ঢাকা ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটের জন্য মরিয়া ২১ পদের ৪২ প্রার্থী

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অক্টোবর ২০২০
  • / 85

৭১: বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনের বাকি আর মাত্র একদিন। এখনো ভোটারদের দ্বারপ্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন ২১ পদের ৪২ প্রার্থী। গত একমাসে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সফর শেষে ঢাকার ক্লাবগুলোতে প্রার্থীরা পা ফেলছেন একাধিকবার। কী রাত, কী দিন, ঘুম হারাম হয়ে উঠেছে তাদের। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসতেই ক্ষণে ক্ষণে কেমন যেন আঁতকে উঠছেন প্রার্থীদের অনেকেই। বেড়ে গেছে হার্টবিট। আগামী ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন। এই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে ভোটারদের কদর এখন আকাশছোঁয়া। তাদের হাতের মুঠোয় অনেক উপঢৌকন! জামাই আদর তো চলছেই। শোনা যায়, একটি প্যানেল ভোটারদের ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা করেছে ভোটকেন্দ্রের উপরেই, প্যানফ্যাসিপিক সোনারগাঁ হোটেলে। গতকাল থেকেই তাদের সোনারগাঁও হোটেলে চলছে জামাই আদর।

ফুটবল অঙ্গনে গুঞ্জন, বাফুফে নির্বাচনে নাকি এবার নিরব অর্থ বিনিময় চলছে! বিশেষ করে বেশ কিছু শিল্পপতি বাফুফে নির্বাচনে জড়িয়ে পড়ায় শেয়ারবাজারের মতোই বেড়ে উঠেছে ভোটের মূল্য। একেকটি ভোটের মূল্য কয়েক লাখ! কেউ বলছেন পর্দার আড়ালে অনৈতিক এই ব্যয়ের হিসাবটা ছাড়িয়ে যেতে পারে বিশ-ত্রিশ লাখেরও উপরে! এ যদি হয় নির্বাচনী উপটোকনের হিসাব, তাহলে সব মিলে খরচটা দশ-বিশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়াটা বিচিত্র নয়। 

এর আগে বাফুফে নির্বাচনে জেলা ও বিভাগীয় ফোরাম নেতাদের ছিল একচেটিয়া আধিপত্য। নির্বাচন আসতেই দেখা গিয়েছিল অনেক নেতাদের নতুন মডেলের গাড়ি হাঁকাতে। তারাই ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতেন পরবর্তী চার বছরের ফুটবল শাসক।

অবশ্য এখন আর ফোরাম নেতাদের সেই আগের দিন নেই। দিন বদলে গেছে। বাফুফে নির্বাচনে এখন নতুন মেরুকরণ। সাবেক এক সংগঠক জানান, যেহেতু ফিফা নিয়ন্ত্রিত বাফুফে নিবাচন, তাই সরকার হয়ত সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর সুযোগ রয়েছে- জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের ভোটগুলোর ওপর। এ ছাড়া প্রার্থীরা কাউন্সিলরদের খুশি রাখতে পর্দার আড়ালে প্রয়োজনীয় উপটোকনের ব্যবস্থার আশঙ্কা থাকছে।

মূলত বাফুফে নির্বাচনে কাউন্সিলরদের কদর বেড়েছে সভাপতি পদে কাজী সালাউদ্দিনের প্রতিপক্ষ হিসেবে সাবেক ফুটবলার সফিকুল ইসলাম মানিক ও বাদল রায় এবং জেলা ও বিভাগীয় সংস্থার সমম্বয় প্যানেল দাঁড়িয়ে পড়ায়। যদিও বাদল রায় মনোনয়নপত্র ক্রয় করে পরবর্তীতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাফুফে বরাবর আবেদন করেছে। কিন্তু আবেদনটি সময়মতো না হওয়ায় তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। ফলে সভাপতি পদের প্রার্থী হিসেবে তার নামও থাকছে ব্যালট পেপারে।

অন্যদিকে মাঠের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ভোট যুদ্ধে থাকার অঙ্গীকার করেছেন সফিকুল ইসলাম মানিক। কিন্তু তার ভয়টা পর্দার আড়ালে অর্থের অবৈধ বিনিময় নিয়ে। সাবেক ফুটবলারদের অনেকেই মনে করছেন অবৈধ অর্থ বিনিময়টাই বদলে দিতে পারে ভোটের চিত্র! তাতে যে নীরবে কাঁদবে পরিবর্তনের আওয়াজ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই অনেকেই মনে করছেন শত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ফের বাফুফের প্রধান আসনে দেখা যাবে কাজী সালাউদ্দিনকেই!

আর সিনিয়র সহসভাপতি পদটিতে দেখা যাবে সেই আবদুস সালাম মুর্শেদীকেই। লড়াইটা হতে পারে চার সহসভাপতি পদ নিয়ে। সে তালিকায় ফুটবল বিশেষজ্ঞরা এগিয়ে রাখছেন কাজী সালাউদ্দিন প্যানেলের তিনজন কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক (তমা গ্রুপ), মো. ইমরুল হাসান (বসুন্ধরা গ্রুফ) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তাবিদ আউয়ালকে।

চারজনই দেশের বিত্তবান প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং মালিক। তবে ১৫ সদস্য পদের প্রার্থী থেকে সালাউদ্দিন প্যানেলের বেশ কিছু সদস্য ঝরে যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে ছয় থেকে সাতজন জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Tag :

শেয়ার করুন

ভোটের জন্য মরিয়া ২১ পদের ৪২ প্রার্থী

আপডেট টাইম : ০৫:২৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অক্টোবর ২০২০

৭১: বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনের বাকি আর মাত্র একদিন। এখনো ভোটারদের দ্বারপ্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন ২১ পদের ৪২ প্রার্থী। গত একমাসে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সফর শেষে ঢাকার ক্লাবগুলোতে প্রার্থীরা পা ফেলছেন একাধিকবার। কী রাত, কী দিন, ঘুম হারাম হয়ে উঠেছে তাদের। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসতেই ক্ষণে ক্ষণে কেমন যেন আঁতকে উঠছেন প্রার্থীদের অনেকেই। বেড়ে গেছে হার্টবিট। আগামী ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন। এই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে ভোটারদের কদর এখন আকাশছোঁয়া। তাদের হাতের মুঠোয় অনেক উপঢৌকন! জামাই আদর তো চলছেই। শোনা যায়, একটি প্যানেল ভোটারদের ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা করেছে ভোটকেন্দ্রের উপরেই, প্যানফ্যাসিপিক সোনারগাঁ হোটেলে। গতকাল থেকেই তাদের সোনারগাঁও হোটেলে চলছে জামাই আদর।

ফুটবল অঙ্গনে গুঞ্জন, বাফুফে নির্বাচনে নাকি এবার নিরব অর্থ বিনিময় চলছে! বিশেষ করে বেশ কিছু শিল্পপতি বাফুফে নির্বাচনে জড়িয়ে পড়ায় শেয়ারবাজারের মতোই বেড়ে উঠেছে ভোটের মূল্য। একেকটি ভোটের মূল্য কয়েক লাখ! কেউ বলছেন পর্দার আড়ালে অনৈতিক এই ব্যয়ের হিসাবটা ছাড়িয়ে যেতে পারে বিশ-ত্রিশ লাখেরও উপরে! এ যদি হয় নির্বাচনী উপটোকনের হিসাব, তাহলে সব মিলে খরচটা দশ-বিশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়াটা বিচিত্র নয়। 

এর আগে বাফুফে নির্বাচনে জেলা ও বিভাগীয় ফোরাম নেতাদের ছিল একচেটিয়া আধিপত্য। নির্বাচন আসতেই দেখা গিয়েছিল অনেক নেতাদের নতুন মডেলের গাড়ি হাঁকাতে। তারাই ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতেন পরবর্তী চার বছরের ফুটবল শাসক।

অবশ্য এখন আর ফোরাম নেতাদের সেই আগের দিন নেই। দিন বদলে গেছে। বাফুফে নির্বাচনে এখন নতুন মেরুকরণ। সাবেক এক সংগঠক জানান, যেহেতু ফিফা নিয়ন্ত্রিত বাফুফে নিবাচন, তাই সরকার হয়ত সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর সুযোগ রয়েছে- জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের ভোটগুলোর ওপর। এ ছাড়া প্রার্থীরা কাউন্সিলরদের খুশি রাখতে পর্দার আড়ালে প্রয়োজনীয় উপটোকনের ব্যবস্থার আশঙ্কা থাকছে।

মূলত বাফুফে নির্বাচনে কাউন্সিলরদের কদর বেড়েছে সভাপতি পদে কাজী সালাউদ্দিনের প্রতিপক্ষ হিসেবে সাবেক ফুটবলার সফিকুল ইসলাম মানিক ও বাদল রায় এবং জেলা ও বিভাগীয় সংস্থার সমম্বয় প্যানেল দাঁড়িয়ে পড়ায়। যদিও বাদল রায় মনোনয়নপত্র ক্রয় করে পরবর্তীতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাফুফে বরাবর আবেদন করেছে। কিন্তু আবেদনটি সময়মতো না হওয়ায় তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। ফলে সভাপতি পদের প্রার্থী হিসেবে তার নামও থাকছে ব্যালট পেপারে।

অন্যদিকে মাঠের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ভোট যুদ্ধে থাকার অঙ্গীকার করেছেন সফিকুল ইসলাম মানিক। কিন্তু তার ভয়টা পর্দার আড়ালে অর্থের অবৈধ বিনিময় নিয়ে। সাবেক ফুটবলারদের অনেকেই মনে করছেন অবৈধ অর্থ বিনিময়টাই বদলে দিতে পারে ভোটের চিত্র! তাতে যে নীরবে কাঁদবে পরিবর্তনের আওয়াজ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই অনেকেই মনে করছেন শত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ফের বাফুফের প্রধান আসনে দেখা যাবে কাজী সালাউদ্দিনকেই!

আর সিনিয়র সহসভাপতি পদটিতে দেখা যাবে সেই আবদুস সালাম মুর্শেদীকেই। লড়াইটা হতে পারে চার সহসভাপতি পদ নিয়ে। সে তালিকায় ফুটবল বিশেষজ্ঞরা এগিয়ে রাখছেন কাজী সালাউদ্দিন প্যানেলের তিনজন কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক (তমা গ্রুপ), মো. ইমরুল হাসান (বসুন্ধরা গ্রুফ) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তাবিদ আউয়ালকে।

চারজনই দেশের বিত্তবান প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং মালিক। তবে ১৫ সদস্য পদের প্রার্থী থেকে সালাউদ্দিন প্যানেলের বেশ কিছু সদস্য ঝরে যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে ছয় থেকে সাতজন জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।