ঢাকা ০১:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামিন পেলেন না রিজেন্টের সাহেদ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মে ২০২১
  • / 82

৭১ঃ অর্থপাচার মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে সাহেদের পক্ষে ছিলেন ফজলুর রহমান। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অর্থপাচার মামলায় সাহেদ জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানি নিয়ে আবেদনটি নট প্রেস রিজেক্ট (উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ) করে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট সাহেদ ও পারভেজের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। মামলায় সাহেদ ও রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানায়, সাহেদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে তিনি তুলে নেন ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ঋণের ৮০ লাখ টাকাসহ এ মুহূর্তে তার ব্যাংক হিসাবগুলোতে জমা আছে ২ কোটি ৪ লাখ টাকার মতো।

সিআইডির জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সিআইডির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই অর্থের উৎস প্রতারণা ও জালিয়াতি। ‘প্রতারণা’ ও ‘জালিয়াতি’ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতাভুক্ত অপরাধ।

প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের মাধ্যমে রূপান্তর এবং ভোগবিলাসে ব্যয় করার অভিযোগে সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন বিভাগ সাহেদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলাটি করে।

জালিয়াতি করে উপার্জিত টাকা লেনদেনের সুবিধার জন্যই মো. সাহেদ রিজেন্ট হাসপাতাল, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড ও অন্যান্য অস্তিত্ববিহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছিলেন। ব্যাংক হিসাবগুলো খোলার সময় তিনি নিজেকে কেওয়াইসি (গ্রাহকের তথ্য সংবলিত) ফরমে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। এই ব্যাংক হিসাবগুলো পরিচালনা করতেন রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসব হিসাবে টাকা জমা পড়েছে। অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ছিল। এখন তার হিসাবে আছে ৫ হাজার টাকা।

এ পর্যন্ত মোহাম্মদ সাহেদ ও সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। মোহাম্মদ সাহেদ ও তার সহযোগী মাসুদ পারভেজ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড, রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড এবং অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়া বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি আকার ধারণ করলে ভুয়া পরীক্ষা এবং জাল সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সাহেদ তার অপরাধকর্মের প্রধান সহযোগী মাসুদ পারভেজের সহযোগিতায় রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড নামে ঢাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাহ মখদুম অ্যাভিনিউ শাখায় নতুন হিসাব খোলেন। হিসাবটি পরিচালনা করতেন সাহেদের বাবা সিরাজুল করিম ও মাসুদ পারভেজ।

Tag :

শেয়ার করুন

জামিন পেলেন না রিজেন্টের সাহেদ

আপডেট টাইম : ০৯:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মে ২০২১

৭১ঃ অর্থপাচার মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে সাহেদের পক্ষে ছিলেন ফজলুর রহমান। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অর্থপাচার মামলায় সাহেদ জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানি নিয়ে আবেদনটি নট প্রেস রিজেক্ট (উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ) করে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট সাহেদ ও পারভেজের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। মামলায় সাহেদ ও রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানায়, সাহেদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে তিনি তুলে নেন ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ঋণের ৮০ লাখ টাকাসহ এ মুহূর্তে তার ব্যাংক হিসাবগুলোতে জমা আছে ২ কোটি ৪ লাখ টাকার মতো।

সিআইডির জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সিআইডির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই অর্থের উৎস প্রতারণা ও জালিয়াতি। ‘প্রতারণা’ ও ‘জালিয়াতি’ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতাভুক্ত অপরাধ।

প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের মাধ্যমে রূপান্তর এবং ভোগবিলাসে ব্যয় করার অভিযোগে সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন বিভাগ সাহেদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলাটি করে।

জালিয়াতি করে উপার্জিত টাকা লেনদেনের সুবিধার জন্যই মো. সাহেদ রিজেন্ট হাসপাতাল, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড ও অন্যান্য অস্তিত্ববিহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছিলেন। ব্যাংক হিসাবগুলো খোলার সময় তিনি নিজেকে কেওয়াইসি (গ্রাহকের তথ্য সংবলিত) ফরমে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান বা স্বত্বাধিকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। এই ব্যাংক হিসাবগুলো পরিচালনা করতেন রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসব হিসাবে টাকা জমা পড়েছে। অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ছিল। এখন তার হিসাবে আছে ৫ হাজার টাকা।

এ পর্যন্ত মোহাম্মদ সাহেদ ও সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। মোহাম্মদ সাহেদ ও তার সহযোগী মাসুদ পারভেজ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড, রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড এবং অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়া বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি আকার ধারণ করলে ভুয়া পরীক্ষা এবং জাল সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সাহেদ তার অপরাধকর্মের প্রধান সহযোগী মাসুদ পারভেজের সহযোগিতায় রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড নামে ঢাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাহ মখদুম অ্যাভিনিউ শাখায় নতুন হিসাব খোলেন। হিসাবটি পরিচালনা করতেন সাহেদের বাবা সিরাজুল করিম ও মাসুদ পারভেজ।