ঢাকা ০২:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ.লীগের কঠোর নজরদারিতে মন্ত্রী-এমপিরা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৮:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১
  • / 33

স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যে সকল মন্ত্রী-এমপিরা মদদ দিচ্ছেন তাদেরকে কঠোরভাবে নজরদারিতে রেখেছে আওয়ামী লীগ। দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ও স্থানীয় সরকারের মনোনয়ন বোর্ড সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্বাচনে দল থেকে যাকে নৌকা প্রার্থী করা হয়েছে। এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হবে এবং ওই প্রার্থীকে যারা মদদদাতা দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মদদদাতারা যদি কোনো মন্ত্রী-এমপি হয়ে থাকেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড। দলের কার্যনির্বাহী সংসদ ও মনোনয়ন বোর্ড সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও দলের একাধিক নেতা এ তথ্য জানান।

জানা যায়, গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অর্ধশতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। দলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নৌকার বিদ্রোহীদের হালচিত্র তুলে ধরেন বৈঠকে। কে কাকে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করাচ্ছেন তাও তুলে ধরা হয়। বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশ নেতার বক্তব্যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে নৌকার বিরোধীকারীদের শাস্তির কথা ফুটে উঠে।

নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন এবং তাদেরকে যারা পেছনে থেকে মদদ দিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার জন্য নেতাদের নির্দেশ দেন দলের সভাপতি।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দলের খেয়ে-পরে যারা আওয়ামী লীগের ক্ষতি করছে, সেই নেতাদের আমি বাদ দিয়ে দেব। দলের নীতি-আদর্শে বিশ্বাসী ও ত্যাগীদের দিয়ে নতুন করে দল সাজাব।’এদিকে গতকাল শনিবার সকালে চতুর্থ ধাপের ৮৪০টি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান এবং তিনটি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে এ বৈঠক ডাকা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে পাবনার আটঘরিয়া, নরসিংদীর রায়পুরা ও কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার মেয়র পদেও দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়া রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ৩৫৩টি ইউপিতে দলীয় প্রার্থী ঠিক করা হয়।

বৈঠকে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওবায়দুল কাদের, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্যাহ, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, রশিদুল আলম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।

সকাল সাড়ে ১০টায় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শুরু হয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিসহ রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলে। এ সময় দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে স্বচ্ছ, ত্যাগী ও অবিতর্কিত ইমেজের প্রার্থীদের বেছে নেয়া হয়।এ ক্ষেত্রে দলীয় ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার জরিপে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে বলে বেশ কজন নেতা জানান।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূলের বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-এমপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নজরে রাখছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের মনোনয়ন বোর্ড সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।তিনি বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী এবং তাদের উস্কানি ও মদদদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ দল থেকে যাকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, তার বিরোধিতা না করার বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের আবারো সতর্ক করে দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকাকে জয়ী করার বিকল্প নেই। তাই নৌকার প্রার্থীদের জয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে কেন্দ্রীয় নেতা ও তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈঠকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের মদদদাতাদেরও সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদ্রোহীদের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত ছিল সেটাতো থাকবেই, কিন্তু বিদ্রোহীদের যারা মদদ দিয়েছে বা দেবে তারা কেন্দ্রীয় নেতা কিংবা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা হলেও শাস্তি পেতে হবে। তাদের জন্য শাস্তি রয়েছে। এমনকি জনপ্রতিনিধি হলে মন্ত্রী হোক, এমপি হোক, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

আ.লীগের কঠোর নজরদারিতে মন্ত্রী-এমপিরা

আপডেট টাইম : ১২:৩৮:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১

স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যে সকল মন্ত্রী-এমপিরা মদদ দিচ্ছেন তাদেরকে কঠোরভাবে নজরদারিতে রেখেছে আওয়ামী লীগ। দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ও স্থানীয় সরকারের মনোনয়ন বোর্ড সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্বাচনে দল থেকে যাকে নৌকা প্রার্থী করা হয়েছে। এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হবে এবং ওই প্রার্থীকে যারা মদদদাতা দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মদদদাতারা যদি কোনো মন্ত্রী-এমপি হয়ে থাকেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড। দলের কার্যনির্বাহী সংসদ ও মনোনয়ন বোর্ড সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও দলের একাধিক নেতা এ তথ্য জানান।

জানা যায়, গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অর্ধশতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। দলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নৌকার বিদ্রোহীদের হালচিত্র তুলে ধরেন বৈঠকে। কে কাকে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করাচ্ছেন তাও তুলে ধরা হয়। বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশ নেতার বক্তব্যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে নৌকার বিরোধীকারীদের শাস্তির কথা ফুটে উঠে।

নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন এবং তাদেরকে যারা পেছনে থেকে মদদ দিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার জন্য নেতাদের নির্দেশ দেন দলের সভাপতি।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দলের খেয়ে-পরে যারা আওয়ামী লীগের ক্ষতি করছে, সেই নেতাদের আমি বাদ দিয়ে দেব। দলের নীতি-আদর্শে বিশ্বাসী ও ত্যাগীদের দিয়ে নতুন করে দল সাজাব।’এদিকে গতকাল শনিবার সকালে চতুর্থ ধাপের ৮৪০টি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান এবং তিনটি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে এ বৈঠক ডাকা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে পাবনার আটঘরিয়া, নরসিংদীর রায়পুরা ও কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার মেয়র পদেও দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এছাড়া রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ৩৫৩টি ইউপিতে দলীয় প্রার্থী ঠিক করা হয়।

বৈঠকে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওবায়দুল কাদের, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্যাহ, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, রশিদুল আলম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।

সকাল সাড়ে ১০টায় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শুরু হয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিসহ রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলে। এ সময় দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে স্বচ্ছ, ত্যাগী ও অবিতর্কিত ইমেজের প্রার্থীদের বেছে নেয়া হয়।এ ক্ষেত্রে দলীয় ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার জরিপে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে বলে বেশ কজন নেতা জানান।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূলের বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-এমপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নজরে রাখছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের মনোনয়ন বোর্ড সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।তিনি বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী এবং তাদের উস্কানি ও মদদদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ দল থেকে যাকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, তার বিরোধিতা না করার বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের আবারো সতর্ক করে দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকাকে জয়ী করার বিকল্প নেই। তাই নৌকার প্রার্থীদের জয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে কেন্দ্রীয় নেতা ও তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈঠকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের মদদদাতাদেরও সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদ্রোহীদের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত ছিল সেটাতো থাকবেই, কিন্তু বিদ্রোহীদের যারা মদদ দিয়েছে বা দেবে তারা কেন্দ্রীয় নেতা কিংবা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা হলেও শাস্তি পেতে হবে। তাদের জন্য শাস্তি রয়েছে। এমনকি জনপ্রতিনিধি হলে মন্ত্রী হোক, এমপি হোক, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।

নিউজ লাইট ৭১