ধর্ষণ-হত্যা না করেই দোষ স্বীকার, মামলার তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ: হাইকোর্ট
- আপডেট টাইম : ০৪:১০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / 98
৭১: নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার স্কুলছাত্রীর জীবিত ফেরত আসার ঘটনার মামলার তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন নিয়ে তুলেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার স্কুলছাত্রীর জীবিত ফেরত আসার ঘটনায় রিভিশন আবেদনের শুনানিতে এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বেঞ্চ এ প্রশ্ন তুলেন।
গত ৪ জুলাই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী দিসা নিখোঁজ হয়। গত ৬ আগস্ট নিখোঁজ স্কুলছাত্রী দিসার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ আব্দুল্লাহ, রকিব এবং খলিল নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেন।
তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। স্বীকারোক্তিতে তারা বলে যে, তারা পঞ্জম শ্রেণির ছাত্রী দিসাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন। জবানবন্দি নেয়ার পর আসামিদের জেলে পাঠানো হয়।
কিন্তু ২৩ আগস্ট দিসাকে খুঁজে পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আসামিরা কীভাবে ধর্ষণ ও হত্যা সম্পর্কিত স্বীকারোক্তি দিয়েছে। যেখানে দিসা অক্ষত অবস্থায় ফেরত এসেছে।
আদালত মামলার তদন্তের সময় আসামির দোষ স্বীকার করা স্বাভাবিক কি না এমন প্রশ্ন করেন।
রিভিশন আবেদনের শুনানিতে এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এ মামলার সব নথি নিয়ে হাইকোর্টের তলবে হাজির হয়ে দুই তদন্ত কর্মকর্তা ব্যাখ্যা দেন।
আদালত বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো নজির নেই, স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসামি দোষ স্বীকার করেছে। সেখানে ধর্ষণ ও হত্যার কথা দোষ না করেই স্বীকার করলো? এই মামলার তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। ধর্ষণ ও হত্যা না করেও আসামিরা কীভাবে স্বীকার করলো, এটা বড় খটকা।
আদালত আরও বলেন, আসামি গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে বিচার শেষ হবার আগেই ব্রিফিং করে আসামিদের মিডিয়ার সামনে আনা বিচারকে প্রভাবিত করার সমান। একই সঙ্গে তদন্তকালীন সময়ে মামলা মিডিয়াতে টকশো করে যা অনুচিত।
আইনজীবী শিশির মনির শুনানিতে বলেন, উন্নত বিশ্বের সব জায়গায় জবানবন্দি নেয়ার সময় আইনজীবী থাকেন। এটি বাংলাদেশেও থাকা উচিত। শুনানি শেষে আদালত ২৪ সেপ্টেম্বর আদেশের দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে কথিত মৃত কিশোরী ফিরে আসা এবং তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিসহ মামলার সব নথি তলব করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই মামলায় তদন্তের সঙ্গে জড়িত দুই তদন্ত কর্মকর্তাকেও তলব করেন আদালত।