ঢাকা ১০:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৮:২২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫
  • / 15

ছবি: সংগৃহীত

চুল ও ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে বায়োটিন অপরিহার্য। এটি শুধু চুল ও নখ মজবুত করে না, বরং শরীরের শক্তি উৎপাদন, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং বিপাকক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেহেতু শরীর নিজে থেকে বায়োটিন তৈরি করতে পারে না, তাই খাদ্যতালিকায় বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি।

বিশেষ করে নিরামিষভোজী বা নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস অনুসরণকারীদের জন্য বায়োটিনের অভাব দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ভায়োলেটা মরিস এবং জেনিফার নিকোল বিয়াঞ্চিনি রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানান, বায়োটিন কেরাটিন নামক প্রোটিনকে শক্তিশালী করে, যা চুল, ত্বক ও নখের প্রধান উপাদান। এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে।

বায়োটিন সমৃদ্ধ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাবার:

১. ডিম: ডিমের কুসুম বায়োটিনের অন্যতম ভালো উৎস। একটি ডিমে প্রায় ১০ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে।

  1. স্যামন মাছ: ১০০ গ্রাম সামুদ্রিক মাছে প্রায় ৫ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে, যা ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসেরও ভালো উৎস। বিকল্প হিসেবে কোরাল, রুই, কাতলা মাছ খাওয়া যেতে পারে।
  2. সয়াবিন: আধা কাপ সয়াবিনে প্রায় ১৯.৩ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন পাওয়া যায়। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিজ্জ প্রোটিন।
  3. মিষ্টি আলু: অর্ধেক কাপ মিষ্টি আলু ২.৪ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন সরবরাহ করে, যা চোখ ও ত্বকের জন্য উপকারী।
  4. সূর্যমুখীর বীজ: ২৫ গ্রামে ২.৬ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো চর্বি সরবরাহ করে।
  5. বাদাম (আখরোট, কাজু, কাঠবাদাম): বিশেষ করে কাঠবাদামে প্রতি ২৫ গ্রামে ১.৫ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন পাওয়া যায়।
  6. সার্ডিন মাছ: প্রতি ১০০ গ্রামে ৫ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে এবং এটি ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস।
  7. গাঁজান খাবার (ব্রিউয়ার’স ইস্ট): প্রতি চামচে ১৪ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে, যা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে।
  8. কলিজা (গরু, মুরগি, খাসি): গরুর কলিজায় ১০০ গ্রামে ৩০.৮ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন পাওয়া যায়। তবে পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  9. মাশরুম: এক কাপ মাশরুমে ৫.৬ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং কম ক্যালোরিযুক্ত।

প্রতিদিন ৩০ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন গ্রহণ করা শরীরের জন্য আদর্শ। যদিও বেশিরভাগ মানুষ খাদ্য থেকে এটি পেয়ে থাকেন, তবে নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস অনুসরণকারীদের জন্য এটি ঘাটতির কারণ হতে পারে।

বিশেষ করে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য বায়োটিন গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে সহজলভ্য এসব খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে শুধু চুল ও ত্বকের সৌন্দর্যই নয়, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্যও উন্নত হবে।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

যে কারণে বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত

আপডেট টাইম : ০৮:২২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

চুল ও ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে বায়োটিন অপরিহার্য। এটি শুধু চুল ও নখ মজবুত করে না, বরং শরীরের শক্তি উৎপাদন, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং বিপাকক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেহেতু শরীর নিজে থেকে বায়োটিন তৈরি করতে পারে না, তাই খাদ্যতালিকায় বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি।

বিশেষ করে নিরামিষভোজী বা নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস অনুসরণকারীদের জন্য বায়োটিনের অভাব দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ভায়োলেটা মরিস এবং জেনিফার নিকোল বিয়াঞ্চিনি রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানান, বায়োটিন কেরাটিন নামক প্রোটিনকে শক্তিশালী করে, যা চুল, ত্বক ও নখের প্রধান উপাদান। এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে।

বায়োটিন সমৃদ্ধ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাবার:

১. ডিম: ডিমের কুসুম বায়োটিনের অন্যতম ভালো উৎস। একটি ডিমে প্রায় ১০ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে।

  1. স্যামন মাছ: ১০০ গ্রাম সামুদ্রিক মাছে প্রায় ৫ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে, যা ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসেরও ভালো উৎস। বিকল্প হিসেবে কোরাল, রুই, কাতলা মাছ খাওয়া যেতে পারে।
  2. সয়াবিন: আধা কাপ সয়াবিনে প্রায় ১৯.৩ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন পাওয়া যায়। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিজ্জ প্রোটিন।
  3. মিষ্টি আলু: অর্ধেক কাপ মিষ্টি আলু ২.৪ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন সরবরাহ করে, যা চোখ ও ত্বকের জন্য উপকারী।
  4. সূর্যমুখীর বীজ: ২৫ গ্রামে ২.৬ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো চর্বি সরবরাহ করে।
  5. বাদাম (আখরোট, কাজু, কাঠবাদাম): বিশেষ করে কাঠবাদামে প্রতি ২৫ গ্রামে ১.৫ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন পাওয়া যায়।
  6. সার্ডিন মাছ: প্রতি ১০০ গ্রামে ৫ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে এবং এটি ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস।
  7. গাঁজান খাবার (ব্রিউয়ার’স ইস্ট): প্রতি চামচে ১৪ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে, যা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে।
  8. কলিজা (গরু, মুরগি, খাসি): গরুর কলিজায় ১০০ গ্রামে ৩০.৮ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন পাওয়া যায়। তবে পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  9. মাশরুম: এক কাপ মাশরুমে ৫.৬ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং কম ক্যালোরিযুক্ত।

প্রতিদিন ৩০ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন গ্রহণ করা শরীরের জন্য আদর্শ। যদিও বেশিরভাগ মানুষ খাদ্য থেকে এটি পেয়ে থাকেন, তবে নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস অনুসরণকারীদের জন্য এটি ঘাটতির কারণ হতে পারে।

বিশেষ করে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য বায়োটিন গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে সহজলভ্য এসব খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে শুধু চুল ও ত্বকের সৌন্দর্যই নয়, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্যও উন্নত হবে।

নিউজ লাইট ৭১