ঢাকা ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপরাধ জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গতিবিধির ওপর নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০
  • / 90

নিউজ লাইট ৭১: হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার দাগি আসামিকে ধরতে  বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) মধ্য রাত থেকে বিশেষ অভিযানে নামছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে তাদের সঙ্গে। এসব অস্ত্রধারী বহিরাগতদের গ্রেপ্তার করা হবে। পয়লা ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীরা ঢাকা সিটি নির্বাচন ঘিরে নাশকতার পরিককল্পনা করছে। নির্বাচনের দিন যত কাছে আসছে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পায়নি এমন নির্দলীয় বিতর্কিত প্রার্থীদের পক্ষে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তৃণমূলের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য আছে যে, হত্যা, সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন দাগি আসামিরা এরই মধ্যে ঢাকায় গেছে। তারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের হয়ে মিছিলসহ নানা আধিপত্য বিস্তার করছে। তারা ঢাকায় কোথায় অবস্থান করছেন সেটাও গোয়েন্দাদের কাছে অনেকে বলে দিয়েছেন।

মতিঝিল, খিলগাঁও, ঢাকা দক্ষিণের কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলোতে বহিরাগতকরা মিছিলে ঢুকছে। যশোর, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা ও গাজীপুর থেকে অনেক ক্যাডার ঢাকায় প্রবেশ করেছে।

গুলবাগ, খিলগাঁও, মধুবাগসহ বিভিন্নস্থানে বহিরাগত মাস্তানদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। জামায়াত-শিবিরের তালিকাভুক্ত ক্যাডাররা বিএনপি দলীয় পরিচয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে।

বিদ্রোহী প্রার্থী ও ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে বহিরাগতদের নিয়ে আসছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বিদেশি অস্ত্রের চালান ঢুকেছে রাজধানীতে। অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এসব অস্ত্র এখন পাড়া-মহল্লার সন্ত্রাসীদের হাতে।

শতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন যারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে নেমেছেন। এদেরকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে জামায়াত-শিবির। দুই দলের বাইরের নির্দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লড়াইয়ে এরই মধ্যেই কালো টাকা ছড়াচ্ছেন তারা।

শতাধিক বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থীকে ঘিরে নির্বাচন সামনে রেখে সন্ত্রাসী ও নাশকতা কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা করা হচ্ছে বেশি। বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে মাদক, চাঁদাবাজি ও দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত সন্ত্রাসীদের সখ্য আছে এমন অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারো কারো সঙ্গে বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও যোগাযোগ থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে দুই সিটির মেয়র নির্বাচন ঘিরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম।

নির্দলীয় বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সামনে রেখে সন্ত্রাস, নাশকতার সুযোগ নিতে পারে তৃতীয় পক্ষ। সন্ত্রাসী, জঙ্গি, ওয়ারেন্টের আসামি ও অপরাধ জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গতিবিধির ওপর নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের অপরাধীদের তথ্য আমাদের কাছে আছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ভোটের সময় অপরাধীসহ কোনো বহিরাগতরা ঢাকায় থাকতে পারবে না। আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে। অপরাধী যেই হোক এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

Tag :

শেয়ার করুন

অপরাধ জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গতিবিধির ওপর নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আপডেট টাইম : ১১:৩৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার দাগি আসামিকে ধরতে  বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) মধ্য রাত থেকে বিশেষ অভিযানে নামছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে তাদের সঙ্গে। এসব অস্ত্রধারী বহিরাগতদের গ্রেপ্তার করা হবে। পয়লা ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীরা ঢাকা সিটি নির্বাচন ঘিরে নাশকতার পরিককল্পনা করছে। নির্বাচনের দিন যত কাছে আসছে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পায়নি এমন নির্দলীয় বিতর্কিত প্রার্থীদের পক্ষে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তৃণমূলের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য আছে যে, হত্যা, সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন দাগি আসামিরা এরই মধ্যে ঢাকায় গেছে। তারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের হয়ে মিছিলসহ নানা আধিপত্য বিস্তার করছে। তারা ঢাকায় কোথায় অবস্থান করছেন সেটাও গোয়েন্দাদের কাছে অনেকে বলে দিয়েছেন।

মতিঝিল, খিলগাঁও, ঢাকা দক্ষিণের কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলোতে বহিরাগতকরা মিছিলে ঢুকছে। যশোর, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা ও গাজীপুর থেকে অনেক ক্যাডার ঢাকায় প্রবেশ করেছে।

গুলবাগ, খিলগাঁও, মধুবাগসহ বিভিন্নস্থানে বহিরাগত মাস্তানদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। জামায়াত-শিবিরের তালিকাভুক্ত ক্যাডাররা বিএনপি দলীয় পরিচয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে।

বিদ্রোহী প্রার্থী ও ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে বহিরাগতদের নিয়ে আসছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বিদেশি অস্ত্রের চালান ঢুকেছে রাজধানীতে। অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এসব অস্ত্র এখন পাড়া-মহল্লার সন্ত্রাসীদের হাতে।

শতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন যারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে নেমেছেন। এদেরকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে জামায়াত-শিবির। দুই দলের বাইরের নির্দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লড়াইয়ে এরই মধ্যেই কালো টাকা ছড়াচ্ছেন তারা।

শতাধিক বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থীকে ঘিরে নির্বাচন সামনে রেখে সন্ত্রাসী ও নাশকতা কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা করা হচ্ছে বেশি। বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে মাদক, চাঁদাবাজি ও দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত সন্ত্রাসীদের সখ্য আছে এমন অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারো কারো সঙ্গে বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও যোগাযোগ থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে দুই সিটির মেয়র নির্বাচন ঘিরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম।

নির্দলীয় বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সামনে রেখে সন্ত্রাস, নাশকতার সুযোগ নিতে পারে তৃতীয় পক্ষ। সন্ত্রাসী, জঙ্গি, ওয়ারেন্টের আসামি ও অপরাধ জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গতিবিধির ওপর নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের অপরাধীদের তথ্য আমাদের কাছে আছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ভোটের সময় অপরাধীসহ কোনো বহিরাগতরা ঢাকায় থাকতে পারবে না। আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে। অপরাধী যেই হোক এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।