খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন করবেন।
- আপডেট টাইম : ১০:১১:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯
- / 109
নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: কয়েক দফা ই-পাসপোর্ট চালু করার ঘোষণা দেয়া হলেও তা সম্ভব হয়নি। তাই ই-পাসপোর্ট চালু না হওয়া পর্যন্ত জনগণের চাহিদা মেটাতে ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) কিনছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
৫৩ কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে এসব পাসপোর্ট সরবরাহ করবে ‘আইডি গ্লোবাল সলিউশন লিমিটেড (সাবেক ডি লা রু ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড)। এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অবশ্য এই ক্রয় প্রস্তাবটি গত ২৭ নভেম্বর ক্রয় কমিটি ৬৭ শতাংশ বেশি দাম প্রস্তাব করায় ফেরত দেয়। কিন্তু গতকাল আগের দাম ও একই প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করার দায়িত্ব দেয়া হলো।
সভা শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা বলেন, এখন যে পরিমাণ পাসপোর্টের চাহিদা সেটা আমরা পূরণ করতে পারছি না। সারাবিশ্বে আমাদের যে অ্যাম্বাসি রয়েছে তাদের একটাই দাবি— তারা সময়মতো পাসপোর্ট পাচ্ছে না বা কম পাচ্ছে। আমরা যেভাবে হিসাব করেছিলাম, পাসপোর্ট যারা তৈরি করে তারা সেভাবে দিতে পারেনি। সে জন্যই আমাদের একটা গ্যাপ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দ্রুত চাহিদা মেটাতে পুরনো প্রতিষ্ঠান আইডি গ্লোবাল সলিউশন লিমিটেডের কাছ থেকে ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) কিনছি।
এতে খরচ হবে ৫৩ কোটি চার লাখ ৫৫ হাজার ২৫৭ টাকা। আমাদের পাসপোর্ট আরও প্রয়োজন। কিন্তু দ্রুত চাহিদা মেটাতে আমরা ২০ লাখ কিনছি। পাশাপাশি আমরা ই-পাসপোর্টে যাওয়ার চেষ্টায় রয়েছি।
ই-পাসপোর্ট চালু হতে কতদিন সময় লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন করবেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈঠকে জানিয়েছে ই-পাসপোর্ট চালু হতে আরও দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে। প্রথমদিকে দিনে ৫০০ ই-পাসপোর্ট দেয়া হবে পরে এটি বাড়িয়ে দুই হাজার করে দেবে বলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি জানিয়েছে।
একই দামে একই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০ লাখ এমআরপি পাসপোর্ট ক্রয়ের প্রস্তাব গত ২৭ নভেম্বর এ কমিটিতে উপস্থাপন করা হলে ৬৭ শতাংশ বেশি দাম প্রস্তাব করা হয় উল্লেখ করে প্রস্তাবটি ফেরত দেয়া হয়। একইসঙ্গে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দাম কমিয়ে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়।
অথচ ২৭ নভেম্বরের প্রস্তাবিত দামেই প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হলো— এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, দাম বেশির বিষয়টি তারা ভুল বুঝিয়েছিলো।
তিনি বলেন, আমরা হিসাব করেছিলাম একনেকে মূল যে প্রকল্প অনুমোদন হয়েছিলো সেটি। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে এটার ভেরিয়েশন (মূল্য বেড়েছে) হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধিসহ এখন যেটা হয়েছে সেটা হিসাব করতে হবে। কিন্তু আমরা ২৭ নভেম্বরের মিটিংয়ে ভুল করে একনেকে অনুমোদিত মূল্য হিসাব করেছিলাম।
জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কাজ পেলো টোয়া কর্পোরেশন : এদিকে, গতকালের সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় টোয়া কর্পোরেশনকে কাজ দেয়া হয়েছে। জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক হাজার একর জমিতে গড়ে উঠছে অর্থনৈতিক অঞ্চল।
এ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভূমি উন্নয়ন কাজসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত কাজ বাস্তবায়ন করবে জাপানের সবচেয়ে পুরনো নির্মাণ কোম্পানি টোয়া কর্পোরেশন। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে এক হাজার ৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এগুলো হয়ে গেলে যত্রতত্র শিল্পকারখনা গড়ে উঠবে না। পরিকল্পনাবিহীনভাবে রাস্তাঘাট ও হাটবাজার তৈরি হচ্ছে, এগুলো বন্ধ হবে। কোন জায়গায় কি করলে ঠিক হবে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা শহরে আর কোনোভাবে চাপ বাড়াতে চাই না। আমরা চাই শিল্পকারখানা গ্রামেগঞ্জে হবে, সেখানকার লোক সেখানেই চাকরি করবে। তাদের চাকরির জন্য শহরে আসতে হবে না।
তিনি বলেন, জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক হাজার ১০ একর জমিতে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। এর সব কাজ প্রায় শেষ। আমরা এখন ভূমি উন্নয়নে কাজ করবো।
ভূমি উন্নয়ন কাজসহ অন্য অবকাঠামোগত কাজ করবে জাপানের নির্মাণ কোম্পানি টোয়া কর্পোরেশন। এতে খরচ হবে এক হাজার ৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আড়াইহাজারে জাপানিদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বড় বিনিয়োগ আসবে বলে আশা প্রকাশ করনে অর্থমন্ত্রী।