বাজেটে প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত
- আপডেট টাইম : ১১:১৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
- / 27
যেকোনো দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি জাতির পরিচয় নির্ণয় করে তার শিক্ষা। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য চিত্র একটি বড় বিষয়। বিশ্বে কিউবার অর্থনীতি খুব বড় নয়, শক্তিশালীও নয়। কিন্তু তাদের স্বাস্থ্য চিকিৎসা বিশ্ব সেরা।
আমাদের পার্শ্ববর্তী দুটি দেশ থাইল্যান্ড ও ভারতের চিকিৎসার প্রতি আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ আস্থাশীল। যাদের বেশি টাকা তারা চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যায়, যাদের টাকা কম তারা যায় ভারতে। আমাদের দেশে ভালো চিকিৎসক থাকার পরও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নের অভাবে শত শত কোটি টাকা বিদেশে চলে যায়। তারপর আমাদের চিকিৎসা খাতে বাজেট বরাদ্দ কম। ইতিপূর্বে করোনা মহামারির কারণে দেশের শিক্ষা খাতে বড় ক্ষতি হয়েছে। মহামারির সময়ই স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছিল। কিন্তু এরপরও বাজেটে এই দুটি খাত প্রত্যাশিত মনোযোগ পাচ্ছে না। টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও বাজেট এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় এই দুই খাতে বরাদ্দ খুব একটা বাড়ছে না। কোভিডের আগের ধারাবাহিকতায় বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত অনেকটা অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। আগামী বাজেটেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার ইঙ্গিত নেই। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, পৃথিবীর যে ১০টি দেশ অর্থনীতির আকারের তুলনায় শিক্ষা খাতে সবচেয়ে কম বরাদ্দ দেয়, বাংলাদেশ তার একটি।
অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে একজন বাংলাদেশির বছরে ৮৮ ডলার খরচ করা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে মাথাপিছু খরচ হয় ৫৮ ডলার, যার বড় অংশই নাগরিকরা নিজেরা সংস্থান করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের শুধু শিক্ষা খাতে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকবে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এসব বরাদ্দ সরকারের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে।
গত পাঁচ বছরের বাজেট বরাদ্দ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ সময় শিক্ষা খাতের বরাদ্দ বাজেটের ১২ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ৫ শতাংশের আশপাশে ছিল। অন্যদিকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতের শিক্ষা খাতের বরাদ্দ ২ শতাংশের মতো, আর স্বাস্থ্য খাতে তা ১ শতাংশের মতো। বাজেটের শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাত একসঙ্গে দেখানো হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের শুধু শিক্ষা খাতে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকবে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এসব বরাদ্দ সরকারের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে। শিক্ষা খাতের পরিচালন বরাদ্দ দিয়ে মূলত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ মেটানো হয়। উন্নয়ন বরাদ্দ দিয়ে স্কুল, কলেজ ভবন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে খরচ করার কথা। কিন্তু এ খাতে ভবন নির্মাণেই বেশি আগ্রহ দেখা যায়। একই অবস্থা স্বাস্থ্য খাতেও। উন্নয়ন খাতের বরাদ্দে অবশ্য সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের চেয়ে রাস্তাঘাট, জ্বালানি খাতকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।
আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) শীর্ষ তিনটি খাতের মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত নেই। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত সব মিলিয়ে পাচ্ছে এডিপির ২০ শতাংশের কম। যেখানে বিনিয়োগ করলে লাভের ভাগ বেশি হবে, সেখানেই বিনিয়োগ করা দরকার। সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেবেন এ প্রত্যাশা দেশবাসীর সঙ্গে আমাদেরও।
নিউজ লাইট ৭১