ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতি জিয়ার পুরো সমর্থন ছিল: ফাঁসিতে দণ্ডিত মাজেদ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০
  • / 88

৭১: চার মাস আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত বরখাস্তকৃত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করার আগে এক ভিডিও বিবৃতি সে জানায়, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সেনা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের পূর্ণ সমর্থন ছিল।

ফাঁসির দন্ড কার্যকরের অপেক্ষায় জেলখানায় থাকা মাজেদ এই ভিডিও বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের সঙ্গে জিয়ার জড়িত থাকা প্রসঙ্গে জানায় ‘তিনি তাদের (হত্যাকারীদের) পুরোপুরি সমর্থন করেছিলেন। তাদের প্রতি তাঁর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা ছিল।’

বাসস প্রাপ্ত এই ভিডিও বিবৃতিতে সে জানায়, ‘জিয়া বঙ্গভবনে ঘাতকদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতেন এবং হত্যাকারীরাও রাষ্ট্রপতি ভবনে সরাসরি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।’ ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের পর মাজেদ তার সহকর্মী অভ্যুত্থান নেতাদের সঙ্গে সেখানে অবস্থান করে।

মাজেদ জিয়ার প্রতি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে বলে যে, ‘তিনি আগে থেকেই অভ্যুত্থান নেতাদের সঙ্গ যুক্ত ছিলেন।’

মাজেদ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে ঘটনা স্মরণ করে জানায়, ‘জিয়াউর রহমান সাহেব ১০-১১টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট অডিটরিয়ামে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের জোয়ান এবং অফিসারদের এ্যাড্রেস করেন। ঐখানে উনি (জিয়াউর রহমান) মোটিভেট করেন যে, এখন যে ঘটনা গত রাতে ঘটে গেছে তোমরা সে সমস্ত নিয়ে কোন রকম মাথা ঘামাবে না। তোমরা সব চেইন অব কমান্ড এ ফিরে যাও। সবাই কাজকর্ম করো। এটা জাতির ব্যাপার এটা আমাদের ব্যাপার না।’

মাজেদ জানায়, ‘উনি (জিয়াউর রহমান) বঙ্গভবনে খুনীদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতেন এবং খুনীরাও তাকে ঐখান থেকে যোগাযোগ করতেন ডাইরেক্ট এবং আর্মির চেইন অব কমান্ড বলতে কিছু ছিলো না। ওরাই চালাতো প্র্যাকটিক্যালি।’

জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার একটি সাক্ষাতকারের স্মৃতিচারণ করে মাজেদ জানায়, তখন উনার (জিয়াউর রহমান) সাথে যে আলোচনা হয়েছে তখন দেখা গেছে যে তিনি (জিয়াউর রহমান) প্র্যাকটিক্যালি যে এই ক্যুর পক্ষপাত সুলভ কথাবার্তা বলছেন। ওদের পক্ষ হয়ে কথা বলছেন। এটা করেছেন কিন্তু উনার (জিয়াউর রহমান) কথাবার্তায় দেখা গেছে যে উনি (জিয়াউর রহমান) ক্যুর সমর্থক ওদের সাথে ওদের সাথেই উনার (জিয়াউর রহমান) সবকিছু যোগাযোগ।’

মাজেদ জানায়, ‘তিনি (জিয়াউর রহমান) তাদেরকে লিবিয়াতে আশ্রয়ের বন্দোবস্ত করেছেন। পরে আমরা সেখানে শুনলাম জেলখানাও তারা চারজন জাতীয় নেতাকে মেরে গেছে। এই রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ঐখানে ঘোষণা করতেছে, বলতেছে তার সাথে দুইটা সিপাইও ছিল।’

খুনীদের সবাইকে পুরস্কার হিসেবে একটা করে প্রমোশনসহ ফরেন সার্ভিসে যোগদানের ব্যবস্থা করতে জেনারেল জিয়া তার প্রতিনিধি জেনারেল নুরুল ইসলাম (শিশু) কে লিবিয়ায় পাঠায় উল্লেখ করে মাজেদ জানায়, তাদের প্রতি জিয়াউর রহমানের সরাসরি মদদ ছিল।

মাজেদের মতে, জিয়া, ফরেইন সার্ভিসের জন্য এসব অফিসাররা কোয়ালিফাইড না হওয়া সত্ত্বেও যাদের অধিকাংশ শর্ট সার্ভিস কমিশনড অফিসার। এমনকি তারা গ্র্যাজুয়েটও ছিল না। তাদেরকে ফরেইন সার্ভিস হিসেবে প্রাইজ পোস্টিং দিয়েছে। এতেই তো বুঝা যায় জিয়াউর রহমান পুরো ওদের সঙ্গে জড়িত ছিল।

Tag :

শেয়ার করুন

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতি জিয়ার পুরো সমর্থন ছিল: ফাঁসিতে দণ্ডিত মাজেদ

আপডেট টাইম : ০৫:২৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০

৭১: চার মাস আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত বরখাস্তকৃত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করার আগে এক ভিডিও বিবৃতি সে জানায়, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সেনা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের পূর্ণ সমর্থন ছিল।

ফাঁসির দন্ড কার্যকরের অপেক্ষায় জেলখানায় থাকা মাজেদ এই ভিডিও বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের সঙ্গে জিয়ার জড়িত থাকা প্রসঙ্গে জানায় ‘তিনি তাদের (হত্যাকারীদের) পুরোপুরি সমর্থন করেছিলেন। তাদের প্রতি তাঁর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা ছিল।’

বাসস প্রাপ্ত এই ভিডিও বিবৃতিতে সে জানায়, ‘জিয়া বঙ্গভবনে ঘাতকদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতেন এবং হত্যাকারীরাও রাষ্ট্রপতি ভবনে সরাসরি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।’ ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের পর মাজেদ তার সহকর্মী অভ্যুত্থান নেতাদের সঙ্গে সেখানে অবস্থান করে।

মাজেদ জিয়ার প্রতি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে বলে যে, ‘তিনি আগে থেকেই অভ্যুত্থান নেতাদের সঙ্গ যুক্ত ছিলেন।’

মাজেদ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে ঘটনা স্মরণ করে জানায়, ‘জিয়াউর রহমান সাহেব ১০-১১টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট অডিটরিয়ামে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের জোয়ান এবং অফিসারদের এ্যাড্রেস করেন। ঐখানে উনি (জিয়াউর রহমান) মোটিভেট করেন যে, এখন যে ঘটনা গত রাতে ঘটে গেছে তোমরা সে সমস্ত নিয়ে কোন রকম মাথা ঘামাবে না। তোমরা সব চেইন অব কমান্ড এ ফিরে যাও। সবাই কাজকর্ম করো। এটা জাতির ব্যাপার এটা আমাদের ব্যাপার না।’

মাজেদ জানায়, ‘উনি (জিয়াউর রহমান) বঙ্গভবনে খুনীদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতেন এবং খুনীরাও তাকে ঐখান থেকে যোগাযোগ করতেন ডাইরেক্ট এবং আর্মির চেইন অব কমান্ড বলতে কিছু ছিলো না। ওরাই চালাতো প্র্যাকটিক্যালি।’

জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার একটি সাক্ষাতকারের স্মৃতিচারণ করে মাজেদ জানায়, তখন উনার (জিয়াউর রহমান) সাথে যে আলোচনা হয়েছে তখন দেখা গেছে যে তিনি (জিয়াউর রহমান) প্র্যাকটিক্যালি যে এই ক্যুর পক্ষপাত সুলভ কথাবার্তা বলছেন। ওদের পক্ষ হয়ে কথা বলছেন। এটা করেছেন কিন্তু উনার (জিয়াউর রহমান) কথাবার্তায় দেখা গেছে যে উনি (জিয়াউর রহমান) ক্যুর সমর্থক ওদের সাথে ওদের সাথেই উনার (জিয়াউর রহমান) সবকিছু যোগাযোগ।’

মাজেদ জানায়, ‘তিনি (জিয়াউর রহমান) তাদেরকে লিবিয়াতে আশ্রয়ের বন্দোবস্ত করেছেন। পরে আমরা সেখানে শুনলাম জেলখানাও তারা চারজন জাতীয় নেতাকে মেরে গেছে। এই রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ঐখানে ঘোষণা করতেছে, বলতেছে তার সাথে দুইটা সিপাইও ছিল।’

খুনীদের সবাইকে পুরস্কার হিসেবে একটা করে প্রমোশনসহ ফরেন সার্ভিসে যোগদানের ব্যবস্থা করতে জেনারেল জিয়া তার প্রতিনিধি জেনারেল নুরুল ইসলাম (শিশু) কে লিবিয়ায় পাঠায় উল্লেখ করে মাজেদ জানায়, তাদের প্রতি জিয়াউর রহমানের সরাসরি মদদ ছিল।

মাজেদের মতে, জিয়া, ফরেইন সার্ভিসের জন্য এসব অফিসাররা কোয়ালিফাইড না হওয়া সত্ত্বেও যাদের অধিকাংশ শর্ট সার্ভিস কমিশনড অফিসার। এমনকি তারা গ্র্যাজুয়েটও ছিল না। তাদেরকে ফরেইন সার্ভিস হিসেবে প্রাইজ পোস্টিং দিয়েছে। এতেই তো বুঝা যায় জিয়াউর রহমান পুরো ওদের সঙ্গে জড়িত ছিল।