউরিক এসিড, ব্লাড সুগার ও ব্লাড গ্রুপ জানা যাবে। তারা আরো জানান, মাদকাসক্ত শনাক্ত করতে এবং আগুন লাগার খবর দিতে রোবটটিতে অ্যালকোহল ডিটেক্টর ও ফায়ার অ্যালার্ম যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি যে কোনো জায়গা থেকে মুঠোফোনে রোবটটি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপস্ তৈরির কাজও করছেন ওই পাঁচ শিক্ষার্থী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ছাত্র-শিক্ষকরা তাদের স্বল্প সামর্থ্যের মধ্যে এই রোবট তৈরি করেছে। কেউ অর্থায়ন করলে রোবটটিকে আরো কার্যকর করা সম্ভব।’