ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:২৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 23

অধ্যক্ষের কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। ভিডিও থেকে ছবি সংগৃহীত

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুন্দী নবকাম পল্লী কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। পরে জোর করে তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয় শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে, জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়া একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান কলেজের যোগদানের পর থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম করে আসছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থন না করে কলেজের ছাত্রদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছিল। স্বৈরাচারের পতনের পর থেকে আমরা এই দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। মানববন্ধনও করেছি। অবশেষে বৃহস্পতিবার তিনি নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। এতে আমরা খুশি।

তবে নবকাম পল্লী কলেজের অধ্যক্ষ ভুক্তভোগী মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমি আর আমার ছেলে কলেজে প্রবেশ করার সময় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা কাইয়ুম মোল্যা ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কামরুল গাজীর সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য অছাত্র লালন, মনির এবং কয়েকজন ছাত্র জোর করে আমাদের গাড়ি নামিয়ে একটি বাগানের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারা আমাদের বাপ-বেটাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে কিছু অছাত্র আর কিছু ছাত্রদের দিয়ে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনরতরা বেশিরভাগ অছাত্র। মূলত কামরুল গাজী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কয়েকমাস আগে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার একটি ভুয়া বিল জমা দেন আমার কাছে। আমি ওই বিলে স্বাক্ষর না করায় ক্ষিপ্ত হন তিনি। এরপর থেকে কামরুল গাজী ও কাইয়ুম মোল্যা আমার পিছে লাগে। শেষ পর্যন্ত আমাকে পিটিয়ে জোর করে পদত্যাগপেত্র সই নিল। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কামরুল গাজী বলেন, আমি ফরিদপুর অফিসে আছি। আমি তো এসব বিষয় কিছুই জানি না। অধ্যক্ষ শুধু শুধু আমার নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। কাইয়ুম মোলার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে গত ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা একটি মানববন্ধন করে। খবর পেয়ে আমিসহ সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যাই। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয় তেমন সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে ঘটনাটি আমরা মিমাংসা করে দেই। এ সময় শিক্ষার্থীরা আর আন্দোলন করবে না মর্মে লিখিত দেয়।

কিন্তু হঠাৎ করে অধ্যক্ষকে মারধর ও তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমানের শিক্ষা উপদেষ্টাও এর বিরোধী। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাঠিয়েছি। থানায় একটি অভিযোগ দিতে বলেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই

আপডেট টাইম : ০৯:২৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুন্দী নবকাম পল্লী কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। পরে জোর করে তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয় শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে, জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়া একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান কলেজের যোগদানের পর থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম করে আসছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থন না করে কলেজের ছাত্রদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছিল। স্বৈরাচারের পতনের পর থেকে আমরা এই দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। মানববন্ধনও করেছি। অবশেষে বৃহস্পতিবার তিনি নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। এতে আমরা খুশি।

তবে নবকাম পল্লী কলেজের অধ্যক্ষ ভুক্তভোগী মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমি আর আমার ছেলে কলেজে প্রবেশ করার সময় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা কাইয়ুম মোল্যা ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কামরুল গাজীর সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য অছাত্র লালন, মনির এবং কয়েকজন ছাত্র জোর করে আমাদের গাড়ি নামিয়ে একটি বাগানের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারা আমাদের বাপ-বেটাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে কিছু অছাত্র আর কিছু ছাত্রদের দিয়ে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনরতরা বেশিরভাগ অছাত্র। মূলত কামরুল গাজী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কয়েকমাস আগে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার একটি ভুয়া বিল জমা দেন আমার কাছে। আমি ওই বিলে স্বাক্ষর না করায় ক্ষিপ্ত হন তিনি। এরপর থেকে কামরুল গাজী ও কাইয়ুম মোল্যা আমার পিছে লাগে। শেষ পর্যন্ত আমাকে পিটিয়ে জোর করে পদত্যাগপেত্র সই নিল। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কামরুল গাজী বলেন, আমি ফরিদপুর অফিসে আছি। আমি তো এসব বিষয় কিছুই জানি না। অধ্যক্ষ শুধু শুধু আমার নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। কাইয়ুম মোলার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে গত ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা একটি মানববন্ধন করে। খবর পেয়ে আমিসহ সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যাই। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয় তেমন সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে ঘটনাটি আমরা মিমাংসা করে দেই। এ সময় শিক্ষার্থীরা আর আন্দোলন করবে না মর্মে লিখিত দেয়।

কিন্তু হঠাৎ করে অধ্যক্ষকে মারধর ও তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমানের শিক্ষা উপদেষ্টাও এর বিরোধী। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাঠিয়েছি। থানায় একটি অভিযোগ দিতে বলেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

নিউজ লাইট ৭১