ঢাকা ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেসির দেয়া সাক্ষাৎকার: সবাই কান্নাকাটি করছিল!

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০১:৫৭:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 73

৭১: দেড় সপ্তাহ আগে দীর্ঘদিনের প্রিয় ক্লাব বার্সেলোনা ছাড়তে চেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। তবে নানা কারণে এবার তিনি মত পাল্টেছেন। নানা নাটকীয়তার পর গত শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) কাতালান ক্লাবটিতে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন আর্জেন্টাইন তারকা মেসি।

ওইদিন (শুক্রবার) বার্সেলোনায় আরো এক বছর থাকার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন মেসি। এর কিছুক্ষণ পর ফুটবলবিষয়ক সংবাদমাধ্যম গোল ডটকমকে সাক্ষাৎকার দেন এই বার্সা ফরোয়ার্ড।

সেই সাক্ষাৎকারটির বাংলা অনুবাদ আমার সংবাদ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

আমি যখন আমার পরিবারকে জানালাম আমি বার্সা ছাড়তে চাই তখন নাটকীয় এক অবস্থার সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিলো। পুরো পরিবারের সবাই অনেক কান্নাকাটি করছিল। আমার বাচ্চারা কেউই এখানকার স্কুল এবং বন্ধুদের ছেড়ে যেতে চাচ্ছিলো না।

কিন্তু আমি সবসময় সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করতে চেয়েছি। আপনি হয়তো কখনো জিতবেন আবার কখনো হেরে যাবেন। কিন্তু আপনাকে সবসময় জেতার চেষ্টা করতে হবে আর আমি এটাই করতে চেয়েছি।

আমি সবসময় জানতাম যে মৌসুম শেষে আমি ফ্রি হয়ে যাবো। বোর্ড প্রেসিডেন্টও সবসময় বলে এসেছে যে মৌসুম শেষে আমি যেকোনো জায়গায় যেতে পারবো, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। মূলত রোমা, লিভারপুল ও লিসবনে ভয়ংকর ফলাফলের পর আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।

তবে ওরা (বার্সা বোর্ড) দাবি করছে আমি কেন জুনের ১০ তারিখের আগে কিছু জানাইনি। অথচ সেই সময়ে আমরা লিগ এবং সবধরণের প্রতিযোগিতার মাঝপথে ছিলাম। করোনাভাইরাসের কারণে লিগও পিছিয়ে গিয়েছিলো। তাই এখন অনেকটা বাধ্য হয়েই আমি এই মৌসুমটা খেলবো। অন্যথায় আমাকে ক্লাব ছাড়তে হলে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো বাই আউট ক্লজ দিতে হবে যেটা একেবারেই অসম্ভব একটা বিষয়।

তবে আরেকটা উপায় ছিল। সেটা হচ্ছে কোর্টে গিয়ে মামলা করা। কিন্তু আমি সেদিকে একেবারেই যাবো না কারণ আমি বার্সা-কে ভালোবাসি। আমি কখনোই বার্সেলোনার বিপক্ষে মামলায় যেতে চাই না। আমি যখন থেকে এখানে এসেছি এই ক্লাবই আমাকে সবকিছু দিয়েছে।

বার্সা আমার জীবনের মতোই প্রিয় এবং এখানেই আমি আমাকে খুঁজে পেয়েছি। বার্সা আমাকে সব কিছু দিয়েছে ও আমিও বার্সাকে সব কিছু দিয়েছি। তাই কখনোই আমার মাথায় ক্লাবের বিপক্ষে কোর্টে যাওয়ার চিন্তা আসেনি।

আমার ছেলে মাতেও এখনো অনেক ছোট, তাই সে তেমন কিছু বুঝতে পারছে না। কিন্তু থিয়াগো টিভিসহ আশেপাশের অনেক কিছুই দেখছে। সে অনেকবার আমাকে বলেছে, বাবা যেও না। সত্যি বলতে এটা আসলেই অনেক বেশি কষ্টের ছিলো।

আমি বার্সাকে ভালোবাসি এবং জানি এর চেয়ে ভালো জায়গা আর কোথাও পাবো না। কিন্তু তবুও বলবো, আমার যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রয়েছে। আমি নতুন কিছু অর্জন করতে চেয়েছিলাম।

আমার বাচ্চারা এখানেই বড় হয়েছে। আমার পরিবারও এখানে অভ্যস্ত হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমি বলবো, ক্লাব ছাড়তে চাওয়া দোষের কিছু না। এটা আমার দরকার ছিল, ক্লাবেরও দরকার ছিল। উভয়পক্ষই এটাতে উপকৃত হতো।

আর হ্যাঁ, আমার স্ত্রীকে ধন্যবাদ। কারণ সে সকল কষ্ট বুকে চেপে রেখেও আমাকে পুরোটা সময় সমর্থন দিয়ে গেছে।

Tag :

শেয়ার করুন

মেসির দেয়া সাক্ষাৎকার: সবাই কান্নাকাটি করছিল!

আপডেট টাইম : ০১:৫৭:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

৭১: দেড় সপ্তাহ আগে দীর্ঘদিনের প্রিয় ক্লাব বার্সেলোনা ছাড়তে চেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। তবে নানা কারণে এবার তিনি মত পাল্টেছেন। নানা নাটকীয়তার পর গত শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) কাতালান ক্লাবটিতে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন আর্জেন্টাইন তারকা মেসি।

ওইদিন (শুক্রবার) বার্সেলোনায় আরো এক বছর থাকার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন মেসি। এর কিছুক্ষণ পর ফুটবলবিষয়ক সংবাদমাধ্যম গোল ডটকমকে সাক্ষাৎকার দেন এই বার্সা ফরোয়ার্ড।

সেই সাক্ষাৎকারটির বাংলা অনুবাদ আমার সংবাদ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

আমি যখন আমার পরিবারকে জানালাম আমি বার্সা ছাড়তে চাই তখন নাটকীয় এক অবস্থার সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিলো। পুরো পরিবারের সবাই অনেক কান্নাকাটি করছিল। আমার বাচ্চারা কেউই এখানকার স্কুল এবং বন্ধুদের ছেড়ে যেতে চাচ্ছিলো না।

কিন্তু আমি সবসময় সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করতে চেয়েছি। আপনি হয়তো কখনো জিতবেন আবার কখনো হেরে যাবেন। কিন্তু আপনাকে সবসময় জেতার চেষ্টা করতে হবে আর আমি এটাই করতে চেয়েছি।

আমি সবসময় জানতাম যে মৌসুম শেষে আমি ফ্রি হয়ে যাবো। বোর্ড প্রেসিডেন্টও সবসময় বলে এসেছে যে মৌসুম শেষে আমি যেকোনো জায়গায় যেতে পারবো, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। মূলত রোমা, লিভারপুল ও লিসবনে ভয়ংকর ফলাফলের পর আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।

তবে ওরা (বার্সা বোর্ড) দাবি করছে আমি কেন জুনের ১০ তারিখের আগে কিছু জানাইনি। অথচ সেই সময়ে আমরা লিগ এবং সবধরণের প্রতিযোগিতার মাঝপথে ছিলাম। করোনাভাইরাসের কারণে লিগও পিছিয়ে গিয়েছিলো। তাই এখন অনেকটা বাধ্য হয়েই আমি এই মৌসুমটা খেলবো। অন্যথায় আমাকে ক্লাব ছাড়তে হলে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো বাই আউট ক্লজ দিতে হবে যেটা একেবারেই অসম্ভব একটা বিষয়।

তবে আরেকটা উপায় ছিল। সেটা হচ্ছে কোর্টে গিয়ে মামলা করা। কিন্তু আমি সেদিকে একেবারেই যাবো না কারণ আমি বার্সা-কে ভালোবাসি। আমি কখনোই বার্সেলোনার বিপক্ষে মামলায় যেতে চাই না। আমি যখন থেকে এখানে এসেছি এই ক্লাবই আমাকে সবকিছু দিয়েছে।

বার্সা আমার জীবনের মতোই প্রিয় এবং এখানেই আমি আমাকে খুঁজে পেয়েছি। বার্সা আমাকে সব কিছু দিয়েছে ও আমিও বার্সাকে সব কিছু দিয়েছি। তাই কখনোই আমার মাথায় ক্লাবের বিপক্ষে কোর্টে যাওয়ার চিন্তা আসেনি।

আমার ছেলে মাতেও এখনো অনেক ছোট, তাই সে তেমন কিছু বুঝতে পারছে না। কিন্তু থিয়াগো টিভিসহ আশেপাশের অনেক কিছুই দেখছে। সে অনেকবার আমাকে বলেছে, বাবা যেও না। সত্যি বলতে এটা আসলেই অনেক বেশি কষ্টের ছিলো।

আমি বার্সাকে ভালোবাসি এবং জানি এর চেয়ে ভালো জায়গা আর কোথাও পাবো না। কিন্তু তবুও বলবো, আমার যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রয়েছে। আমি নতুন কিছু অর্জন করতে চেয়েছিলাম।

আমার বাচ্চারা এখানেই বড় হয়েছে। আমার পরিবারও এখানে অভ্যস্ত হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমি বলবো, ক্লাব ছাড়তে চাওয়া দোষের কিছু না। এটা আমার দরকার ছিল, ক্লাবেরও দরকার ছিল। উভয়পক্ষই এটাতে উপকৃত হতো।

আর হ্যাঁ, আমার স্ত্রীকে ধন্যবাদ। কারণ সে সকল কষ্ট বুকে চেপে রেখেও আমাকে পুরোটা সময় সমর্থন দিয়ে গেছে।