ঢাকা ০২:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জানুয়ারির শেষভাগে ঢাকার দুই সিটির ভোট

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:১৩:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 130

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পরপরই এ তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আর ভোট হবে জানুয়ারির একেবারেই শেষভাগে। এক্ষেত্রে ৩০ জানুয়ারিকেই ভোটগ্রহণের দিনক্ষণ হিসেবে ভাবা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে ভোটগ্রহণের সময় নির্ধারণ করে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাজ গুছিয়ে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় জানুয়ারিতে এই দুই সিটির ভোটের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘আগামী ১৫ নভেম্বর ঢাকা উত্তর ও ১৮ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপযোগী হবে। এরপর যেকোনও সময় নির্বাচনের তফসিল হবে। জানুয়ারির একই দিনে দুই সিটির ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। ডিসেম্বরে জেএসসি, পিইসি ছাড়াও বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা এবং ফেব্রুয়ারি ও পরবর্তী সময়ে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে মধ্য জানুয়ারির পর ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ভোট কেন্দ্র ও ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়। তবে, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় ভোটগ্রহণে সরকারের পক্ষ থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় ইসির অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন আসে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন, দলের প্রধান শাখা হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের কারণে নির্বাচন কিছুটা পেছানোর পরামর্শ আসে সরকারের পক্ষ থেকে। পরে সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিশন ৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবশ্য কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশিত হলে তাদের ভোট দেওয়ার অধিকারের প্রশ্ন চলে আসে। সেক্ষেত্রে ভোটের সময় এক-দুইদিন এগিয়ে ২৮ বা ২৯ জানুয়ারিও হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কমিশন প্রাথমিকভাবে যে সময়টি ভোটের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন তার থেকে কিছুটা হেরফের হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে, জানুয়ারি মাসেই ভোট হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নতুন কোনও তথ্য নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার দেশের বাইরে, ফলে খবর থাকার সম্ভাবনাও কম। তবে, সচিবালয়ে কোনও তথ্য আছে কিনা, জানা নেই। কারণ, সচিবালয়ে অনেক কিছু হয়, যার সব আমরা জানতে পারি না।’

ঢাকা সিটির ভোটের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘ভোট অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। উপযোগী হলেই তারা ভোটের আয়োজন করতে পারে। শুনেছি তারা জানুয়ারিতে ভোট করতে চান। সেটাই হয়তো হবে। আর জানুয়ারিতে ভোট করতে হলে ডিসেম্বরে তফসিল হবে।’

সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল তিন সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০১৫ সালের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ওই বছরের ১৭ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৬ আগস্ট প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসাবে ঢাকার উত্তর সিটিতে ১৩ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৬ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৫ আগস্ট মেয়াদ শেষ হবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই হিসেবে ঢাকার দুই সিটি ভোটের কাউন্টডাউন ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

এদিকে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের প্রস্তুতির শেষ সময়ে এসে ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে কমিশন। এসব ওয়ার্ডের সব কাউন্সিলররা একসঙ্গে ভোট না করতে কমিশনের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, দুই সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডের সংরক্ষিতসহ মোট ৪৮ জন কাউন্সিলর সময় চেয়ে কমিশনের কছে আবেদন করেছেন। তাদের দাবি, নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ এলাকার উন্নয়নের জন্য এক বছরও সময় পাননি তারা। অথচ একজন কাউন্সিলর ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। সে ক্ষেত্রে দুই সিটির এসব সম্প্রসারিত ওয়ার্ডে এখন ভোট না দিয়ে তাদের পর্যাপ্ত সময় কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। অবশ্যই কমিশন সচিবালয় মনে করছে, বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ভোটগ্রহণে কোনও বাধার সৃষ্টি হবে না। কারণ, কোনও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মেয়াদের ওপর কমিশনের মেয়াদ নির্ভর করে না। পরিষদের মেয়াদকেই গণনায় ধরা হয়।

Tag :

শেয়ার করুন

জানুয়ারির শেষভাগে ঢাকার দুই সিটির ভোট

আপডেট টাইম : ১০:১৩:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পরপরই এ তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আর ভোট হবে জানুয়ারির একেবারেই শেষভাগে। এক্ষেত্রে ৩০ জানুয়ারিকেই ভোটগ্রহণের দিনক্ষণ হিসেবে ভাবা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে ভোটগ্রহণের সময় নির্ধারণ করে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাজ গুছিয়ে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় জানুয়ারিতে এই দুই সিটির ভোটের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘আগামী ১৫ নভেম্বর ঢাকা উত্তর ও ১৮ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপযোগী হবে। এরপর যেকোনও সময় নির্বাচনের তফসিল হবে। জানুয়ারির একই দিনে দুই সিটির ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। ডিসেম্বরে জেএসসি, পিইসি ছাড়াও বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা এবং ফেব্রুয়ারি ও পরবর্তী সময়ে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে মধ্য জানুয়ারির পর ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ভোট কেন্দ্র ও ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়। তবে, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় ভোটগ্রহণে সরকারের পক্ষ থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় ইসির অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন আসে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন, দলের প্রধান শাখা হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের কারণে নির্বাচন কিছুটা পেছানোর পরামর্শ আসে সরকারের পক্ষ থেকে। পরে সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিশন ৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবশ্য কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশিত হলে তাদের ভোট দেওয়ার অধিকারের প্রশ্ন চলে আসে। সেক্ষেত্রে ভোটের সময় এক-দুইদিন এগিয়ে ২৮ বা ২৯ জানুয়ারিও হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কমিশন প্রাথমিকভাবে যে সময়টি ভোটের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন তার থেকে কিছুটা হেরফের হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে, জানুয়ারি মাসেই ভোট হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নতুন কোনও তথ্য নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার দেশের বাইরে, ফলে খবর থাকার সম্ভাবনাও কম। তবে, সচিবালয়ে কোনও তথ্য আছে কিনা, জানা নেই। কারণ, সচিবালয়ে অনেক কিছু হয়, যার সব আমরা জানতে পারি না।’

ঢাকা সিটির ভোটের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘ভোট অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। উপযোগী হলেই তারা ভোটের আয়োজন করতে পারে। শুনেছি তারা জানুয়ারিতে ভোট করতে চান। সেটাই হয়তো হবে। আর জানুয়ারিতে ভোট করতে হলে ডিসেম্বরে তফসিল হবে।’

সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল তিন সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০১৫ সালের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ওই বছরের ১৭ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৬ আগস্ট প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসাবে ঢাকার উত্তর সিটিতে ১৩ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৬ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৫ আগস্ট মেয়াদ শেষ হবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই হিসেবে ঢাকার দুই সিটি ভোটের কাউন্টডাউন ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

এদিকে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের প্রস্তুতির শেষ সময়ে এসে ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে কমিশন। এসব ওয়ার্ডের সব কাউন্সিলররা একসঙ্গে ভোট না করতে কমিশনের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, দুই সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডের সংরক্ষিতসহ মোট ৪৮ জন কাউন্সিলর সময় চেয়ে কমিশনের কছে আবেদন করেছেন। তাদের দাবি, নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ এলাকার উন্নয়নের জন্য এক বছরও সময় পাননি তারা। অথচ একজন কাউন্সিলর ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। সে ক্ষেত্রে দুই সিটির এসব সম্প্রসারিত ওয়ার্ডে এখন ভোট না দিয়ে তাদের পর্যাপ্ত সময় কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। অবশ্যই কমিশন সচিবালয় মনে করছে, বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ভোটগ্রহণে কোনও বাধার সৃষ্টি হবে না। কারণ, কোনও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মেয়াদের ওপর কমিশনের মেয়াদ নির্ভর করে না। পরিষদের মেয়াদকেই গণনায় ধরা হয়।