যাত্রীবেশে অটোরিকশা ছিনতাই
- আপডেট টাইম : ০১:৫৪:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩
- / 34
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের টার্গেট করতো একটি চক্র। এরপর নিরিবিলি গন্তব্যের উদ্দেশ্য যাওয়ার জন্য অটোরিকশা ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হতো।
পূর্বপরিকল্পিত স্থানে নিয়ে গলা কেটে অটোরিকশা চালককে হত্যা করে ছিনিয়ে নেয়া হতো। এরপর চালকের মরদেহ নিরিবিলি এলাকায় ফেলে পালিয়ে যেতো চক্রটি।
গত ডিসেম্বরে পরপর একই কায়দায় দক্ষিণখান এলাকার দুই অটোরিকশা চালককে হত্যার পরে গাড়ি ছিনতাই করে চক্রটি। ভুক্তভোগী পরিবারের দায়ের করা মামলার ছায়া তদন্তে নেমে ভয়ংকর এই চক্রের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগ।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, চক্রে ৬ জন সদস্য। তাদের মধ্যে ৩ জন চালকদের হত্যা করে রিকশা এনে দিতো। এরপর চক্রের অপর সদস্যরা অটোরিকশা বিক্রি করতো।
চালক হত্যায় জড়িতদের রাজধানী বিভিন্ন এলাকা ও মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে চক্রের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. খালেদ খান শুভ (২০), মো. টিপু (৩১), মো. হাসানুল ইসলাম ওরফে সান (২০), মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০), আব্দুল মজিদ (২৯) ও মো. সুমন (৩৫)।
এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ও পাথর উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিহত মোস্তফার (৩৫)’র ছিনতাই হওয়া মোবাইল ও অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ জানান, একটি ভয়ংকর অটোরিকশা ছিনতাই চক্র দীর্ঘদিন ধরে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে আসছিলো। গত ডিসেম্বর মাসে পরপর দুই চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ডিসেম্বর মাসের ৮ ও ২৫ তারিখ একই কায়দায় অটোরিকশা চালক মো. মোস্তফা (৩৫) ও জিহাদ (১৫) নামের দুই চালকের রিকশায় ভাড়া করেন মো. টিপু, হাসান ও শুভ। পরে মোস্তফাকে আশিয়ান সিটি ও জিহাদকে পূর্বাচল এলাকায় নিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যা শেষে একইভাবে দুজনের মরদেহ নির্জন এলাকায় ফেলে দেয়া হয়।
ডিবির সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা নিহত মোস্তফার বৃদ্ধা মা সামছুন্নাহার বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর রাত ১১টায় আমি আমার ছেলেকে ফোন দেয় তখন সে ফোন ধরে না। রাত দেড়টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলে আম্মা কেনো ফোন দিয়েছিলা তখন আমি বলি বাবা আমার কিছু টাকা লাগবে আমার ছেলে বলে আম্মা তুমি জানো না বৃহস্পতিবার আমার কিস্তি পরিশোধ করার তারিখ। ফোন রাখার আগে আমাকে বলে সকালে বাসায় আসবে।
আমার মানিক রতন আর আসেনি এইটাই ছিলো আমার ছেলের সঙ্গে আমার শেষ কথা। এরপর থেকে ১০দিন আমি আমার ছেলের খোঁজে পায়নি। নিখোঁজ হওয়ার ১১দিনে মাথায় ফোন আসে আমার মেয়ের জামাই কাছে আশিয়ান সিটি নামে একটি জায়গায় আমার ছেলের লাশ পাওয়া গেছে।
আমি এখন কার কাছে যাবো আহাজারি করে তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের বউসহ আমার তিন নাতি-নাতনী আছে, তারা ছোট ছোট তাদেরকে নিয়ে আমি এখন কোথায় যাবো। আমার ছেলেই আমার সংসার চালাতো। আমার কেউ রইলো না।
নিউজ লাইট ৭১