গাড়ি ব্যবসায় ধস!
- আপডেট টাইম : ০৭:০৩:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর ২০২০
- / 110
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর মহামারীর কারণে এ বছর ৪০ শতাংশ বিক্রি কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের অটোমোবাইল শিল্প গভীর অনিশ্চয়তায় মধ্যে পড়েছে। বর্তমান এই সংকটের মধ্যে গাড়ির জন্য ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর আগ্রহ কম থাকায় এই অনিশ্চয়তা আরো বেড়েছে।
বাংলাদেশে রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানিকারক ও ডিলারদের অ্যাসোসিয়েশন বারভিডার সভাপতি আবদুল হক জানান, গত বছর প্রতি মাসে এক হাজার ৫০০ গাড়ি বিক্রি হলেও তা বর্তমানে নেমে এসেছে ৯০০ ইউনিটে। এর অর্থ সাধারণ সময়ের তুলনায় আমাদের বিক্রি প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে।’ করোনার সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন এবং ব্যয়বহুল কোনো জিনিসে অর্থ ব্যয় করতে আগ্রহী হচ্ছেন না বলেও যোগ করেন তিনি।
বারভিডার সাধারণ সম্পাদক এবং এইচএনএস গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম জানান, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে গাড়ি বিক্রি বেড়েছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনার কারণে অক্টোবর থেকে হঠাৎ করেই আবার বিক্রি কমেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার বেশ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
বারভিডার আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩৬টি গাড়ি বিক্রি হয়। ২০১৯ সালে গড়ে প্রতিদিন বিক্রি হয়েছে ৬১টি গাড়ি। বারভিডার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৪০ শতাংশ বিক্রি কমে যাওয়া অটোমোবাইল আমদানিকারক এবং বিক্রেতাদের সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
বারভিডার সাবেক সভাপতি এবং নিপ্পন অটোস ট্রেডিংয়ের মালিক মান্নান চৌধুরী খসরু জানান, তিনি এই সেক্টরে দীর্ঘ চার দশক ধরে রয়েছেন। তবে, এত ক্ষতির মুখে আর কখনো পড়েননি। ২০১৯ সালে তার প্রতিষ্ঠান অন্তত ২০০ গাড়ি বিক্রি করলেও করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এ বছর বিক্রি ৫০টি গাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে করছেন তিনি। এর অর্থ, তার বিক্রি কমেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ।
হুন্দাই মোটরস বাংলাদেশের বিক্রয় বিভাগের উপপরিচালক ফারজানা খান জানান, কোভিড-১৯’র বিস্তার রোধে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির পরে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি কিছুটা বেড়েছিল। তবে সার্বিকভাবে তাদের ব্যবসা প্রায় ৫০ শতাংশ কমেছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে প্রতি মাসে প্রায় ৭০টি গাড়ি বিক্রি করলেও এ বছর তা নেমে এসেছে ৩৫ থেকে ৪০ এ।
ফারজানা খান বলেন, ‘আয় কমতে থাকায় মানুষ বড় কিছু কিনছেন না। তারা এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে খরচ করতে আগ্রহী নন। গাড়ির ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (এনবিএফআই) আগের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি সতর্ক। ব্যাংক ও এনবিএফআই বেতনভুক্ত ব্যক্তিদের ছাড়া অন্যদের গাড়ির ঋণ অনুমোদন দিতে আগ্রহী নয়।’
পূবালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও স্বীকার করেছেন যে গাড়ির ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কিছুটা সতর্ক রয়েছে। আইপিডিসি ফাইন্যান্সের হেড অব অটো অ্যান্ড পারসোনাল লোন নুরুল ইসলাম জানান, তার প্রতিষ্ঠান ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে নমনীয় অবস্থানে এসেছে। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক এনবিএফআই থেকে গাড়ির ঋণ বিতরণ সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করেছে।
নিউজ লাইট ৭১