ঢাকা ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 105

নিউজ লাইট ৭১: ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। কোটি প্রাণের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে আকবর আলীর দল। ব্যাট হাতে অধিনায়কের বীরত্বে ফাইনালে ১৭০ রানের লক্ষ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩ বল আগেই পৌঁছে যায় জুনিয়র টাইগাররা। ভারত ১৭৭ রান তুললেও শেষ দিকে বৃষ্টির কারণে ডাকওয়ার্থ ও লুইস মেথডে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৬ ওভারে ১৭০।

আকবর ৪৩ ও রাকিবুল ৯ রানে অপরাজিত থাকেন। অষ্টম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থেকে তারা যোগ করেন ২৭ রান। বাংলাদেশ এক দিন বিশ্বকাপ জিতবে, এই আপ্তবাক্যটি উচ্চারিত হয়ে আসছিল অনেক আগে থেকেই। বড়দের ঘিরে সে স্বপ্নে আঘাত এসেছে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে অষ্টম হয়ে ফেরায়। মাশরাফী-সাকিব-মুশফিকরা হোঁচট খেলেও তরুণরা থেকেছেন কক্ষপথে। বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়েই সাউথ আফ্রিকা থেকে ফিরছেন রাকিবুল-মাহমুদুল-তানজিদরা।

ফাইনালে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতেই বিশ্বকাপ জয়ের আশার ভেলায় চড়ে বাংলাদেশ। টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারত ১৭৭ রানে গুটিয়ে যেতেই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার প্রতীক্ষার শুরু। ওপেনিং জুটির ৫০ রানে আশায় বুক বাঁধতে থাকেন সবাই।

ইমন-আকবর-তানজিদদের ব্যাট থেকে আসা একেকটি রানের যোগফলে রচিত হয় ইতিহাস। চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে প্রথম শিরোপায় নাম লেখায় বাংলাদেশ। গগনবিদারি চিৎকারে ফেটে পড়ে জুনিয়র টাইগাররা। তাদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসের অনুরণন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাংলাদেশে।

মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। ওপেনিং জুটিতেই চলে আসে ৫০ রান। তানজিদ হাসান তামিম ১৭ রান করে লেগ স্পিনার রবি বিস্ময়ের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। এই বাঁহাতি ওপেনার খেলেন ২৫ বল, মারেন দুটি চার ও একটি ছক্কা।

তানজিদ ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। বিস্ময়ের গুগলিতে বোল্ড হয়ে যান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। নন-স্ট্রাইকে থাকা পারভেজ হোসেন ইমনের হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগলে ছাড়তে হয় মাঠ। দারুণ খেলতে থাকা এই ওপেনার ২৫ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন। একই ডেলিভারিতে দুই ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

লেগ স্পিনে তেজ দেখাতে থাকেন বিস্ময়। পরের ওভারে এলবিডব্লিউতে তুলে নেন তৌহিদ হৃদয়ের (০) উইকেট। পরের আবার আরেক ধাক্কা। বিস্ময়ের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে যান শাহাদাত হোসেন (১)।

বিনা উইকেটে ৫০ থেকে স্কোরটা হয়ে যায় ৬৫/৪। শামিম হোসেনকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যান অধিনায়ক আকবর আলী। বাঁহাতি পেসার সুশান্ত মিশ্রর বলে শামিম ক্যাচ তুলে দিলে ভাঙে ২০ রানের জুটি। ৫ উইকেট পড়ে ৮৫ রানে।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিও দেখাতে থাকে ভালো কিছুর আশা। দলীয় শতরান পাড়ি দিতেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন অভিষেক দাস। আগের বলে স্পিলে ক্যাচ ফসকালে জীবন পান এই ব্যাটসম্যান। পরের বলেই সেøা-বাউন্সারে হুক করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। মিশ্রর দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে করেন ৫ রান। জুটিতে আসে ১৭ রান।

২৫ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরা ইমন নেমে জুটি বাঁধেন অধিনায়কের সঙ্গে। সাবলীল ব্যাটিংয়ে আগাতে থাকেন জয়ের পথে। দলীয় সংগ্রহ দেড় শ ছোঁয়ার আগে ইমন কাভারে ক্যাচ তুলে দিলে নতুন করে জাগে শঙ্কা। ফিফটির কাছে গিয়ে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই বাঁহাতি ওপেনার যখন আউট হন জয় থেকে বাংলাদেশ ৩৫ রান দূরে।

আকবর ও রাকিবুলের বীরত্বে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের কাছে চলে যায় বাংলাদেশ। ৫৪ বলে যখন ১৫ রানের দরকার, তখনই হানা দেয় বৃষ্টি। কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকায় ডাকওয়ার্থ ও লুইস মেথডে বাংলাদশের লক্ষ্য কমে হয় ১৭০।

Tag :

শেয়ার করুন

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ০৯:৫৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। কোটি প্রাণের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে আকবর আলীর দল। ব্যাট হাতে অধিনায়কের বীরত্বে ফাইনালে ১৭০ রানের লক্ষ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩ বল আগেই পৌঁছে যায় জুনিয়র টাইগাররা। ভারত ১৭৭ রান তুললেও শেষ দিকে বৃষ্টির কারণে ডাকওয়ার্থ ও লুইস মেথডে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৬ ওভারে ১৭০।

আকবর ৪৩ ও রাকিবুল ৯ রানে অপরাজিত থাকেন। অষ্টম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থেকে তারা যোগ করেন ২৭ রান। বাংলাদেশ এক দিন বিশ্বকাপ জিতবে, এই আপ্তবাক্যটি উচ্চারিত হয়ে আসছিল অনেক আগে থেকেই। বড়দের ঘিরে সে স্বপ্নে আঘাত এসেছে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে অষ্টম হয়ে ফেরায়। মাশরাফী-সাকিব-মুশফিকরা হোঁচট খেলেও তরুণরা থেকেছেন কক্ষপথে। বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়েই সাউথ আফ্রিকা থেকে ফিরছেন রাকিবুল-মাহমুদুল-তানজিদরা।

ফাইনালে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতেই বিশ্বকাপ জয়ের আশার ভেলায় চড়ে বাংলাদেশ। টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারত ১৭৭ রানে গুটিয়ে যেতেই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার প্রতীক্ষার শুরু। ওপেনিং জুটির ৫০ রানে আশায় বুক বাঁধতে থাকেন সবাই।

ইমন-আকবর-তানজিদদের ব্যাট থেকে আসা একেকটি রানের যোগফলে রচিত হয় ইতিহাস। চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে প্রথম শিরোপায় নাম লেখায় বাংলাদেশ। গগনবিদারি চিৎকারে ফেটে পড়ে জুনিয়র টাইগাররা। তাদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসের অনুরণন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাংলাদেশে।

মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। ওপেনিং জুটিতেই চলে আসে ৫০ রান। তানজিদ হাসান তামিম ১৭ রান করে লেগ স্পিনার রবি বিস্ময়ের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। এই বাঁহাতি ওপেনার খেলেন ২৫ বল, মারেন দুটি চার ও একটি ছক্কা।

তানজিদ ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। বিস্ময়ের গুগলিতে বোল্ড হয়ে যান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। নন-স্ট্রাইকে থাকা পারভেজ হোসেন ইমনের হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগলে ছাড়তে হয় মাঠ। দারুণ খেলতে থাকা এই ওপেনার ২৫ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন। একই ডেলিভারিতে দুই ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

লেগ স্পিনে তেজ দেখাতে থাকেন বিস্ময়। পরের ওভারে এলবিডব্লিউতে তুলে নেন তৌহিদ হৃদয়ের (০) উইকেট। পরের আবার আরেক ধাক্কা। বিস্ময়ের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে যান শাহাদাত হোসেন (১)।

বিনা উইকেটে ৫০ থেকে স্কোরটা হয়ে যায় ৬৫/৪। শামিম হোসেনকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যান অধিনায়ক আকবর আলী। বাঁহাতি পেসার সুশান্ত মিশ্রর বলে শামিম ক্যাচ তুলে দিলে ভাঙে ২০ রানের জুটি। ৫ উইকেট পড়ে ৮৫ রানে।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিও দেখাতে থাকে ভালো কিছুর আশা। দলীয় শতরান পাড়ি দিতেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন অভিষেক দাস। আগের বলে স্পিলে ক্যাচ ফসকালে জীবন পান এই ব্যাটসম্যান। পরের বলেই সেøা-বাউন্সারে হুক করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। মিশ্রর দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে করেন ৫ রান। জুটিতে আসে ১৭ রান।

২৫ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরা ইমন নেমে জুটি বাঁধেন অধিনায়কের সঙ্গে। সাবলীল ব্যাটিংয়ে আগাতে থাকেন জয়ের পথে। দলীয় সংগ্রহ দেড় শ ছোঁয়ার আগে ইমন কাভারে ক্যাচ তুলে দিলে নতুন করে জাগে শঙ্কা। ফিফটির কাছে গিয়ে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই বাঁহাতি ওপেনার যখন আউট হন জয় থেকে বাংলাদেশ ৩৫ রান দূরে।

আকবর ও রাকিবুলের বীরত্বে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের কাছে চলে যায় বাংলাদেশ। ৫৪ বলে যখন ১৫ রানের দরকার, তখনই হানা দেয় বৃষ্টি। কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকায় ডাকওয়ার্থ ও লুইস মেথডে বাংলাদশের লক্ষ্য কমে হয় ১৭০।