ঢাকা ০১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের নিজের দেশের মানুষের মানবাধিকার আগে রক্ষা করা উচিত

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩
  • / 15

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারা বিশ্বে তো বহু জায়গায় বহু মানুষ খুন হচ্ছে। আমেরিকায় তো স্কুলে গিয়ে প্রতিদিন গুলি করে শিশুদের হত্যা করছে, শপিং মলে হত্যা হচ্ছে, রাস্তায় হত্যা হচ্ছে, এমনকি আমাদের বাঙালি মেয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে তাকে ছিনতাই করতে গিয়ে তাকে হত্যা করেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে মসজিদে নামাজ পড়ে ফিরে আসার পথে তাকে হত্যা করেছে। প্রতিদিন তো তাদের এক একটা স্টেটে দেখা যাচ্ছে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। ঘরের মধ্যে গিয়ে পরিবারসহ হত্যা করে আসছে। তাদের নিজের দেশের মানুষের মানবাধিকার আগে রক্ষা করা উচিত। তারা নিজের দেশের মানুষের বাঁচাবে কি করে সেই চিন্তা আগে করুক, সেটাই তাদের করা উচিত, যার যার দেশের।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে অত্যাচার ও নির্যাতনের চিত্র এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, অগ্নি সন্ত্রাসসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশে মানবাধিকারের খোঁজে আসে অনেকে। আমার প্রশ্ন, ২০০১ এর নির্বাচনে যখন এইভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছিল ও শিশুরা রেহাই পাচ্ছিল না, তখন সেই মানবাধিকার ফেরিওয়ালারা কোথায় ছিল? সেই ফেরিওয়ালারা তখন কোথায় ছিল, তারা কেন চুপ ছিল? তাদের মুখে কোনো কথা ছিল না কেন? সেটা দেশী-বিদেশি, আমি সবার বেলায়ই বলব।

তিনি আরও বলেন, আর অনেকেই এসে আমাদের ছবক দেয়, মানবাধিকার শেখায়। মানবাধিকার বঞ্চিত তো আমরা, ১৫ আগস্ট আমাদের জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের বিচার চাওয়ার অধিকার নাই, তাদের ইনডেমিনিটি দেয়া হয়েছে। অপারেশন ক্লিনহাটে যাদের হত্যা করা হয়েছে, সেই তারা বিচার চাইতে পারবে না। সেই অপারেশন ক্লিনহার্টেও ইনডেমিনিটি দেয়া হয়েছে, যারা খুনিদের ইনডেমিনিটি দিয়ে রক্ষা করে আর তাদের কথা শুনে অনেক আন্তর্জাতিক সরকার, অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা, আমাদের দেশের কিছু সংস্থা তারা মানবাধিকারের কথা বলে। আমরাই তো মানবাধিকারে বঞ্চিত ছিলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, হত্যার বিচার করতে ৩৫ বছর লেগেছে, তাও নিজেরা ক্ষমতায় এসে ইনডেমিনিটি বাতিল করে হত্যার বিচার করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি, বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আর সেখানে তারা আজকের বাংলাদেশে মানবাধিকার নাই বলে। তারা ২০০১ দেখে নাই, তারা ১৫ আগস্ট দেখে নাই। ১৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত কি চলেছে। সেটা তারা দেখেনি, তখন তাদের চোখেও পড়েনি, কানেও শোনেনি কি কারণে আমার কাছে বোধগম্য না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে যখন অত্যাচার, নির্যাতিত হচ্ছিল, গণহত্যার শিকার হচ্ছিল, আমরা তাদেরকে আশ্রয় দেই, প্রথম যখন আশ্রয় দেই তখন কে ছিল? আমরা শুধু আশ্রয় না, প্রথম কয়েক মাস তো আমরাই খাওয়াই। পরবর্তীতে অনেক দেশ অনেক সহযোগিতা করেছে। কিন্তু যখন তারা আমাদের দেশে আসে তখন তো কোনো সাহায্যই আমরা পাইনি। আমরা মানবিক কারণে যখন এতোগুলি লোকের দায়িত্ব নিতে পারি এর থেকে মানবাধিকার সংরক্ষণ আর কি হতে পারে সেটাই আমার প্রশ্ন। অন্য দেশের নির্যাতিত মানুষকে আশ্রয় দেয়া আওয়ামী লীগ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে কেন? কিভাবে করবে, এ কথা বলে কিভাবে।

তিনি আরও বলেন, আজ ইউক্রেনে যুদ্ধে, এই যুদ্ধটা বাধিয়ে দিয়ে আজকে সেখানে হাজার হাজার নারী, পুরুষ তারা রিফিউজি, তারা কষ্ট পাচ্ছে। সিরিয়াতে কিভাবে গুলাগুলি হচ্ছে, এমনকি এখন প্যালেস্টাইনে, ইসরাইল সেদিনও একের পর এক বোমা হামলা করছে। কত মানুষ হত্যা করছে সেটা নিয়ে কারও কথা নাই কেন? সেখানে কি মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে না?

নিউজ লাইট ৭১

 

facebook sharing button
twitter sharing button
Tag :

শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের নিজের দেশের মানুষের মানবাধিকার আগে রক্ষা করা উচিত

আপডেট টাইম : ১১:১২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারা বিশ্বে তো বহু জায়গায় বহু মানুষ খুন হচ্ছে। আমেরিকায় তো স্কুলে গিয়ে প্রতিদিন গুলি করে শিশুদের হত্যা করছে, শপিং মলে হত্যা হচ্ছে, রাস্তায় হত্যা হচ্ছে, এমনকি আমাদের বাঙালি মেয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে তাকে ছিনতাই করতে গিয়ে তাকে হত্যা করেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে মসজিদে নামাজ পড়ে ফিরে আসার পথে তাকে হত্যা করেছে। প্রতিদিন তো তাদের এক একটা স্টেটে দেখা যাচ্ছে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। ঘরের মধ্যে গিয়ে পরিবারসহ হত্যা করে আসছে। তাদের নিজের দেশের মানুষের মানবাধিকার আগে রক্ষা করা উচিত। তারা নিজের দেশের মানুষের বাঁচাবে কি করে সেই চিন্তা আগে করুক, সেটাই তাদের করা উচিত, যার যার দেশের।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে অত্যাচার ও নির্যাতনের চিত্র এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, অগ্নি সন্ত্রাসসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশে মানবাধিকারের খোঁজে আসে অনেকে। আমার প্রশ্ন, ২০০১ এর নির্বাচনে যখন এইভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছিল ও শিশুরা রেহাই পাচ্ছিল না, তখন সেই মানবাধিকার ফেরিওয়ালারা কোথায় ছিল? সেই ফেরিওয়ালারা তখন কোথায় ছিল, তারা কেন চুপ ছিল? তাদের মুখে কোনো কথা ছিল না কেন? সেটা দেশী-বিদেশি, আমি সবার বেলায়ই বলব।

তিনি আরও বলেন, আর অনেকেই এসে আমাদের ছবক দেয়, মানবাধিকার শেখায়। মানবাধিকার বঞ্চিত তো আমরা, ১৫ আগস্ট আমাদের জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের বিচার চাওয়ার অধিকার নাই, তাদের ইনডেমিনিটি দেয়া হয়েছে। অপারেশন ক্লিনহাটে যাদের হত্যা করা হয়েছে, সেই তারা বিচার চাইতে পারবে না। সেই অপারেশন ক্লিনহার্টেও ইনডেমিনিটি দেয়া হয়েছে, যারা খুনিদের ইনডেমিনিটি দিয়ে রক্ষা করে আর তাদের কথা শুনে অনেক আন্তর্জাতিক সরকার, অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা, আমাদের দেশের কিছু সংস্থা তারা মানবাধিকারের কথা বলে। আমরাই তো মানবাধিকারে বঞ্চিত ছিলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, হত্যার বিচার করতে ৩৫ বছর লেগেছে, তাও নিজেরা ক্ষমতায় এসে ইনডেমিনিটি বাতিল করে হত্যার বিচার করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি, বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আর সেখানে তারা আজকের বাংলাদেশে মানবাধিকার নাই বলে। তারা ২০০১ দেখে নাই, তারা ১৫ আগস্ট দেখে নাই। ১৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত কি চলেছে। সেটা তারা দেখেনি, তখন তাদের চোখেও পড়েনি, কানেও শোনেনি কি কারণে আমার কাছে বোধগম্য না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে যখন অত্যাচার, নির্যাতিত হচ্ছিল, গণহত্যার শিকার হচ্ছিল, আমরা তাদেরকে আশ্রয় দেই, প্রথম যখন আশ্রয় দেই তখন কে ছিল? আমরা শুধু আশ্রয় না, প্রথম কয়েক মাস তো আমরাই খাওয়াই। পরবর্তীতে অনেক দেশ অনেক সহযোগিতা করেছে। কিন্তু যখন তারা আমাদের দেশে আসে তখন তো কোনো সাহায্যই আমরা পাইনি। আমরা মানবিক কারণে যখন এতোগুলি লোকের দায়িত্ব নিতে পারি এর থেকে মানবাধিকার সংরক্ষণ আর কি হতে পারে সেটাই আমার প্রশ্ন। অন্য দেশের নির্যাতিত মানুষকে আশ্রয় দেয়া আওয়ামী লীগ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে কেন? কিভাবে করবে, এ কথা বলে কিভাবে।

তিনি আরও বলেন, আজ ইউক্রেনে যুদ্ধে, এই যুদ্ধটা বাধিয়ে দিয়ে আজকে সেখানে হাজার হাজার নারী, পুরুষ তারা রিফিউজি, তারা কষ্ট পাচ্ছে। সিরিয়াতে কিভাবে গুলাগুলি হচ্ছে, এমনকি এখন প্যালেস্টাইনে, ইসরাইল সেদিনও একের পর এক বোমা হামলা করছে। কত মানুষ হত্যা করছে সেটা নিয়ে কারও কথা নাই কেন? সেখানে কি মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে না?

নিউজ লাইট ৭১

 

facebook sharing button
twitter sharing button