ঢাকা ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারেনি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২
  • / 33

সজীব ওয়াজেদ জয় (ছবি: সংগৃহীত)

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই শুভেচ্ছা বার্তা পোস্ট করেন তিনি। এতে বলেন, ‘ইতিহাস বলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারেনি। আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকই ধর্মপ্রাণ মুসলমান, কিন্তু ধর্মান্ধ নন।’

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষরাই একসময় বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার জন্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। যার ফলে, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। বিপরীতে মাত্র ৯টি আসন পেয়ে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় ধর্ম ব্যবসায়ীরা। বাংলার মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে সরলপ্রাণ ও ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম প্রদর্শনকারী বা ধর্ম ব্যবসায়ী নয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বাঙালি শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করুন এবং একই সঙ্গে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করুন। যারা এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, তারা বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এবং সংস্কৃতিকে ধারণ করে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে আসুন আমরা সবাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি।’

পোস্টের শুরুতেই সবাইকে শুভ নববর্ষ জানিয়ে জয় বলেন, ‘সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। করোনামুক্ত দেশে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনুক এবারের বৈশাখ। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই সম্প্রীতির পথে হাঁটতে শুরু করুক সবাই। বাংলা ভাষা এবং হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক আমাদের নতুন প্রজন্মের হাত ধরে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘যে ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য প্রায় দুই যুগ সংগ্রাম করেছেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা, যে শোষণমুক্ত সাম্যভিত্তিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন ৩০ লাখ মানুষ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় আজ সেই দেশ ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। পূর্ব পুরুষদের অনিঃশেষ ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, এই দেশে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। আবহমান বাংলার প্রধানতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হলো অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সবাই মিলেমিশে থাকা। শান্তি ও সমৃদ্ধির আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শুরু হোক নতুন বছর।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে যে চারটি স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার অন্যতম হলো “ধর্মনিরপেক্ষতা”। সবাই সবার নিজের ধর্ম পালন করবে, অন্যদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, ধর্ম নিয়ে কেউ সহিংসতা করবে না—এটাই হলো ধর্মনিরপেক্ষতার মূল কথা। এর সঙ্গে নৃতাত্ত্বিকভাবে চলে আসা বাঙালি সংস্কৃতির কোনও বিভেদ নেই। সাংস্কৃতিকভাবে আমরা অনেক সমৃদ্ধ জাতি। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলন থেকেই বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সেই স্বাধীন দেশে নিজেদের সংস্কৃতি লালন করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।’

নিউজ লাইট ৭১

 

facebook sharing button
sharethis sharing button
Tag :

শেয়ার করুন

ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারেনি

আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই শুভেচ্ছা বার্তা পোস্ট করেন তিনি। এতে বলেন, ‘ইতিহাস বলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারেনি। আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকই ধর্মপ্রাণ মুসলমান, কিন্তু ধর্মান্ধ নন।’

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষরাই একসময় বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার জন্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। যার ফলে, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। বিপরীতে মাত্র ৯টি আসন পেয়ে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় ধর্ম ব্যবসায়ীরা। বাংলার মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে সরলপ্রাণ ও ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম প্রদর্শনকারী বা ধর্ম ব্যবসায়ী নয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বাঙালি শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করুন এবং একই সঙ্গে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করুন। যারা এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, তারা বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এবং সংস্কৃতিকে ধারণ করে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে আসুন আমরা সবাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি।’

পোস্টের শুরুতেই সবাইকে শুভ নববর্ষ জানিয়ে জয় বলেন, ‘সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। করোনামুক্ত দেশে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনুক এবারের বৈশাখ। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই সম্প্রীতির পথে হাঁটতে শুরু করুক সবাই। বাংলা ভাষা এবং হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক আমাদের নতুন প্রজন্মের হাত ধরে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘যে ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য প্রায় দুই যুগ সংগ্রাম করেছেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা, যে শোষণমুক্ত সাম্যভিত্তিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন ৩০ লাখ মানুষ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় আজ সেই দেশ ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। পূর্ব পুরুষদের অনিঃশেষ ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, এই দেশে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। আবহমান বাংলার প্রধানতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হলো অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সবাই মিলেমিশে থাকা। শান্তি ও সমৃদ্ধির আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শুরু হোক নতুন বছর।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে যে চারটি স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার অন্যতম হলো “ধর্মনিরপেক্ষতা”। সবাই সবার নিজের ধর্ম পালন করবে, অন্যদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, ধর্ম নিয়ে কেউ সহিংসতা করবে না—এটাই হলো ধর্মনিরপেক্ষতার মূল কথা। এর সঙ্গে নৃতাত্ত্বিকভাবে চলে আসা বাঙালি সংস্কৃতির কোনও বিভেদ নেই। সাংস্কৃতিকভাবে আমরা অনেক সমৃদ্ধ জাতি। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলন থেকেই বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সেই স্বাধীন দেশে নিজেদের সংস্কৃতি লালন করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।’

নিউজ লাইট ৭১

 

facebook sharing button
sharethis sharing button