ঢাকা ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুরান ঢাকায় প্রতিদিন বিনামূল্যে খাবার পাচ্ছে ৩ হাজার মানুষ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪১:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ২০২০
  • / 125

৭১: করোনা মহামারীর দুর্যোগে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের খাদ্যাভাব পূরণে পুরান ঢাকার ওয়ারীর জোড়পুলে মেহমানখানা খুলেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এলাকার ঐতিহ্যবাহী খান হোটেলের সহযোগিতায় প্রতিদিন তিন হাজার মানুষকে বিনামূল্যে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই সেবা চলছে। ঈদুল আজহা পর্যন্ত তা চালু থাকবে বলে জানান সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু-কিশোর ও বয়স্ক নারী-পুরুষ খাবার খেতে আসছে। হোটেলটিতে একসঙ্গে ৩০ জন বসে খেতে পারে। আগত ব্যক্তিদের লাইনে বসিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে খাবার পরিবেশন করছেন হোটেল কর্মচারীরা। মেন্যুতে থাকছে পরোটা, বুটের ডাল ভুনা, ডিম ভাজা ও মুরগির মাংস। সবাইকে চাহিদা অনুযায়ী খাবার দেয়া হচ্ছে। আর এসব কাজ তদারকি করছেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডশনের সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক সুলতানা জান্নাত শিখা ও হোটেল মালিক বেলাল খান। তারাও মানুষের প্লেটে খাবার তুলে দিচ্ছেন।

ওই হোটেলে খেতে আসা মহিমা বেগম, আওলাদ ও সাহেব আলী বলেন, আমরা শ্রমিকের কাজ করি। করোনা সংকটে এখন আর কাজ পাওয়া যায় না। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছিল। সম্মানের ভয়ে কারও কাছে হাত পাততে পারছিলাম না। শুক্রবার খবর পেয়ে এখানে এসে খাবার খেয়ে যাচ্ছি। দিনে তিনবেলা পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে এসে খেয়ে যাচ্ছি। গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান তারা।

ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক সুলতানা জান্নাত শিখা বলেন, টিপু সুলতান রোড, নবাবপুর, রায়সাহেব বাজার এলাকায় অসংখ্য নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের বসবাস। করোনা মহামারীর কবলে পড়ে অনেকে কাজ হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাসের দিকনির্দেশনায় আমরা এখানে বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করছি। ঈদুল আজহা পর্যন্ত এ সেবা চালু রাখব। তিনি আরও বলেন, ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বাজার ও হোটেল কর্মচারীদের বেতন দেয়া হয়। হোটেল মালিক তার ব্যবসা বন্ধ করে এ কাজে সহযোগিতা করছেন। এছাড়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন রাজধানীর শাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে এক টাকায় পেট ভরে খাদ্য ও কেরানীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

খান হোটেলের মালিক বেলাল খান বলেন, আমার ছেলে মাহদী হাসান দীর্ঘদিন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। ছেলের মাধ্যমে দুর্যোগে মানুষের সেবা করার প্রস্তাব পেয়ে ব্যবসা বন্ধ করে অসহায় মানুষের জন্য খাবার কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছি। আগামী দিনেও এভাবে মানুষের সেবা করতে চান বলে জানান তিনি।

Tag :

শেয়ার করুন

পুরান ঢাকায় প্রতিদিন বিনামূল্যে খাবার পাচ্ছে ৩ হাজার মানুষ

আপডেট টাইম : ০৫:৪১:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ২০২০

৭১: করোনা মহামারীর দুর্যোগে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের খাদ্যাভাব পূরণে পুরান ঢাকার ওয়ারীর জোড়পুলে মেহমানখানা খুলেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এলাকার ঐতিহ্যবাহী খান হোটেলের সহযোগিতায় প্রতিদিন তিন হাজার মানুষকে বিনামূল্যে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই সেবা চলছে। ঈদুল আজহা পর্যন্ত তা চালু থাকবে বলে জানান সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু-কিশোর ও বয়স্ক নারী-পুরুষ খাবার খেতে আসছে। হোটেলটিতে একসঙ্গে ৩০ জন বসে খেতে পারে। আগত ব্যক্তিদের লাইনে বসিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে খাবার পরিবেশন করছেন হোটেল কর্মচারীরা। মেন্যুতে থাকছে পরোটা, বুটের ডাল ভুনা, ডিম ভাজা ও মুরগির মাংস। সবাইকে চাহিদা অনুযায়ী খাবার দেয়া হচ্ছে। আর এসব কাজ তদারকি করছেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডশনের সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক সুলতানা জান্নাত শিখা ও হোটেল মালিক বেলাল খান। তারাও মানুষের প্লেটে খাবার তুলে দিচ্ছেন।

ওই হোটেলে খেতে আসা মহিমা বেগম, আওলাদ ও সাহেব আলী বলেন, আমরা শ্রমিকের কাজ করি। করোনা সংকটে এখন আর কাজ পাওয়া যায় না। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছিল। সম্মানের ভয়ে কারও কাছে হাত পাততে পারছিলাম না। শুক্রবার খবর পেয়ে এখানে এসে খাবার খেয়ে যাচ্ছি। দিনে তিনবেলা পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে এসে খেয়ে যাচ্ছি। গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান তারা।

ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক সুলতানা জান্নাত শিখা বলেন, টিপু সুলতান রোড, নবাবপুর, রায়সাহেব বাজার এলাকায় অসংখ্য নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের বসবাস। করোনা মহামারীর কবলে পড়ে অনেকে কাজ হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাসের দিকনির্দেশনায় আমরা এখানে বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করছি। ঈদুল আজহা পর্যন্ত এ সেবা চালু রাখব। তিনি আরও বলেন, ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বাজার ও হোটেল কর্মচারীদের বেতন দেয়া হয়। হোটেল মালিক তার ব্যবসা বন্ধ করে এ কাজে সহযোগিতা করছেন। এছাড়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন রাজধানীর শাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে এক টাকায় পেট ভরে খাদ্য ও কেরানীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

খান হোটেলের মালিক বেলাল খান বলেন, আমার ছেলে মাহদী হাসান দীর্ঘদিন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। ছেলের মাধ্যমে দুর্যোগে মানুষের সেবা করার প্রস্তাব পেয়ে ব্যবসা বন্ধ করে অসহায় মানুষের জন্য খাবার কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছি। আগামী দিনেও এভাবে মানুষের সেবা করতে চান বলে জানান তিনি।