ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বেও সগৌরবে মাথা উঁচু করছে বাংলা ভাষার শহীদ মিনার

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 127

নিউজ লাইট ৭১: বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে বাকি বিশ্বেও সগৌরবে মাথা উঁচু করছে বাংলা ভাষার শহীদ মিনার। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ফ্রান্সের প্যারিস, ইতালির রোম, জাপানের টোকিও, কানাডার টরন্টো, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তৈরি হয়েছে স্থায়ী শহীদ মিনার। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধশতাধিক শহরসহ বাংলাদেশের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন বাঙালি অধ্যুষিত জনপদে ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত হয় অস্থায়ী শহীদ মিনার। এ সংখ্যা ইতোমধ্যে ‘একশ’ ছাড়িয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। ২০১০ সালের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক্কালে জাতিসংঘ থেকে এ-সংক্রান্ত যে এতে মাতৃভাষা দিবস নিয়ে উৎসাহী বিশ্বের অন্যান্য ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীও আমাদের শহীদ মিনার, এর ইতিহাস ও গৌরব সম্পর্কে জানতে পারছে।

ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে এশিয়ায় প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয় জাপানে। বাঙালি অধ্যুষিত বিদেশি রাজধানী টোকিওতে শহীদ মিনার নির্মাণের তোড়জোড় শুরু হয়েছিল অনেক আগে। কিন্তু বাস্তবায়িত হচ্ছিল না। জাপান সফরকালে প্রবাসীদের পক্ষে এ দাবি নিয়ে ২০০৫ সালে টিভিব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ দেখা করেন স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে। মেয়র বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে বলেন, যদি জাপান ও বাংলাদেশ সরকার এবং ইউনেস্কো উদ্যোগ নেয়, তাহলে তাদের দিক থেকে আপত্তি নেই। কোনো সমস্যা নেই। পরে জাপান সরকার জমি বরাদ্দ দেয় এবং নির্মাণ ব্যয় বহন করে বাংলাদেশ সরকার। জুলাই মাসে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এ শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। টোকিওর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা ইকেবুকুরো স্টেশনসংলগ্ন পার্কে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে ইস্পাতের কাঠামোর ওই শহীদ মিনার গড়ে ওঠে। কাছাকাছি সময় মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ ওমানে গড়ে ওঠে বাংলা ভাষার শহীদ মিনার। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত এই মিনারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানকার তৎকালীন রাষ্ট্রদূত গোলাম আকবর খন্দকারের উদ্যোগে।
ইউরোপের প্রথম শহীদ মিনারটি স্থাপিত হয় উত্তর লন্ডনে। সেখানকার ‘বাংলাদেশি কালচারাল অ্যান্ড হিস্ট্রি ইন ওল্ডহ্যাম’ ১৯৯০ সালে সিদ্ধান্ত নেয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। স্থানীয় বাঙালি কাউন্সিলরদের দাবির মুখে ওল্ডহ্যামের মেয়র জমি ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দেন। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর শহীদ মিনারটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস। উপমহাদেশের বাইরেও স্থাপিত হয় বাঙালির ভাষা আন্দোলনের স্মারক।

লন্ডনে দ্বিতীয় শহীদ মিনারটি উদ্বোধন হয় পূর্ব লন্ডনের শহীদ আলতাব আলী পার্কে ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। এর আগে ব্রিটেনে বাঙালি কমিউনিটির সর্ববৃহৎ ও প্রাচীনতম সংগঠন বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের সাড়ে বায়ান্ন হ্যানবারি স্ট্রিটের একটি হলে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যবস্থা করা হতো। পরে অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে খোলা আকাশের নিচে একটি শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে আশির দশকে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আলতাব আলীর নামে নামকরণ করা হয় পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল রোডের পার্ক। ১৯৯৮ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে প্রথম সেখানে অস্থায়ী একটি শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সঙ্গে দেনদরবারের ফল হিসেবে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণে কাউন্সিল-কমিউনিটি ঐকমত্যে পৌঁছায়। কাউন্সিলের পক্ষ থেকে কমিউনিটিকে প্রস্তাব দেয়া হয় জায়গা বরাদ্দ দেবে কাউন্সিল; কিন্তু শহীদ মিনার তৈরির খরচ বহন করতে হবে কমিউনিটিকে। এ প্রস্তাবে কমিউনিটি সম্মত হয় এবং শুরু হয় তহবিল সংগ্রহ। বাংলাদেশ হাইকমিশন, সোনালী ব্যাংক লন্ডন শাখা, প্রবাসী আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, জাসদ ও উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীসহ ৫৪টির মতো সংগঠন যুক্ত হয়। তৈরি হয় শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটি। মিনার কমিটি। ২২ হাজার পাউন্ড ব্যয়ে নির্মিত শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের তৎকালীন স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট লুটন শহরে নির্মিত হয় লন্ডনের তৃতীয় শহীদ মিনার।

ইউরোপে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের পর ইতালির আদরিয়াটিকো সাগরের কোলঘেঁষা বন্দর শহর বারিতে নির্মিত হয় শহীদ মিনার। বাংলাদেশ সমাজকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে স্থানীয় প্রশাসন জায়গা দেয় এবং বাঙালি কমিউনিটির অর্থায়নে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে শহীদ মিনারটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের তৎকালীন ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী। ইতালির দ্বিতীয় শহীদ মিনার স্থাপিত হয় রাজধানী রোমে। ভিয়া পানামার ইসহাক রবিন পার্কে এটি নির্মিত হয় ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সাত মিটার দৈর্ঘ্য ও দুই দশমিক দশ মিটার প্রস্থের শহীদ মিনারটি নির্মাণের খরচ বহন করে বাংলাদেশ সরকার।

ফ্রান্সের বাঙালি কমিউনিটি প্রতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে থাকে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা হলে ফ্রান্সের বাঙালি কমিউনিটি প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রশাসনিক চেষ্টা চালাতে থাকে। ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ফ্রান্স সংসদ এবং প্যারিসের উবারভিলিয়ে মেরি যৌথভাবে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত উবারভিলিয়ে শহরের মেয়র জ্যাক সালভাতর আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের ঘোষণা দেন।

Tag :

শেয়ার করুন

বিশ্বেও সগৌরবে মাথা উঁচু করছে বাংলা ভাষার শহীদ মিনার

আপডেট টাইম : ১০:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে বাকি বিশ্বেও সগৌরবে মাথা উঁচু করছে বাংলা ভাষার শহীদ মিনার। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ফ্রান্সের প্যারিস, ইতালির রোম, জাপানের টোকিও, কানাডার টরন্টো, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তৈরি হয়েছে স্থায়ী শহীদ মিনার। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধশতাধিক শহরসহ বাংলাদেশের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন বাঙালি অধ্যুষিত জনপদে ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত হয় অস্থায়ী শহীদ মিনার। এ সংখ্যা ইতোমধ্যে ‘একশ’ ছাড়িয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। ২০১০ সালের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক্কালে জাতিসংঘ থেকে এ-সংক্রান্ত যে এতে মাতৃভাষা দিবস নিয়ে উৎসাহী বিশ্বের অন্যান্য ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীও আমাদের শহীদ মিনার, এর ইতিহাস ও গৌরব সম্পর্কে জানতে পারছে।

ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে এশিয়ায় প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয় জাপানে। বাঙালি অধ্যুষিত বিদেশি রাজধানী টোকিওতে শহীদ মিনার নির্মাণের তোড়জোড় শুরু হয়েছিল অনেক আগে। কিন্তু বাস্তবায়িত হচ্ছিল না। জাপান সফরকালে প্রবাসীদের পক্ষে এ দাবি নিয়ে ২০০৫ সালে টিভিব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ দেখা করেন স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে। মেয়র বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে বলেন, যদি জাপান ও বাংলাদেশ সরকার এবং ইউনেস্কো উদ্যোগ নেয়, তাহলে তাদের দিক থেকে আপত্তি নেই। কোনো সমস্যা নেই। পরে জাপান সরকার জমি বরাদ্দ দেয় এবং নির্মাণ ব্যয় বহন করে বাংলাদেশ সরকার। জুলাই মাসে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এ শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। টোকিওর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা ইকেবুকুরো স্টেশনসংলগ্ন পার্কে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে ইস্পাতের কাঠামোর ওই শহীদ মিনার গড়ে ওঠে। কাছাকাছি সময় মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ ওমানে গড়ে ওঠে বাংলা ভাষার শহীদ মিনার। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত এই মিনারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানকার তৎকালীন রাষ্ট্রদূত গোলাম আকবর খন্দকারের উদ্যোগে।
ইউরোপের প্রথম শহীদ মিনারটি স্থাপিত হয় উত্তর লন্ডনে। সেখানকার ‘বাংলাদেশি কালচারাল অ্যান্ড হিস্ট্রি ইন ওল্ডহ্যাম’ ১৯৯০ সালে সিদ্ধান্ত নেয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। স্থানীয় বাঙালি কাউন্সিলরদের দাবির মুখে ওল্ডহ্যামের মেয়র জমি ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দেন। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর শহীদ মিনারটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস। উপমহাদেশের বাইরেও স্থাপিত হয় বাঙালির ভাষা আন্দোলনের স্মারক।

লন্ডনে দ্বিতীয় শহীদ মিনারটি উদ্বোধন হয় পূর্ব লন্ডনের শহীদ আলতাব আলী পার্কে ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। এর আগে ব্রিটেনে বাঙালি কমিউনিটির সর্ববৃহৎ ও প্রাচীনতম সংগঠন বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের সাড়ে বায়ান্ন হ্যানবারি স্ট্রিটের একটি হলে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যবস্থা করা হতো। পরে অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে খোলা আকাশের নিচে একটি শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে আশির দশকে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আলতাব আলীর নামে নামকরণ করা হয় পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল রোডের পার্ক। ১৯৯৮ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে প্রথম সেখানে অস্থায়ী একটি শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সঙ্গে দেনদরবারের ফল হিসেবে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণে কাউন্সিল-কমিউনিটি ঐকমত্যে পৌঁছায়। কাউন্সিলের পক্ষ থেকে কমিউনিটিকে প্রস্তাব দেয়া হয় জায়গা বরাদ্দ দেবে কাউন্সিল; কিন্তু শহীদ মিনার তৈরির খরচ বহন করতে হবে কমিউনিটিকে। এ প্রস্তাবে কমিউনিটি সম্মত হয় এবং শুরু হয় তহবিল সংগ্রহ। বাংলাদেশ হাইকমিশন, সোনালী ব্যাংক লন্ডন শাখা, প্রবাসী আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, জাসদ ও উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীসহ ৫৪টির মতো সংগঠন যুক্ত হয়। তৈরি হয় শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটি। মিনার কমিটি। ২২ হাজার পাউন্ড ব্যয়ে নির্মিত শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের তৎকালীন স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট লুটন শহরে নির্মিত হয় লন্ডনের তৃতীয় শহীদ মিনার।

ইউরোপে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের পর ইতালির আদরিয়াটিকো সাগরের কোলঘেঁষা বন্দর শহর বারিতে নির্মিত হয় শহীদ মিনার। বাংলাদেশ সমাজকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে স্থানীয় প্রশাসন জায়গা দেয় এবং বাঙালি কমিউনিটির অর্থায়নে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে শহীদ মিনারটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের তৎকালীন ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী। ইতালির দ্বিতীয় শহীদ মিনার স্থাপিত হয় রাজধানী রোমে। ভিয়া পানামার ইসহাক রবিন পার্কে এটি নির্মিত হয় ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সাত মিটার দৈর্ঘ্য ও দুই দশমিক দশ মিটার প্রস্থের শহীদ মিনারটি নির্মাণের খরচ বহন করে বাংলাদেশ সরকার।

ফ্রান্সের বাঙালি কমিউনিটি প্রতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে থাকে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা হলে ফ্রান্সের বাঙালি কমিউনিটি প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রশাসনিক চেষ্টা চালাতে থাকে। ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ফ্রান্স সংসদ এবং প্যারিসের উবারভিলিয়ে মেরি যৌথভাবে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত উবারভিলিয়ে শহরের মেয়র জ্যাক সালভাতর আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের ঘোষণা দেন।