ঢাকা ১২:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলেরা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৬:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
  • / 36

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে সরকার জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা ২মাসের নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় পরিবার পরিজন নিয়ে জেলেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছে। মাছ ধরতে না পেরে তারা লোন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

জেলেরা তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে গিয়ে যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে।

অভয়াশ্রম হিসাবে খ্যাত তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টিমের অভিযান চলবে। এ ছাড়াও অভিযানে এই সব এলাকায় মাছ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে উপজেলার জেলেরা তাদের নৌকা নদীর তীরে নোঙর করে রেখেছে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলায় ১০হাজার ১৭১জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এই সব জেলের মধ্যে ৬হাজার ৬২৭জনকে ২মাস যাতে নদীতে মাছ না ধরেন সে জন্য তাদেরকে ইতোমধ্যে মাইকিং করে সচেতন করার পাশাপাশি মৎস্য আড়ৎগুলোকেও অবহিত করা হয়।

বাঁশবাড়িয়া এলাকার জেলে শাহ আলম ও মো. লাল মিয়া জানান, তারা বছরের সব সময়ই নদীতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শিকার করেন। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত নিষিদ্ধ সময় ২ মাস তারা মাছ আহরণ করবেন না। কিন্তু তাদেরকে ২মাসের জন্য যে চাল খাদ্য সহায়তা হিসাবে দেয়া হয় তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তাদেরকে বলা হয়েছে তাদের মাছ ধরার নৌকাগুলো যেন ২মাস উপরে উঠিয়ে রাখে। কারণ জাটকা ইলিশ এই সময়ে মিঠা পানিতে নিরাপদে বিচরণ করে বড় হয়।

এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুব আলম তালুকদার জানান, গত কয়েক বছর জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় ইলিশের উৎপাদন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের কয়েকটি অভয়াশ্রমের মধ্যে দশমিনা উপজেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে জাতীয় মৎস্য সম্পদ জাটকা ইলিশ রক্ষা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। আর এই ২মাস উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, উপজেলা মৎস্য বিভাগ ২৪ঘন্টা রুটিন অনুযায়ী নদীতে দায়িত্ব পালন করছে।

অভয়াশ্রম এলাকার সকল জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী নেতা ও জেলেদেরকে নিয়ে সভা করা হয়। জাটকা ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য জেলেপাড়ায় মাইকিংও করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সরকার জাটকা ইলিশ রক্ষায় সফল হলে আবার ইলিশ উৎপাদনের সুফল পেতে শুরু করবে। এবারের নিষেধাজ্ঞার সময় সবাইকে জাটকা ইলিশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, কোন নৌকা নদীতে নামতে দেয়া হবে না। জাটকা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন জিরো টলারেন্স দেখাবে এবং কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলেরা

আপডেট টাইম : ০৫:১৬:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে সরকার জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা ২মাসের নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় পরিবার পরিজন নিয়ে জেলেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছে। মাছ ধরতে না পেরে তারা লোন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

জেলেরা তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে গিয়ে যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে।

অভয়াশ্রম হিসাবে খ্যাত তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টিমের অভিযান চলবে। এ ছাড়াও অভিযানে এই সব এলাকায় মাছ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে উপজেলার জেলেরা তাদের নৌকা নদীর তীরে নোঙর করে রেখেছে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলায় ১০হাজার ১৭১জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এই সব জেলের মধ্যে ৬হাজার ৬২৭জনকে ২মাস যাতে নদীতে মাছ না ধরেন সে জন্য তাদেরকে ইতোমধ্যে মাইকিং করে সচেতন করার পাশাপাশি মৎস্য আড়ৎগুলোকেও অবহিত করা হয়।

বাঁশবাড়িয়া এলাকার জেলে শাহ আলম ও মো. লাল মিয়া জানান, তারা বছরের সব সময়ই নদীতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শিকার করেন। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত নিষিদ্ধ সময় ২ মাস তারা মাছ আহরণ করবেন না। কিন্তু তাদেরকে ২মাসের জন্য যে চাল খাদ্য সহায়তা হিসাবে দেয়া হয় তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তাদেরকে বলা হয়েছে তাদের মাছ ধরার নৌকাগুলো যেন ২মাস উপরে উঠিয়ে রাখে। কারণ জাটকা ইলিশ এই সময়ে মিঠা পানিতে নিরাপদে বিচরণ করে বড় হয়।

এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুব আলম তালুকদার জানান, গত কয়েক বছর জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় ইলিশের উৎপাদন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের কয়েকটি অভয়াশ্রমের মধ্যে দশমিনা উপজেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে জাতীয় মৎস্য সম্পদ জাটকা ইলিশ রক্ষা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। আর এই ২মাস উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, উপজেলা মৎস্য বিভাগ ২৪ঘন্টা রুটিন অনুযায়ী নদীতে দায়িত্ব পালন করছে।

অভয়াশ্রম এলাকার সকল জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী নেতা ও জেলেদেরকে নিয়ে সভা করা হয়। জাটকা ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য জেলেপাড়ায় মাইকিংও করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সরকার জাটকা ইলিশ রক্ষায় সফল হলে আবার ইলিশ উৎপাদনের সুফল পেতে শুরু করবে। এবারের নিষেধাজ্ঞার সময় সবাইকে জাটকা ইলিশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, কোন নৌকা নদীতে নামতে দেয়া হবে না। জাটকা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন জিরো টলারেন্স দেখাবে এবং কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

নিউজ লাইট ৭১