ঢাকা ০৯:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌র বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:২৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০
  • / 146

নিউজ লাইট ৭১: চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌র বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক-অঞ্চল) আদালত।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) আদালত পীর জাকির শাহ্‌র নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, পারস্পরিক সুসম্পর্কের সুবাদে একসঙ্গে ব্যবসা করার লক্ষ্যে পীর জাকির শাহ্‌ ব্যবসায়ী মো. ফজর আলীকে ৮ কোটি টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৩ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ব্যবসার উদ্দেশে ৮ কোটি টাকা দেয়ার বিপরীতে ব্যবসায়ী মো. ফজর আলীর কাছ থেকে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা এবং ৬টি চেক গ্রহণ করেন জাকির শাহ্‌। কিন্তু ব্যবসায়ী মো. ফজর আলী ৮ কোটি টাকার স্ট্যাম্প ও চেক দিলেও তার বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে পীর জাকির শাহ্‌ তাকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রদান করে।

পরবর্তীকালে পীর জাকির শাহ্‌ জানিয়ে দেন আর কোনো টাকা দিতে পারবেন না তিনি। এরপর ব্যবসায়ী ফজর আলী ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে দেন জাকির শাহ্‌কে। ওই সময় স্ট্যাম্প ও ৩টি চেক পীর জাকির শাহ্‌ ফেরত দিলেও বাকি ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানিয়ে দেয় ফজর আলীকে। ওই সময় স্ট্যাম্পের পেছনে চেক নম্বর উল্লেখ করে হারানো ৩টি চেক বাবদ কোনো দাবি-দাওয়া নেই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেন জাকির শাহ।

কিন্তু কিছুদিন পর ব্যবসায়ী ফজর আলী জানতে পারেন ওই চেক হারিয়ে যায়নি এবং এগুলো নিয়ে পীর জাকির শাহ্‌ টাকা দাবি করার ষড়যন্ত্র করে আসছেন। ২০১৯ সালের ২৮শ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী ফজর আলী নিজ বাড়িতে দাওয়াত দেন পীর জাকির শাহ্‌ এবং সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুকে। এ সময় চেক ফেরতের বিষয়ে কথা বললে পীর জাকির শাহ্‌ ও সহযোগী বাবু ৫ কোটি টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ফজর আলী বাদী হয়ে কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌ ও তার সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক-অঞ্চল) আদালতে একটি প্রতারণার মামলা করেন।

মামলার বাদী ব্যবসায়ী ফজর আলী জানান, একজন পীর হিসেবে আমি তাকে যথেষ্ট বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করতাম। সরল বিশ্বাসে আমি কোনো টাকা না পেয়েই ৮ কোটি টাকার স্ট্যাম্প ও চেক ওনাকে দিয়েছি। পরে উনি ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়ে আর দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন। তখন এই টাকায় ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে টাকা ফেরত দিয়ে দেয়া হয়। তিনি আমাকে স্ট্যাম্প ও ৩ কোটি টাকার ৩টি চেক ফেরত দিয়ে বাকি ৫ কোটি টাকার ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানিয়ে দেয়।

এদিকে বন্দর এলাকায় অবস্থিত কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌র বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে গত দুইদিন ধরে শহর ও বন্দর এলাকাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

Tag :

শেয়ার করুন

কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌র বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আপডেট টাইম : ১০:২৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌র বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক-অঞ্চল) আদালত।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) আদালত পীর জাকির শাহ্‌র নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, পারস্পরিক সুসম্পর্কের সুবাদে একসঙ্গে ব্যবসা করার লক্ষ্যে পীর জাকির শাহ্‌ ব্যবসায়ী মো. ফজর আলীকে ৮ কোটি টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৩ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ব্যবসার উদ্দেশে ৮ কোটি টাকা দেয়ার বিপরীতে ব্যবসায়ী মো. ফজর আলীর কাছ থেকে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা এবং ৬টি চেক গ্রহণ করেন জাকির শাহ্‌। কিন্তু ব্যবসায়ী মো. ফজর আলী ৮ কোটি টাকার স্ট্যাম্প ও চেক দিলেও তার বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে পীর জাকির শাহ্‌ তাকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রদান করে।

পরবর্তীকালে পীর জাকির শাহ্‌ জানিয়ে দেন আর কোনো টাকা দিতে পারবেন না তিনি। এরপর ব্যবসায়ী ফজর আলী ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে দেন জাকির শাহ্‌কে। ওই সময় স্ট্যাম্প ও ৩টি চেক পীর জাকির শাহ্‌ ফেরত দিলেও বাকি ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানিয়ে দেয় ফজর আলীকে। ওই সময় স্ট্যাম্পের পেছনে চেক নম্বর উল্লেখ করে হারানো ৩টি চেক বাবদ কোনো দাবি-দাওয়া নেই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেন জাকির শাহ।

কিন্তু কিছুদিন পর ব্যবসায়ী ফজর আলী জানতে পারেন ওই চেক হারিয়ে যায়নি এবং এগুলো নিয়ে পীর জাকির শাহ্‌ টাকা দাবি করার ষড়যন্ত্র করে আসছেন। ২০১৯ সালের ২৮শ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী ফজর আলী নিজ বাড়িতে দাওয়াত দেন পীর জাকির শাহ্‌ এবং সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুকে। এ সময় চেক ফেরতের বিষয়ে কথা বললে পীর জাকির শাহ্‌ ও সহযোগী বাবু ৫ কোটি টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ফজর আলী বাদী হয়ে কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌ ও তার সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক-অঞ্চল) আদালতে একটি প্রতারণার মামলা করেন।

মামলার বাদী ব্যবসায়ী ফজর আলী জানান, একজন পীর হিসেবে আমি তাকে যথেষ্ট বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করতাম। সরল বিশ্বাসে আমি কোনো টাকা না পেয়েই ৮ কোটি টাকার স্ট্যাম্প ও চেক ওনাকে দিয়েছি। পরে উনি ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়ে আর দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন। তখন এই টাকায় ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে টাকা ফেরত দিয়ে দেয়া হয়। তিনি আমাকে স্ট্যাম্প ও ৩ কোটি টাকার ৩টি চেক ফেরত দিয়ে বাকি ৫ কোটি টাকার ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানিয়ে দেয়।

এদিকে বন্দর এলাকায় অবস্থিত কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্‌র বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে গত দুইদিন ধরে শহর ও বন্দর এলাকাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।