ঢাকা ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পীরগঞ্জে ফুটবল খেলোয়াড় তৈরির কারিগর সোহেল

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৫:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 89

৭১: বাংলাদেশের উত্তর জনপদের বহুল পরিচিত এক ফুটবল স্বর্গীয় উদ্যানের নাম রংপুরের পীরগঞ্জ। যেখানে একসময় দেশবরেণ্য পরমানু বিজ্ঞানী ও বর্তমান বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র শশুড় বাড়ী ও তার স্বামী প্রয়াত ডক্টর এম এ ওয়াজেদ মিয়ার নিজ বাড়ি। সেই পীরগঞ্জের উজ্জল এক ফুটবল খেলোয়াড় এবং সংগঠকের নাম মো. মাহমুদুল হাসান সোহেল যিনি উত্তরবঙ্গসহ এদেশের ফুটবলযোদ্ধাদের নিকট ”গোল-কিপার সোহেল” নামেই সুপরিচিত। পীরগঞ্জের ফুটবল ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এই সোহেল।

খেলোয়াড় হিসেবে ১৮ বছর স্বর্ণালি ক্যারিয়ারে তিনি এখনো যুক্ত। হাল না ছাড়া সোহেল ২০১৯ সালে ঢাকা ২য় বিভাগ ফুটবল লীগে সমাজ কল্যান ও ক্রীড়া সংসদ মুগদার হয়ে খেলেছেন এই খেলোয়াড় এবং সংগঠক। একজন প্রথিতযশা ফুটবলার হিসেবে জীবনের ৩২ বছর বয়সে এসেও ফুটবলের হাল ছাড়েন নি। তিনি তৃনমূল পর্যায়ের কিশোর ও তরুণদের খেলাধুলার জন্য যা করেছেন, তা বাংলাদেশের খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়েই বেঁচে থাকবে।

বর্তমান খেলাধুলার ক্ষেত্রে কিশোর ও তরুণদের জন্য ব্যাক্তিগতভাবে ও বিভিন্নভাবে সমাজের বিত্তশালীদের কাছ থেকে হাত পেতে ফুটবল ক্রয়, জার্সী, প্যান্ট, হুজ, সিঙ্গগার্ড প্রদানসহ নিজের পকেটের টাকা ব্যয় করে পীরগঞ্জের এক একটি চৌকোষ খেলোয়াড় গড়ার কারখানা এখনও চালু রেখেছেন।

এদেশে যখন ফুটবল কর্মকর্তারা তাদের চেয়ার এবং ক্ষমতার মোহে অন্ধ এবং বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন, তখন তৃণমুলে পড়ে থাকা ফুটবল পাগল সংগঠক সোহেল পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে ফুটবলের ভাবনা ভেবে নিজের ঘুম হারাম করে দিনের পর দিন সবুজ মাঠের নেশায় ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে চলেছেন।

তিনি উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত অজোপাড়া গাঁ, উপজেলা, জেলাসহ বাংলাদেশের প্রায় ৩০ টি’রো বেশি জেলায় একজন ফুটবলার হিসেবে বিচরণ করে বিভিন্ন ফুটবল টূর্ণামেন্টে অংশ গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন জেলায় নিজ একাডেমির খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার গঠনে বেশ উজ্জল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। এমনকি ফুটবলের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা থেকেই তরুণ উদীয়মান খেলোয়াড়দের নিয়ে ০৬/০২/২০১৬ ইং সালে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন পীরগঞ্জ ফুটবল একাডেমী যেখানে কিশোর ও প্রতিভাবান তরুণদের করতজন দক্ষ ফুটবলার হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। কিশোর ও প্রতিভাবান তরুণদের মাঠমুখী করতে ও ভালমানের খেলোয়াড় গড়ে তোলার লক্ষে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন নি:স্বার্থ এই ফুটবল প্রেমিক মানুষটি। যেখানে সকল স্তরের ফুটবলাররা বিনা খরচে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতে পারে।

ইতিমধ্যে এই একাডেমীর প্রশিক্ষিত কয়েকজন নামকরা খেলোয়াড় উত্তরবঙ্গে দাপটের সাথে ফুটবল খেলে যাচ্ছে এবং এই একাডেমির ছাত্র নাজমুল হোসেন আকন্দ অনুর্ধ্ব ১৬/১৮ জাতীয় ফুটবল দলে খেলেছেন। শুধু তাই নয়, ব্রাজিলে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নাজমুল, ক্লাব পর্যায়ে ঢাকা আবাহনী এবং বর্তমানে সাইফ স্পোর্টিং এ খেলছে। কৃতি ফুটবলার সোহেল একজন খেলোয়াড় এবং পরিচালক হিসেবে প্রতিদিন নিজে মাঠে উপস্থিত থেকে ফুটবলারদের প্রতিটি খেলায় উৎসাহিত করে যাচ্ছেন। তার এই অদম্য ফুটবল পেশাদারিত্ব তাকে উত্তরবঙ্গে সফল সংগঠক হিসেবেও যথেষ্ট পরিচিতি এনে দিয়েছে।

জনপ্রিয় ফুটবলার সোহেলের এর সাথে কথা হলে তিনি জানান- বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ফুটবল খেলাকে তৃণমুলের সবুজ মাঠে যারা ব্যক্তিগতভাবে এবং পীরগঞ্জ ফুটবল একাডেমী’র মত সাংগঠনিকভাবে জিইয়ে রেখেছেন। তাদের দিকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সহ শীর্ষ পর্যায়ের সংগঠকদের নজর দিতে হবে। এমনকি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও স্থানীয় প্রশাসন দ্বারা তাদের আর্থিক প্রণোদনাসহ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেয়া হলে তৃণমুল থেকে শত শত ফুটবলার দেশের জন্যে তৈরি করা সম্ভব। তিনি আরোও বলেন, ফুটবলই আমার ধ্যান এবং ফুটবলই আমার জ্ঞান। আমি আমৃত্যু ফুটবলের জন্যে কাজ করে যেতে চাই।

Tag :

শেয়ার করুন

পীরগঞ্জে ফুটবল খেলোয়াড় তৈরির কারিগর সোহেল

আপডেট টাইম : ০৪:৪৫:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০

৭১: বাংলাদেশের উত্তর জনপদের বহুল পরিচিত এক ফুটবল স্বর্গীয় উদ্যানের নাম রংপুরের পীরগঞ্জ। যেখানে একসময় দেশবরেণ্য পরমানু বিজ্ঞানী ও বর্তমান বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র শশুড় বাড়ী ও তার স্বামী প্রয়াত ডক্টর এম এ ওয়াজেদ মিয়ার নিজ বাড়ি। সেই পীরগঞ্জের উজ্জল এক ফুটবল খেলোয়াড় এবং সংগঠকের নাম মো. মাহমুদুল হাসান সোহেল যিনি উত্তরবঙ্গসহ এদেশের ফুটবলযোদ্ধাদের নিকট ”গোল-কিপার সোহেল” নামেই সুপরিচিত। পীরগঞ্জের ফুটবল ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এই সোহেল।

খেলোয়াড় হিসেবে ১৮ বছর স্বর্ণালি ক্যারিয়ারে তিনি এখনো যুক্ত। হাল না ছাড়া সোহেল ২০১৯ সালে ঢাকা ২য় বিভাগ ফুটবল লীগে সমাজ কল্যান ও ক্রীড়া সংসদ মুগদার হয়ে খেলেছেন এই খেলোয়াড় এবং সংগঠক। একজন প্রথিতযশা ফুটবলার হিসেবে জীবনের ৩২ বছর বয়সে এসেও ফুটবলের হাল ছাড়েন নি। তিনি তৃনমূল পর্যায়ের কিশোর ও তরুণদের খেলাধুলার জন্য যা করেছেন, তা বাংলাদেশের খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়েই বেঁচে থাকবে।

বর্তমান খেলাধুলার ক্ষেত্রে কিশোর ও তরুণদের জন্য ব্যাক্তিগতভাবে ও বিভিন্নভাবে সমাজের বিত্তশালীদের কাছ থেকে হাত পেতে ফুটবল ক্রয়, জার্সী, প্যান্ট, হুজ, সিঙ্গগার্ড প্রদানসহ নিজের পকেটের টাকা ব্যয় করে পীরগঞ্জের এক একটি চৌকোষ খেলোয়াড় গড়ার কারখানা এখনও চালু রেখেছেন।

এদেশে যখন ফুটবল কর্মকর্তারা তাদের চেয়ার এবং ক্ষমতার মোহে অন্ধ এবং বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন, তখন তৃণমুলে পড়ে থাকা ফুটবল পাগল সংগঠক সোহেল পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে ফুটবলের ভাবনা ভেবে নিজের ঘুম হারাম করে দিনের পর দিন সবুজ মাঠের নেশায় ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে চলেছেন।

তিনি উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত অজোপাড়া গাঁ, উপজেলা, জেলাসহ বাংলাদেশের প্রায় ৩০ টি’রো বেশি জেলায় একজন ফুটবলার হিসেবে বিচরণ করে বিভিন্ন ফুটবল টূর্ণামেন্টে অংশ গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন জেলায় নিজ একাডেমির খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার গঠনে বেশ উজ্জল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। এমনকি ফুটবলের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা থেকেই তরুণ উদীয়মান খেলোয়াড়দের নিয়ে ০৬/০২/২০১৬ ইং সালে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন পীরগঞ্জ ফুটবল একাডেমী যেখানে কিশোর ও প্রতিভাবান তরুণদের করতজন দক্ষ ফুটবলার হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। কিশোর ও প্রতিভাবান তরুণদের মাঠমুখী করতে ও ভালমানের খেলোয়াড় গড়ে তোলার লক্ষে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন নি:স্বার্থ এই ফুটবল প্রেমিক মানুষটি। যেখানে সকল স্তরের ফুটবলাররা বিনা খরচে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতে পারে।

ইতিমধ্যে এই একাডেমীর প্রশিক্ষিত কয়েকজন নামকরা খেলোয়াড় উত্তরবঙ্গে দাপটের সাথে ফুটবল খেলে যাচ্ছে এবং এই একাডেমির ছাত্র নাজমুল হোসেন আকন্দ অনুর্ধ্ব ১৬/১৮ জাতীয় ফুটবল দলে খেলেছেন। শুধু তাই নয়, ব্রাজিলে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নাজমুল, ক্লাব পর্যায়ে ঢাকা আবাহনী এবং বর্তমানে সাইফ স্পোর্টিং এ খেলছে। কৃতি ফুটবলার সোহেল একজন খেলোয়াড় এবং পরিচালক হিসেবে প্রতিদিন নিজে মাঠে উপস্থিত থেকে ফুটবলারদের প্রতিটি খেলায় উৎসাহিত করে যাচ্ছেন। তার এই অদম্য ফুটবল পেশাদারিত্ব তাকে উত্তরবঙ্গে সফল সংগঠক হিসেবেও যথেষ্ট পরিচিতি এনে দিয়েছে।

জনপ্রিয় ফুটবলার সোহেলের এর সাথে কথা হলে তিনি জানান- বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ফুটবল খেলাকে তৃণমুলের সবুজ মাঠে যারা ব্যক্তিগতভাবে এবং পীরগঞ্জ ফুটবল একাডেমী’র মত সাংগঠনিকভাবে জিইয়ে রেখেছেন। তাদের দিকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সহ শীর্ষ পর্যায়ের সংগঠকদের নজর দিতে হবে। এমনকি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও স্থানীয় প্রশাসন দ্বারা তাদের আর্থিক প্রণোদনাসহ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেয়া হলে তৃণমুল থেকে শত শত ফুটবলার দেশের জন্যে তৈরি করা সম্ভব। তিনি আরোও বলেন, ফুটবলই আমার ধ্যান এবং ফুটবলই আমার জ্ঞান। আমি আমৃত্যু ফুটবলের জন্যে কাজ করে যেতে চাই।