ঢাকা ০২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখনো জমেনি আমের বাজার

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৫:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
  • / 31

১৩ মে থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুসারে জাত ভেদে আম নামানো শুরু হয়। পরের দিন থেকেই রাজশাহীর বাজারে দেখা যায় গুঁটি জাতের আম। তবে আম নামানোর নির্দেশ প্রদান করলেও এখনো জমে ওঠেনি রাজশাহীর বৃহত্তম আমের বাজার বানেশ্বর হাট।

গতকাল সোমবার রাজশাহীর বৃহত্তম এ আমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাতেগোনা কয়েকজন আম বিক্রেতা ডালা ও ক্যারেটে আম সাজিয়ে বসেছেন। আমের হাটে তুলনামূলক আম না ওঠায় বাজারে যেমন বিক্রেতার সংখ্যা কম, তেমনি সাধারণ ক্রেতার উপস্থিতিও কম। তবে বানেশ্বর হাটে ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগী আম ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

বানেশ্বর বাজার পর্যবেক্ষণে গিয়ে দেখা গেছে, বেলা ১১টার পর থেকে হাতেগোনা সাত থেকে আটজন আম চাষি ভ্যানভর্তি আম নিয়ে বানেশ্বর বাজারে আসেন বিক্রির জন্য। সেখানে আগে থেকেই আড়তদারেরা চেয়ে আছেন তাদের পানে। দু-একটি ভ্যান এলেই তারা জোট বেঁধে ছুটছেন চাষিদের কাছে। করছেন দর কষাকষি।

বানেশ্বর বাজারে কাঁচামিঠা জাতের গুঁটি আমের প্রাধান্যই বেশি দেখা গেছে। বড় আকারের কিছু গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ। ছোট আকারের আমগুলোর দাম মিলছে এক হাজার থেকে বারোশ টাকায়। আচার বানানোর আম বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা মণে। তবে বানেশ্বর বাজারে পরিপক্ব আম উঠতে এখনো সপ্তাহ-খানেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহ খানেক পর বানেশ্বর বাজার মোটামুটি জমজমাট হবে বলে দাবি তাদের।

এদিকে বানেশ্বর বাজারের স্থানীয় আম ব্যবসায়ী ও আম চাষিদের ভাষ্য, আমের মুকুল ও গুঁটি আসার পর প্রচণ্ড দাবদাহে গাছ থেকে মুকুল ও গুঁটি আম শুকিয়ে ঝরে পড়েছে। যা বাকি ছিল তাও বিগত কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টির কারণে শেষ। এ সমস্ত কারণে রাজশাহীর আম বাগানগুলোতে প্রায় চার ভাগের এক ভাগ আম আছে বলে দাবি করছেন চাষিরা।

বানেশ্বর বাজারের কয়েকজন আমচাষি জানান, এবার গাছ থেকে অথবা বাগানেই আম বিক্রি হয়ে যাবে। বানেশ্বর বাজারে তেমন আম নাও আসার সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ দিকে ছোট ও মাঝারি সাইজের কিছু গাছের ল্যাংরা, বার-৪, হিমসাগর এবং আম্রপালি জাতের আম বাজারে পাওয়া যেতে পারে। তবে আমের উৎপাদন কম হওয়ায় এবার দাম বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

আম চাষি ও ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, দুই লাখ টাকায় ৬০টি গাছ কিনেছেন। গতবার ওই গাছগুলো থেকে আম পেয়েছিলেন প্রায় ১৫০ মণ। এবার শতকরায় ৩০ ভাগ আম ৬০টি গাছে রয়েছে বলে জানান তিনি।

পুঠিয়ার মাহেন্দ্রা এলাকার বাসিন্দা লিয়াকত আলী কাঁচামিঠা আম এনেছেন ছয় মণ। বিক্রির জন্য স্থানীয় ফড়িয়া বা আড়তদারদের দাম বলেছেন ২২০০ টাকা। তবে আড়তদারেরা দাম বলছেন কম। তাই বিক্রির অপেক্ষায় ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বানেশ্বর বাজারে।

আম চাষি আব্দুল্লাহ আলী জানান, এবার গাছে আম কম হওয়ায় বাগানিরা দেরি করে আম নামাচ্ছে। আর এ কারণে বানেশ্বরে হাট জমতে আরও দেরি হবে। এখনো এক সপ্তাহ সময় লাগবে হাট বসতে।

বানেশ্বর হাট কমিটির সভাপতি হাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজারে এখনো তেমনভাবে আম আসছে না। যা আছে সব গুঁটি জাতের আম আর ঝড়-বৃষ্টিতে ঝরে পড়া আম। আরও সপ্তাহ দেড়েক পর হাট জমবে, তখন সেটি স্থানান্তর করে কলেজ মাঠে নেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

এখনো জমেনি আমের বাজার

আপডেট টাইম : ০৫:১৫:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২

১৩ মে থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুসারে জাত ভেদে আম নামানো শুরু হয়। পরের দিন থেকেই রাজশাহীর বাজারে দেখা যায় গুঁটি জাতের আম। তবে আম নামানোর নির্দেশ প্রদান করলেও এখনো জমে ওঠেনি রাজশাহীর বৃহত্তম আমের বাজার বানেশ্বর হাট।

গতকাল সোমবার রাজশাহীর বৃহত্তম এ আমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাতেগোনা কয়েকজন আম বিক্রেতা ডালা ও ক্যারেটে আম সাজিয়ে বসেছেন। আমের হাটে তুলনামূলক আম না ওঠায় বাজারে যেমন বিক্রেতার সংখ্যা কম, তেমনি সাধারণ ক্রেতার উপস্থিতিও কম। তবে বানেশ্বর হাটে ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগী আম ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

বানেশ্বর বাজার পর্যবেক্ষণে গিয়ে দেখা গেছে, বেলা ১১টার পর থেকে হাতেগোনা সাত থেকে আটজন আম চাষি ভ্যানভর্তি আম নিয়ে বানেশ্বর বাজারে আসেন বিক্রির জন্য। সেখানে আগে থেকেই আড়তদারেরা চেয়ে আছেন তাদের পানে। দু-একটি ভ্যান এলেই তারা জোট বেঁধে ছুটছেন চাষিদের কাছে। করছেন দর কষাকষি।

বানেশ্বর বাজারে কাঁচামিঠা জাতের গুঁটি আমের প্রাধান্যই বেশি দেখা গেছে। বড় আকারের কিছু গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ। ছোট আকারের আমগুলোর দাম মিলছে এক হাজার থেকে বারোশ টাকায়। আচার বানানোর আম বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা মণে। তবে বানেশ্বর বাজারে পরিপক্ব আম উঠতে এখনো সপ্তাহ-খানেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহ খানেক পর বানেশ্বর বাজার মোটামুটি জমজমাট হবে বলে দাবি তাদের।

এদিকে বানেশ্বর বাজারের স্থানীয় আম ব্যবসায়ী ও আম চাষিদের ভাষ্য, আমের মুকুল ও গুঁটি আসার পর প্রচণ্ড দাবদাহে গাছ থেকে মুকুল ও গুঁটি আম শুকিয়ে ঝরে পড়েছে। যা বাকি ছিল তাও বিগত কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টির কারণে শেষ। এ সমস্ত কারণে রাজশাহীর আম বাগানগুলোতে প্রায় চার ভাগের এক ভাগ আম আছে বলে দাবি করছেন চাষিরা।

বানেশ্বর বাজারের কয়েকজন আমচাষি জানান, এবার গাছ থেকে অথবা বাগানেই আম বিক্রি হয়ে যাবে। বানেশ্বর বাজারে তেমন আম নাও আসার সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ দিকে ছোট ও মাঝারি সাইজের কিছু গাছের ল্যাংরা, বার-৪, হিমসাগর এবং আম্রপালি জাতের আম বাজারে পাওয়া যেতে পারে। তবে আমের উৎপাদন কম হওয়ায় এবার দাম বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

আম চাষি ও ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, দুই লাখ টাকায় ৬০টি গাছ কিনেছেন। গতবার ওই গাছগুলো থেকে আম পেয়েছিলেন প্রায় ১৫০ মণ। এবার শতকরায় ৩০ ভাগ আম ৬০টি গাছে রয়েছে বলে জানান তিনি।

পুঠিয়ার মাহেন্দ্রা এলাকার বাসিন্দা লিয়াকত আলী কাঁচামিঠা আম এনেছেন ছয় মণ। বিক্রির জন্য স্থানীয় ফড়িয়া বা আড়তদারদের দাম বলেছেন ২২০০ টাকা। তবে আড়তদারেরা দাম বলছেন কম। তাই বিক্রির অপেক্ষায় ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বানেশ্বর বাজারে।

আম চাষি আব্দুল্লাহ আলী জানান, এবার গাছে আম কম হওয়ায় বাগানিরা দেরি করে আম নামাচ্ছে। আর এ কারণে বানেশ্বরে হাট জমতে আরও দেরি হবে। এখনো এক সপ্তাহ সময় লাগবে হাট বসতে।

বানেশ্বর হাট কমিটির সভাপতি হাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজারে এখনো তেমনভাবে আম আসছে না। যা আছে সব গুঁটি জাতের আম আর ঝড়-বৃষ্টিতে ঝরে পড়া আম। আরও সপ্তাহ দেড়েক পর হাট জমবে, তখন সেটি স্থানান্তর করে কলেজ মাঠে নেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।

নিউজ লাইট ৭১