ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মাসেতুর ২৩তম স্প্যান ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারের উপর বসানোর কাজ শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:২০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 95

নিউজ লাইট ৭১: শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মাসেতুর ২৩তম স্প্যান ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারের উপর বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। স্প্যানটি বসানো গেলে দেখা যাবে সেতুর ৩ হাজার ৪৫০ মিটার।

এর মধ্য দিয়ে ২২তম স্প্যান বসানোর ১০ দিনের মাথায় বসতে যাচ্ছে ২৩তম স্প্যানটি।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে পদ্মাসেতুর কাজে ধীর গতির শঙ্কাকাকে পেছনে ফেলে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম চলছে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটিকে নিয়ে যায় ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন। সকাল ১০টা ১২ মিনিটের দিকে স্প্যানটি সেতুর ৩১ ও ৩১ নম্বর পিলারের কাছে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

স্প্যানটি সকাল ৮টায় মাওয়া থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও আবহাওয়াজনিত কারণে বেশি সময় লেগেছে রওয়ানা করতে।

প্রকৌশল সূত্রে জানা গেছে, স্প্যান বসানোর জন্য আগে থেকেই আনুষঙ্গিক কাজসমূহ সফলভাবে সম্পন্ন করা হবে। বর্তমানে স্প্যানটিকে পজিশনিং করে নির্ধারিত পিলারের কাছে নোঙর করার চেষ্টা চলছে। ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে এরপর তোলা হবে পিলারের উচ্চতায়, রাখা হবে দুই পিলারের বেয়ারিংয়ের উপর।

প্রসঙ্গত, পদ্মাসেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ৪১ টি স্প্যান দিয়ে তৈরি হবে এই সেতু। ২৩ জানুয়ারি এই ৪১টির মধ্যে ২২টি স্প্যানই বসে গেছে। আর এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর প্রায় অর্ধেক।

মোট ৪২ টি পিলারের মধ্যে ৩৬টি পিলারের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি রয়েছে আর মাত্র ৬ টি পিলার (৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭, এবং ২৯ )। এই ৬টি পিলারের কাজ শেষ হলেই দেখা যাবে পুরো পদ্মাসেতু।

সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জটিল ছিল ৬ ও ৭ নম্বর পিলার। ৪ বছর আগে এ দুটি পিলারে জটিলতা দেখা দেয়ায় শেষ পর্যন্ত পদ্মাসেতু হবে কিনা, তা নিয়েই দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। বিশ্বে এর আগে কোথাও হয়নি- এমন একটি পদ্ধতিতে এ দুটি পিলারের জটিলতা কাটিয়ে শতভাগ কাজ শেষ করতে পারাকে বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, পদ্মাসেতুতে প্রথম স্প্যান ‘৭-এ’ ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের উপর বসে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৭-বি’ সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৭-সি’ সেতুর ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ। স্প্যান ‘৭-ই’ সেতুর ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১৩ মে। স্প্যান ‘৭-এফ’ সেতুর ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৯ জুন।

স্প্যান ‘১-এফ’ সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে বসানো হয় ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর। স্প্যান ‘৬-এফ’ সেতুর ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ই’ সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি।

স্প্যান ‘৬-ডি’ সেতুর ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ মার্চ। স্প্যান ‘৩-এ’ সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল। স্প্যান ‘৬-সি’ সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল। স্প্যান ‘৩-বি’ সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ মে। স্প্যান ‘৩-সি’ সেতুর ১৫ ও ১৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৯ জুন।

স্প্যান ‘৪-এফ’ সেতুর ২৪ ও ২৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৪-ই’ সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর এবং স্প্যান ‘৩-ডি’ সেতুর ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারের উপর বসে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর।

২৬ নভেম্বর সেতুর ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান ‘৪-ডি’। ১১ ডিসেম্বর ‘৩-ই’ স্প্যান বসে সেতুর ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের উপর। ১৮ ডিসেম্বর ২১ ও ২২ নম্বর পিলারে উপর বসে স্প্যান ‘৪-সি’। ৩১ ডিসেম্বর ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান ‘৩-এফ’।

পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, সবগুলো স্প্যান আগামী মার্চের মধ্যে বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে। জুলাই মাসের মধ্যেই এগুলো পিলারের ওপর বসানো হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

Tag :

শেয়ার করুন

পদ্মাসেতুর ২৩তম স্প্যান ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারের উপর বসানোর কাজ শুরু

আপডেট টাইম : ১০:২০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মাসেতুর ২৩তম স্প্যান ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারের উপর বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। স্প্যানটি বসানো গেলে দেখা যাবে সেতুর ৩ হাজার ৪৫০ মিটার।

এর মধ্য দিয়ে ২২তম স্প্যান বসানোর ১০ দিনের মাথায় বসতে যাচ্ছে ২৩তম স্প্যানটি।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে পদ্মাসেতুর কাজে ধীর গতির শঙ্কাকাকে পেছনে ফেলে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম চলছে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটিকে নিয়ে যায় ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন। সকাল ১০টা ১২ মিনিটের দিকে স্প্যানটি সেতুর ৩১ ও ৩১ নম্বর পিলারের কাছে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

স্প্যানটি সকাল ৮টায় মাওয়া থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও আবহাওয়াজনিত কারণে বেশি সময় লেগেছে রওয়ানা করতে।

প্রকৌশল সূত্রে জানা গেছে, স্প্যান বসানোর জন্য আগে থেকেই আনুষঙ্গিক কাজসমূহ সফলভাবে সম্পন্ন করা হবে। বর্তমানে স্প্যানটিকে পজিশনিং করে নির্ধারিত পিলারের কাছে নোঙর করার চেষ্টা চলছে। ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে এরপর তোলা হবে পিলারের উচ্চতায়, রাখা হবে দুই পিলারের বেয়ারিংয়ের উপর।

প্রসঙ্গত, পদ্মাসেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ৪১ টি স্প্যান দিয়ে তৈরি হবে এই সেতু। ২৩ জানুয়ারি এই ৪১টির মধ্যে ২২টি স্প্যানই বসে গেছে। আর এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর প্রায় অর্ধেক।

মোট ৪২ টি পিলারের মধ্যে ৩৬টি পিলারের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি রয়েছে আর মাত্র ৬ টি পিলার (৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭, এবং ২৯ )। এই ৬টি পিলারের কাজ শেষ হলেই দেখা যাবে পুরো পদ্মাসেতু।

সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জটিল ছিল ৬ ও ৭ নম্বর পিলার। ৪ বছর আগে এ দুটি পিলারে জটিলতা দেখা দেয়ায় শেষ পর্যন্ত পদ্মাসেতু হবে কিনা, তা নিয়েই দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। বিশ্বে এর আগে কোথাও হয়নি- এমন একটি পদ্ধতিতে এ দুটি পিলারের জটিলতা কাটিয়ে শতভাগ কাজ শেষ করতে পারাকে বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, পদ্মাসেতুতে প্রথম স্প্যান ‘৭-এ’ ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের উপর বসে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৭-বি’ সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৭-সি’ সেতুর ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ। স্প্যান ‘৭-ই’ সেতুর ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১৩ মে। স্প্যান ‘৭-এফ’ সেতুর ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৯ জুন।

স্প্যান ‘১-এফ’ সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে বসানো হয় ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর। স্প্যান ‘৬-এফ’ সেতুর ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ই’ সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি।

স্প্যান ‘৬-ডি’ সেতুর ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ মার্চ। স্প্যান ‘৩-এ’ সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল। স্প্যান ‘৬-সি’ সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল। স্প্যান ‘৩-বি’ সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ মে। স্প্যান ‘৩-সি’ সেতুর ১৫ ও ১৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৯ জুন।

স্প্যান ‘৪-এফ’ সেতুর ২৪ ও ২৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৪-ই’ সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর এবং স্প্যান ‘৩-ডি’ সেতুর ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারের উপর বসে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর।

২৬ নভেম্বর সেতুর ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান ‘৪-ডি’। ১১ ডিসেম্বর ‘৩-ই’ স্প্যান বসে সেতুর ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের উপর। ১৮ ডিসেম্বর ২১ ও ২২ নম্বর পিলারে উপর বসে স্প্যান ‘৪-সি’। ৩১ ডিসেম্বর ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান ‘৩-এফ’।

পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, সবগুলো স্প্যান আগামী মার্চের মধ্যে বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে। জুলাই মাসের মধ্যেই এগুলো পিলারের ওপর বসানো হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।