কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা
- আপডেট টাইম : ০৪:১১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০
- / 112
৭১: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পল্লি অঞ্চলে ব্যাপক হারে কৃষি ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির উপর জোর দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ জুলাই) নতুন অর্থবছরের জন্য যে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে এই লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২০-২০২১ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর আর্থিক সংকট মোকাবেলায় এবং সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রথম ও প্রধান তিনটি লক্ষ্য- দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পল্লী অঞ্চলে ব্যাপক হারে কৃষি ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন অর্থবছরে ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এই লক্ষ্য গত অর্থবছরের লক্ষ্যের চেয়ে ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি।
কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর জন্য ১৫ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
নতুন নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ২২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ৩০ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮৬ জন কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৩৬৭ নারী আট হাজার ৩৬০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন।
গত অর্থবছরে ২৩ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৮ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার সাত হাজার ১৭৯ জন কৃষক ২১ কোটি ২১ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন।
পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে উদ্ভূত সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং কৃষকদের কৃষি ঋণ সহজলভ্য করতে নতুন নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু সময়োপযোগী বিষয় সংযোজন করা হয়েছে।
সেগুলো হলো-গয়াল ও তিতির পাখি পালনের জন্য ঋণ বিতরণ এবং এ সংক্রান্ত ঋণ নিয়মাচার সংযোজন। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ঋণ বিতরণ। কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের আওতায় গরু মোটাতাজাকরণে ঋণ বিতরণ। ঋণ নিয়মাচারে একর প্রতি ফসলের ঋণ সীমা বৃদ্ধি।
নতুন কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়াও সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় তৈল ও মসলা জাতীয় ফসল এবং ভুট্টা ছাড়াও শস্য ও ফসল খাতে চার শতাংশ সুদে কৃষকদের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছর জুড়ে চলবে।
৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ১৭২ কোটি টাকা এবং সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় শস্য ও ফসল খাতে ২৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা বিতরণ করেছে।
উল্লেখ্য, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কৃষিখাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়া সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় তৈল ও মসলা জাতীয় ফসল ও ভুট্টা ছাড়াও শস্য ও ফসল খাতে স্বল্প সুদে (৪ শতাংশ হারে) কৃষকদের অনুকূলে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরজুড়ে বিদ্যমান থাকবে।