ঢাকা ১১:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব রোগ দূরে করে পেঁয়াজের চা, জেনেনিন বানানোর পদ্ধতি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 100

৭১: পেঁয়াজ। এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের সঙ্গে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল। এছাড়া এর মধ্যে মজুত রয়েছে কার্মিনেটিভ, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় পদার্থ, যা আমাদের শরীরে নানান উপকারে আসে।  

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে শরীরের অন্যান্য রোগকে সারিয়ে তুলতে আমরা সাধারণত হলুদ, তুলসী, আদা ইত্যাদি কিছু সাধারণ উপাদান সম্পর্কে সবাইকে বলে থাকি। কিন্তু পেঁয়াজের চা যে কতটা উপকারি তা আমাদের অনেকেরই অজানা।

তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে আজ আমরা পেঁয়াজের চায়ের কথা উল্লেখ করব। এটি আপনাকে সর্দি, কাশি, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, এই চা হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই সহায়ক।

পেঁয়াজের চা বানানোর পদ্ধতি
১.উপকরণ একটি কাটা পেঁয়াজ, তিন টুকরো রসুন, ১-২ টেবিল চামচ মধু, দুইকাপ জল, একটা তেজপাতা এবং লবঙ্গ। তৈরির পদ্ধতি সসপ্যানে দু’কাপ জল ঢেলে হালকা তাপে ফুটতে দিন।

এরপর এতে কাটা পেঁয়াজ, অল্প থেতো করা রসুন, তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে ৭-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। যখনই দেখবেন জলের রং পরিবর্তন হয় গাঢ় বাদামী রঙের হয়ে গেছে তখন নামিয়ে নিন। এবার কাপে ঢেলে মধু মিশিয়ে নিন। তৈরি আপনার অনিয়ন টি।

২.উপকরণ একটি কাটা পেঁয়াজ, ১-২ টেবিল চামচ মধু, দুইকাপ জল, লেবুর রস এবং গ্রিন টি ব্যাগ। তৈরির পদ্ধতি সসপ্যানের ফুটন্ত জলে কাটা পেঁয়াজ ফেলে দিন। এবার যখন জলের রং পরিবর্তন হয়ে যাবে তখন নামিয়ে এনে কাপে ঢেলে দিন। এবার মধু, লেবুর রস এবং গ্রিন টি ব্যাগ দিয়ে মিশিয়ে নিন। তৈরি আপনার অনিয়ন টি।

স্বাস্থ্য উপকারিতা
১.ঠান্ডা লাগা দূর করতে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে হওয়া ফ্লু বা ঠান্ডা লাগা থেকে রক্ষা করে পেঁয়াজের চা। গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি থেকে নিমেষের মধ্যে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

২.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখতে প্রয়োজন হয় ভিটামিন-সি এর। ঘটনাচক্রে পেঁয়াজে থাকা ভিটামিন-সি এবং ফাইটোকেমিক্যাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। করোনার সময় ইমিউনিটি স্ট্রং করতে এই চা বেছে নিতে পারেন।

৩.হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এই চা আমাদের হজমশক্তিকে বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য ও নানাবিধ পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৪.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এই চা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই ভালো। রোজ সকালে এককাপ করে এই চা পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং শরীর সুস্থ থাকে।

৫.ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজে Quercetin নামক ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওজন কমায়। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই চা পানের উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়।

৬.ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পেঁয়াজে Quercetin নামক একটি যৌগ থাকে। এটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি রক্তে শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করে।

৭.প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে এই চা বিভিন্ন প্রদাহ জনিত সমস্যা এবং ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। এই কারণে প্রাচীনকালে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় ফোলা স্থানে কাঁচা পেঁয়াজ ঘষে দেওয়ার রীতি ছিল।

৮.অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে যারা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে পেঁয়াজের চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঔষধ। শুতে যাওয়ার আগে এক কাপ পেঁয়াজের চা পান করুন। অনিদ্রার সমস্যা অনায়াসেই দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও এটি হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।

Tag :

শেয়ার করুন

যেসব রোগ দূরে করে পেঁয়াজের চা, জেনেনিন বানানোর পদ্ধতি

আপডেট টাইম : ০৪:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০

৭১: পেঁয়াজ। এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের সঙ্গে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল। এছাড়া এর মধ্যে মজুত রয়েছে কার্মিনেটিভ, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় পদার্থ, যা আমাদের শরীরে নানান উপকারে আসে।  

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে শরীরের অন্যান্য রোগকে সারিয়ে তুলতে আমরা সাধারণত হলুদ, তুলসী, আদা ইত্যাদি কিছু সাধারণ উপাদান সম্পর্কে সবাইকে বলে থাকি। কিন্তু পেঁয়াজের চা যে কতটা উপকারি তা আমাদের অনেকেরই অজানা।

তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে আজ আমরা পেঁয়াজের চায়ের কথা উল্লেখ করব। এটি আপনাকে সর্দি, কাশি, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, এই চা হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই সহায়ক।

পেঁয়াজের চা বানানোর পদ্ধতি
১.উপকরণ একটি কাটা পেঁয়াজ, তিন টুকরো রসুন, ১-২ টেবিল চামচ মধু, দুইকাপ জল, একটা তেজপাতা এবং লবঙ্গ। তৈরির পদ্ধতি সসপ্যানে দু’কাপ জল ঢেলে হালকা তাপে ফুটতে দিন।

এরপর এতে কাটা পেঁয়াজ, অল্প থেতো করা রসুন, তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে ৭-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। যখনই দেখবেন জলের রং পরিবর্তন হয় গাঢ় বাদামী রঙের হয়ে গেছে তখন নামিয়ে নিন। এবার কাপে ঢেলে মধু মিশিয়ে নিন। তৈরি আপনার অনিয়ন টি।

২.উপকরণ একটি কাটা পেঁয়াজ, ১-২ টেবিল চামচ মধু, দুইকাপ জল, লেবুর রস এবং গ্রিন টি ব্যাগ। তৈরির পদ্ধতি সসপ্যানের ফুটন্ত জলে কাটা পেঁয়াজ ফেলে দিন। এবার যখন জলের রং পরিবর্তন হয়ে যাবে তখন নামিয়ে এনে কাপে ঢেলে দিন। এবার মধু, লেবুর রস এবং গ্রিন টি ব্যাগ দিয়ে মিশিয়ে নিন। তৈরি আপনার অনিয়ন টি।

স্বাস্থ্য উপকারিতা
১.ঠান্ডা লাগা দূর করতে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে হওয়া ফ্লু বা ঠান্ডা লাগা থেকে রক্ষা করে পেঁয়াজের চা। গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি থেকে নিমেষের মধ্যে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

২.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখতে প্রয়োজন হয় ভিটামিন-সি এর। ঘটনাচক্রে পেঁয়াজে থাকা ভিটামিন-সি এবং ফাইটোকেমিক্যাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। করোনার সময় ইমিউনিটি স্ট্রং করতে এই চা বেছে নিতে পারেন।

৩.হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এই চা আমাদের হজমশক্তিকে বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য ও নানাবিধ পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৪.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এই চা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই ভালো। রোজ সকালে এককাপ করে এই চা পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং শরীর সুস্থ থাকে।

৫.ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজে Quercetin নামক ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওজন কমায়। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই চা পানের উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়।

৬.ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পেঁয়াজে Quercetin নামক একটি যৌগ থাকে। এটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি রক্তে শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করে।

৭.প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে এই চা বিভিন্ন প্রদাহ জনিত সমস্যা এবং ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। এই কারণে প্রাচীনকালে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় ফোলা স্থানে কাঁচা পেঁয়াজ ঘষে দেওয়ার রীতি ছিল।

৮.অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে যারা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে পেঁয়াজের চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঔষধ। শুতে যাওয়ার আগে এক কাপ পেঁয়াজের চা পান করুন। অনিদ্রার সমস্যা অনায়াসেই দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও এটি হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।