ঢাকা ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমে উঠেছে নৌকার হাট

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪০:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
  • / 135

৭১: নওগাঁর আত্রাইয়ে প্রবল বর্ষণ ও ঢলের পানিতে তিনটি স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। চারপাশে থৈ থৈ করছে পানি। আর তাই নৌকা বিক্রির ধুম পড়েছে। জমে উঠেছে নৌকার হাট। পানিবন্দি গ্রামগুলোর লোকজনের চলাচল এবং অবসর সময়ে বিলে মাছ ধরার জন্য নৌকার কদর অনেক বেড়ে গেছে। তাই বিভিন্ন হাটে নৌকা বিক্রির ধুম পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার সমসপাড়া হাটে প্রতি হাটবারে বিক্রি হচ্ছে শত শত নৌকা।

জানা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লাগাতার বর্ষণ এবং উজান থেকে আসা পানির ঢলে আত্রাই নদী ফুঁসে উঠেছে। উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া ও মধুগুড়নই গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার আত্রাই-বান্দাইখাড়া পাকা সড়কের জাত আমরুল এবং আত্রাই-সিংড়া পাকা সড়কের বৈঠাখালী ও পাঁচুপুর নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে অসংখ্য গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। ফলে কালিকাপুর ইউনিয়নের গন্ডগোহালী, ধনেশ্বর, বাজেধনেশ্বর, গোয়ালবাড়িয়া, আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের সিংসাড়া, দীঘা, দমদমা, ব্রজপুর, পাঁচুপুর ইউনিয়নের মধুগুড়নই, পাঁচুপুর, বাঁকিওলমা, কাঁন্দওলমা, বিশা ইউনিয়নের বৈঠাখালী, পারমোহন ঘোষ, বিশা, থলওলমাসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে এসব এলাকার লোকজনের চলাচলের একমাত্র বাহন হিসেবে নৌকার বিকল্প নেই। এছাড়াও মাঠগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের হাতে কোনো কাজ নেই। তাই তারা এ অবসর সময়ে উন্মুক্ত মাঠে মাছ শিকারের জন্য নৌকা ক্রয় করছেন। এজন্য বেড়েছে নৌকার কদর। একদিকে নৌকা ক্রয় করে চলাচলসহ বিভিন্ন সুফল পাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষ। অপরদিকে নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রী। যেসব মিস্ত্রীরা শুষ্ক মৌসুমে কাজের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন তাদের এখন কর্মে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্যতা। হাসি ফুটেছে এসব মিস্ত্রীদের পরিবারে।

সমসপাড়া হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা উপজেলার পারমোহন ঘোষ গ্রামের আব্দুল লতিফ, ফেকু, আব্দুল মজিদসহ অনেকে বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। বর্ষায় আমাদের ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়ায় আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামে নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা নৌকা বিক্রির পেশায় নিয়োজিত হয়েছি। সপ্তাহে দুইদিন শুক্রবার ও সোমবার সমসপাড়া হাট। বর্ষাকালে জীবিকা নির্বাহের জন্য এ হাটে আমরা নৌকা বিক্রি করে থাকি। বর্তমানে কাঠ-বাঁশের দাম বেশি এবং মিস্ত্রী মজুরিও বেশি হওয়ায় খুব বেশি লাভ না হলেও যা হয় তা দিয়ে সংসারের হাটবাজার করা চলে। শুধু আত্রাই নয় পাশর্^বর্তী রাণীনগর, নাটোরের সিংড়া এবং চলনবিল এলাকার লোকজনও এ হাট থেকে আমাদের নৌকা ক্রয় করেন।

নৌকা ক্রেতা মহাদীঘি গ্রামের মো. ফারুক বলেন, আমরা বর্ষা মৌসুমে মাঠে মাছ শিকার ও চলাচলের জন্য নৌকা বিক্রি করে থাকি। এ সময় নৌকাই আমাদের একমাত্র বাহন।

Tag :

শেয়ার করুন

জমে উঠেছে নৌকার হাট

আপডেট টাইম : ০৫:৪০:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

৭১: নওগাঁর আত্রাইয়ে প্রবল বর্ষণ ও ঢলের পানিতে তিনটি স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। চারপাশে থৈ থৈ করছে পানি। আর তাই নৌকা বিক্রির ধুম পড়েছে। জমে উঠেছে নৌকার হাট। পানিবন্দি গ্রামগুলোর লোকজনের চলাচল এবং অবসর সময়ে বিলে মাছ ধরার জন্য নৌকার কদর অনেক বেড়ে গেছে। তাই বিভিন্ন হাটে নৌকা বিক্রির ধুম পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার সমসপাড়া হাটে প্রতি হাটবারে বিক্রি হচ্ছে শত শত নৌকা।

জানা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লাগাতার বর্ষণ এবং উজান থেকে আসা পানির ঢলে আত্রাই নদী ফুঁসে উঠেছে। উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া ও মধুগুড়নই গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার আত্রাই-বান্দাইখাড়া পাকা সড়কের জাত আমরুল এবং আত্রাই-সিংড়া পাকা সড়কের বৈঠাখালী ও পাঁচুপুর নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে অসংখ্য গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। ফলে কালিকাপুর ইউনিয়নের গন্ডগোহালী, ধনেশ্বর, বাজেধনেশ্বর, গোয়ালবাড়িয়া, আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের সিংসাড়া, দীঘা, দমদমা, ব্রজপুর, পাঁচুপুর ইউনিয়নের মধুগুড়নই, পাঁচুপুর, বাঁকিওলমা, কাঁন্দওলমা, বিশা ইউনিয়নের বৈঠাখালী, পারমোহন ঘোষ, বিশা, থলওলমাসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে এসব এলাকার লোকজনের চলাচলের একমাত্র বাহন হিসেবে নৌকার বিকল্প নেই। এছাড়াও মাঠগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের হাতে কোনো কাজ নেই। তাই তারা এ অবসর সময়ে উন্মুক্ত মাঠে মাছ শিকারের জন্য নৌকা ক্রয় করছেন। এজন্য বেড়েছে নৌকার কদর। একদিকে নৌকা ক্রয় করে চলাচলসহ বিভিন্ন সুফল পাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষ। অপরদিকে নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রী। যেসব মিস্ত্রীরা শুষ্ক মৌসুমে কাজের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন তাদের এখন কর্মে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্যতা। হাসি ফুটেছে এসব মিস্ত্রীদের পরিবারে।

সমসপাড়া হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা উপজেলার পারমোহন ঘোষ গ্রামের আব্দুল লতিফ, ফেকু, আব্দুল মজিদসহ অনেকে বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। বর্ষায় আমাদের ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়ায় আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামে নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা নৌকা বিক্রির পেশায় নিয়োজিত হয়েছি। সপ্তাহে দুইদিন শুক্রবার ও সোমবার সমসপাড়া হাট। বর্ষাকালে জীবিকা নির্বাহের জন্য এ হাটে আমরা নৌকা বিক্রি করে থাকি। বর্তমানে কাঠ-বাঁশের দাম বেশি এবং মিস্ত্রী মজুরিও বেশি হওয়ায় খুব বেশি লাভ না হলেও যা হয় তা দিয়ে সংসারের হাটবাজার করা চলে। শুধু আত্রাই নয় পাশর্^বর্তী রাণীনগর, নাটোরের সিংড়া এবং চলনবিল এলাকার লোকজনও এ হাট থেকে আমাদের নৌকা ক্রয় করেন।

নৌকা ক্রেতা মহাদীঘি গ্রামের মো. ফারুক বলেন, আমরা বর্ষা মৌসুমে মাঠে মাছ শিকার ও চলাচলের জন্য নৌকা বিক্রি করে থাকি। এ সময় নৌকাই আমাদের একমাত্র বাহন।