সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার কৌশল
- আপডেট টাইম : ০৫:০১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জুলাই ২০২০
- / 102
৭১: সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া জীবনের একটি বিশেষ অনুসঙ্গ। এটি যেমন আমাদের উপকারও করে, তেমনই অপকারের কাজেও শামিল হয় অজান্তেই। ২০১৯ সালে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ইউজারদের তথ্য চুরির অভিযোগ উঠেছিল। আর এই হাতেগোনা কয়েক দিন আগেই টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার অভিযোগ করছেন অনেকেই। আর এই হ্যাক হয়ে যাওয়ার বিষয়টি যথেষ্টই উদ্বেগের। কারণ সোশ্যাল প্রোফাইল একবার হ্যাক হয়ে গেলে হ্যাকারদের হাতের নাগালে চলে আসে অনেক গোপনীয় তথ্য। সেই সোশ্যাল মিডিয়াকেই কীভাবে হ্যাকার হানা থেকে নিরাপদে রাখবেন, জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের শেয়ার করা কিছু টিপস।
কঠিন পাসওয়ার্ড বাছাই করুন: বারংবারই অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা আরও জোরদার করার কথা বলে এসেছেন টেক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কীভাবে সেই অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বজায় রাখবেন? প্রথমত সহজে অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। মোটামুটি বড় নম্বর এবং বিশেষ চিহ্ন (@#$*) মিলিয়ে পাসওয়ার্ড দিতে হবে। তবে অনেকেই আবার বড় নম্বর বলতে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে থাকেন। সেটা এক্কেবারেই করবেন না। কারণ আপনার ফোন নম্বর চাইলেই, মুহূর্তে জোগাড় করে নিতে পারে হ্যাকাররা। পাসওয়ার্ড একান্তই ব্যক্তিগত, সুতরাং এর গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে আপনাকেই। পরিবার, বন্ধু এবং কাছের কারও সঙ্গেই এটি শেয়ার করা যাবে না।
টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন: অনলাইনে বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার জন্য দুইস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বা টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করতে পারেন। এতে কোনও ভাবেই হ্যাক হবে না আপনার সোশ্যাল মিডিয়া। এই ফিচার চালু থাকলে নতুন কোনও ডিভাইস থেকে লগ ইন করার সময় পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি অ্যাকাউন্টে যুক্ত মোবাইল নম্বরে আসা ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাঠানো হয়। সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের জন্য এই পদ্ধতি মেনে চলতে পারলে হ্যাকার হানা থেকে নিস্তার মিলবে।
যাচাই করার পরই বন্ধুত্ব: সামাজিক মাধ্যমে বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। কারণ কে কোন অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তা বোঝা যায় না। এছাড়াও হ্যাকারদের চরও ফাঁদ পেতে বসে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সুতরাং অপরিচিত কারও সঙ্গে বন্ধু পাতানোর আগে ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। সন্দেহ থাকলে ওই পথে হাঁটাই চলবে না। অনেক সময়ে আবার মিথ্যা পরিচয়ে আপনার বন্ধু হয়ে কোনও হ্যাকার ঢুকে আপনার টাইমলাইনে স্প্যাম ছড়াতে পারে, আপনাকে বিব্রতকর পোস্টে ট্যাগ করতে পারে বা হ্যাকিংয়ের মেসেজ অবধি পাঠাতে পারে।
সন্দেহজনক লিংক এড়িয়ে চলুন: যদি ঘনিষ্ঠ কোনও বন্ধু বা ফেসবুকে কোনও বন্ধুর কাছ থেকে ইমেইল বা মেসেঞ্জারে কোনও বার্তা পান বা কোনও লিংক শেয়ার করা হয়, যা হয়তো তার স্বাভাবিক আচরণের সঙ্গে মেলে না, সবচেয়ে ভালো হবে সেটায় ক্লিক না করা বা সাড়া না দেওয়া। কেউ হয়তো লিখতে পারে যে, সে কোথাও বেড়াতে গিয়ে বিপদে পড়েছে অথবা আপনার মেসেঞ্জারে এমনই একটি লিংক পাঠিয়েছে, যার আসলে সন্দেহজনক। এক্ষেত্রে তাকে আলাদাভাবে অ্যাকাউন্টে নক করে বা বার্তা পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন। এ ধরনের সন্দেহজনক কিছু দেখলে রিপোর্ট করার পরামর্শ দিচ্ছে ফেসবুক।
অতিরিক্ত শেয়ার বন্ধ করুন: আবেগি হয়ে অতিরিক্ত পোস্ট শেয়ার করা যাবে না ফেসবুকে বা অন্য কোনও সোশ্যাল মাধ্যমে। আগে ভালোভাবে যাচাই করে, তারপরই তা শেয়ার করবেন। পোস্ট করার সময় বন্ধুকে ট্যাগ বা লোকেশন সেট করার আগে কোনটি ব্যক্তিগত আর কোনটি সবার জন্য, তা ভালো করে দেখে নিতে হবে। কোনও তৃতীয় পক্ষ যাতে আপনার তথ্য ব্যবহার করে সুবিধা নিতে না পারে বা আপনার অবস্থানগত তথ্য জানাজানি হয়ে গেলে আপনাকে যেন কোনও ঝামেলায় না জড়িয়ে পড়তে হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তিগত সংবেদনশীল ছবি কিংবা ভিডিয়ো আপলোড না করাই ভালো। অ্যাডাল্ট কোনও কনটেন্ট আপলোড, শেয়ার বা ইনবক্সে পাঠানো এক্কেবারেই চলবে না। কেউ পাঠালেও তাতে ক্লিক করবেন না।
রিকভারি ইমেল: অ্যাকাউন্ট রিকভারি অপশনে মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে ইমেইল আইডিই ব্যবহার করা উচিত। এতে কোনও কারণে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলেও ইমেইল মারফত তার নোটিফিকেশন চলে আসবে। এমনকী চাইলে দ্রুততম সময়ে তা ঠেকানোর সুযোগও পাওয়া যাবে।