স্বাধীনতাবিরোধী প্রেতাত্বাদের এই বাংলাদেশে উত্থান ঘটতে দেওয়া হবে না
- আপডেট টাইম : ০৩:৫৩:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মার্চ ২০২১
- / 91
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম স্বাধীনতাবিরোধী প্রেতাত্বাদের এই বাংলাদেশে উত্থান ঘটতে দেওয়া হবে না জানিয়ে বলেন, ৭১ এর রাজাকাররা কেউ হেফাজত নামে, কেউ নেজামে ইসলাম নামে, কেউ মুসলীম লীগ নামে নতুন করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। কিন্তু ইসলাম ধর্ম সহিংসতায় বিশ্বাস করে না, সন্ত্রাসকে পছন্দ করে না, জঙ্গীবাদে বিশ্বাস করে না। মহানবী রাসুলুল্লাহ (সা.) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। কারো উপর জুলুম না করতে বলেছেন, ফেৎনা-ফেসাদ সৃষ্টি না করার জন্য বলেছেন।
তিনি বলেছেন এগুলো যুদ্ধের চেয়ে বড় অপরাধ। কিন্তু ইসলামের নামধারী কিছু উচ্ছৃঙ্খল, সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশকে নতুন করে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে চাইছে।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর গেন্ডারিয়াস্থ মিল ব্যারাক নৌ জেটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ান্তি উপলক্ষে নৌ র্যালি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দেশ যখন শান্তিতে আছে, মানুষের যখন অভাব-অনটন নেই, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার সব সুযোগ যখন মিলছে, এটা একটা শ্রেণির লোকদের ভালো লাগছে না। এরা হলো মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি। ওরা মারা যায়নি। ওদের প্রেতাত্বারা বেঁচে আছে। ওদের সন্তানরা এদেশে এখনও বেঁচে আছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পছন্দ করে না, শান্তির বাংলাদেশ পছন্দ করে না, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ পছন্দ করে না, অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ পছন্দ করে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের যে অপ্রতিরোধ্য গতি এটা ওদের ভালো লাগছে না। এজন্য বেগম খালেদা জিয়া নিজ বাড়িতে থেকেও অকৃতজ্ঞের মতো মির্জা ফখরুল ও কয়েকজনকে দিয়ে দেশের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, এ সময়ে একজন মানুষও না খেয়ে নেই, বিবস্ত্র অবস্থায় নেই, টাকার অভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না এমন অবস্থায় নেই। বাংলাদেশে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষায় অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে ইলিশ অহরণে বাংলাদেশ পৃথিবীর সেরা অবস্থানে রয়েছে। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থান, স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থান এবং চাষের মাছ উৎপাদনে পঞ্চম অবস্থানে থেকে সারাবিশ্বে মাছ উৎপাদনে আমরা আমূল পরিবর্তন আনতে পেরেছি। এক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি চান ভাতে-মাছে বাঙালি সংস্কৃতির মাছ যেন বিলুপ্ত হয়ে না যায়। মাছের সংকট যেন না হয়।
মাছের মাধ্যমে মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা যেন মেটানো যায়। মাছ রপ্তানি করে যেন আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি, মৎস্য চাষের মাধ্যমে যেন বেকারদের বেকারত্ব দূর করা যায়, তারা যেন উদ্যোক্তা হতে পারে। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। মৎস্য চাষ এখন গর্বের বিষয়। এটি এখন অর্থ-বিত্তের সুযোগ করে দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমালোচনা যেখানেই হবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মৎস্যজীবী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীদের এসময় আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান সাইদ বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের। সেজন্য তিনি আমৃত্যু আন্দোলন সংগ্রাম করে গেছেন। কিন্ত আজ সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। তাদের প্রধান টার্গেট বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা। এই সকল সাম্প্রদায়িক শক্তি বিষদাত ভেঙে দিতে হবে। এদের কোনো ভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। মৎস্যজীবী লীগের কার্যকরি সভাপতি সাইফুল আলম মানিক বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে সা¤প্রদায়িক অপশক্তি নানামূখি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। তাদের কোনো ভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করতে হবে। এজন্য মৎস্যজীবী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছে।
আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নস্কর বলেন, অগ্নিঝরা এই মার্চেই বঙ্গবন্ধুর জন্ম, এই মার্চেই বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ এবং এই মার্চেই মহান স্বাধীনতা সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই ৭১’র পরাজিত শক্তি, দেশদ্রোহী -ধর্মান্ধ – উগ্র মৌলবাদীরা দেশকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ও সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান সাইদের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নস্করের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের কার্য্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক, সহ সভাপতি আবুল বাসার, মুহাম্মদ আলম, মোহাম্মদ ইউনুস, ড. মমতাজ খানম, লিকু সিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ফিরোজ তালুকদার, প্রচার সম্পাদক কাজী শফিউল আলম সফিক, দফতর সম্পাদক এনামুল হক রাজু, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক শাহীন মজুমদার, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মাসুদ করিম মিঠু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান কমল, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন সিদ্দিকী, উপ-প্রচার সম্পাদক ইউসুফ আলী বাচ্চু, উপ দফতর সম্পাদক গোলাম সাব্বির, ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য সচিব কাজী মুহিদুল ইসলাম মহিম, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন, সদস্য সচিব আব্দুল জলিল প্রমূখ।
নিউজ লাইট ৭১