ঢাকা ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্ধশতাধিক প্রতারণা মামলার তথ্য র‌্যাবে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০
  • / 101

৭১: একের পর এক বেরিয়ে আসছে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের প্রতারণার নিত্যনতুন ঘটনার তথ্য। ভয়ংকর প্রতারক সাহেদ যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন, প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অঙ্কের টাকা। সর্বশেষ ভারত থেকে আনা ১৭টি থ্রি হুইলার এবং ২০০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কে চলাচলের জন্য কাগজপত্র তৈরি করে দেয়ার নামে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার কথা জানা গেছে।

ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে সাহেদ ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের মেঘা মোটরসের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ওই টাকা হাতিয়ে নেন। এর মধ্যে এক চেকে ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রিমিয়ার ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে সাহেদের হিসাবে উত্তরা এভিনিউ শাখায় পাঠানো হয়। পরে সাহেদ চট্টগ্রাম গিয়ে কয়েক দফায় আরও ৩২ লাখ টাকা নেন। দীর্ঘদিন ঘোরাঘুরির পর রাজধানী ঢাকায় চলাচলের জন্য সাইফুল ইসলামকে দেয়া হয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) জাল অনুমতিপত্র। পরে সাহেদের কাছ থেকে ভুয়া কাগজপত্র তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘বিআরটিএ আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমি বিষয়টি দেখছি।’ এরপর সাইফুলকে এড়িয়ে যেতে থাকেন সাহেদ। এক পর্যায়ে ধমকও দেন।

সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে হুমকি দেন। এ নিয়ে ১৩ জুলাই চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেছেন সাইফুল ইসলাম। এরকম অর্ধশতাধিক প্রতারণা মামলার তথ্য র‌্যাবের কাছে এসেছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু তথ্য জোগাড়ও করেছে র‌্যাব। বাকিগুলোর তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলে র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, ২০০৯-১০ সালে সাহেদ ধানমণ্ডি এলাকায় বিডিএস কিক ওয়ান এবং কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি (কেকেএস) নামে দুটি এমএলএম কোম্পানি খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে গা-ঢাকা দেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা তার বিরুদ্ধে মামলা করলে ২০১১ সালে তিনি গ্রেফতারও হন। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান। পরে প্রতারণার ওই অর্থ দিয়ে তিনি রিজেন্ট গ্রুপের নামে নতুন করে প্রতারণায় নামেন। চালু করেন রিজেন্ট হাসপাতাল। এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। ইতোমধ্যে এরকম ২০টি মামলার রেফারেন্স র‌্যাবের হাতে এসেছে। তবে করোনা পরিস্থিতি এবং আদালত বন্ধ থাকার কারণে ওইসব নথিপত্র পেতে দেরি হচ্ছে উল্লেখ করে র‌্যাব জানায়, সাহেদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে তার বেশির ভাগই আদালতে হয়েছে। মামলাগুলোর বেশির ভাগই ২০০৯ সালের। এছাড়া ২০১৫, ২০১৮ ও চলতি বছরে করা কয়েকটি মামলার রেফারেন্সও সংগ্রহ করেছে র‌্যাব।

এ বিষয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতারণার ক্ষেত্রে সাহেদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করতেন। কখনও পদস্থ আমলা, কখনও সেনা কর্মকর্তা বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা বলতেন। প্রতারণার জন্য যখন যেভাবে নিজেকে হাজির করার প্রয়োজন হতো, তখন তিনি সেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতেন। একেকজন প্রতারিত তাকে একেক নামে চিনতেন। কেউ চিনতেন মো. সাহেদ হিসেবে। কেউ চিনতেন মেজর ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এবং কেউ চিনতেন কর্নেল ইফতেখার আহমেদ হিসেবে। কারও কাছে সাহেদ করিম আবার কারও কাছে সাহেদ হিসেবে পরিচয় দিতেন।

র‌্যাবের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, দ্য মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৫ সালে আদালতে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। মামলাগুলো যথাক্রমে এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ নম্বর ধারার সিআর মামলা নং- ৪২/২০১৫ এবং এনআই অ্যাক্টের ১৩৮/১৪০ নম্বর ধারার সিআর মামলা নং- ৪৩/২০১৫। তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর মধ্যে- পেনাল কোডের ৪৬১/৪৭১/৪০৬/৪২০/৩৪ নম্বর ধারায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের ডবলমুরিং থানার ২৪(০৭)২০ নম্বর, পেনাল কোডের ৪০৬/৪১৭/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১/২৬৯ ধারার ০৫(০৭)২০ নম্বর এবং পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ নম্বর ধারায় উত্তরা পশ্চিম থানার ১২ (০৩) ১৮ নম্বর মামলাগুলো তদন্তাধীন আছে। গত ১৫ জুলাই করা সিআর ৭৪৬/২০ ও ৭৪৭/২০ নম্বর মামলা দুটিতে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে। এই দুটি পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারায় দায়ের করা হয়। উত্তরা পূর্ব থানায় করা মামলায় যথাযথ সাক্ষীর অভাবে তাকে ২০১৪ সালের ২৯ জুন অব্যাহতি দেয়া হয়। পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ নম্বর ধারায় করা ওই মামলার নম্বর ৫৬ (০৫) ২০০৯। ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৫ (২) ধারা অনুযায়ী ২০১১ সালের ১ এপ্রিল তাকে অপর একটি মামলায় খালাস দেয়া হয়। পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ ধারায় উত্তরা পূর্ব থানায় করা ওই মামলা নম্বর ১০(০৮)২০০৯। ফৌজদারি কার্ডবিধির ৩৪৫(৬) ধারায় ২০১২ সালের ২০ মে আকেটি মামলায় সাহেদ বাদীর সঙ্গে আপস করেন। পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬ ধারায় করা উত্তরা পূর্ব থানার ওই মামলার নম্বর ছিল ২০(০৭)২০০৯। ২০০৯ সালের ১৫ জুলাই উত্তরা পূর্ব থানায় তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ ধারায় অপর একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ২০১০ সালের ৮ জুলাই তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পেনাল কোডের ৩৭৯/৪২০ ধারায় ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই সাহেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। একই বছরের ২৫ আগস্ট মামলাটি এফআরটি (ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু) হয়। এছাড়া সাহেদের বিরুদ্ধে র‌্যাব আরও যেসব মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করছে সেগুলোর মধ্যে আছে পেনাল কোডের ৪০৬/ ৪২০ ধারায় গুলশান থানার মামলা নম্বর ১০৭(০২)২০২০, পেনাল কোডের একই ধারায় লালবাগ থানার মামলা নম্বর ৪৭(০৫)২০০৯, লালবাগ থানার মামলা নম্বর ৫৮(০৫)২০০৯, আদাবর থানার মামলা নম্বর ৩০(০৭) ২০০৯, উত্তরা পূর্ব থানার মামলা নম্বর ১৬(০৭)২০০৯, বাড্ডা থানার মামলা নম্বর ৩৭(০৭)২০০৯, পেনাল কোডের ৩৭৯/৪০৬ নম্বর ধারায় শাহবাগ থানার মামলা নম্বর ৩৫(০৭)২০০৯ এবং পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬ নম্বর ধারায় উত্তরা পূর্ব থানার মামলা নম্বর ২৫(০৯)২০০৯।

জানতে চাইলে র‌্যাব পরিচালক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর জানান, প্রতারক সাহেদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে বলে আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি এবং ভার্চুয়াল আদালতের কারণে সব মামলার নথিপত্র এখনও পাওয়া যায়নি। যেসব মামলার রেকর্ডপত্র পেয়েছি সেগুলো নিয়ে তদন্ত চলছে। অন্য মামলাগুলোর রেফারেন্স উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, অনেক ভুক্তভোগী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাদের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের নমুনা সংগ্রহ করা এবং ভুয়া সনদ দেয়ার অভিযোগ ৬ জুলাই সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। বুধবার সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

Tag :

শেয়ার করুন

অর্ধশতাধিক প্রতারণা মামলার তথ্য র‌্যাবে

আপডেট টাইম : ০৫:২৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০

৭১: একের পর এক বেরিয়ে আসছে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের প্রতারণার নিত্যনতুন ঘটনার তথ্য। ভয়ংকর প্রতারক সাহেদ যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন, প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অঙ্কের টাকা। সর্বশেষ ভারত থেকে আনা ১৭টি থ্রি হুইলার এবং ২০০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কে চলাচলের জন্য কাগজপত্র তৈরি করে দেয়ার নামে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার কথা জানা গেছে।

ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে সাহেদ ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের মেঘা মোটরসের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ওই টাকা হাতিয়ে নেন। এর মধ্যে এক চেকে ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রিমিয়ার ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে সাহেদের হিসাবে উত্তরা এভিনিউ শাখায় পাঠানো হয়। পরে সাহেদ চট্টগ্রাম গিয়ে কয়েক দফায় আরও ৩২ লাখ টাকা নেন। দীর্ঘদিন ঘোরাঘুরির পর রাজধানী ঢাকায় চলাচলের জন্য সাইফুল ইসলামকে দেয়া হয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) জাল অনুমতিপত্র। পরে সাহেদের কাছ থেকে ভুয়া কাগজপত্র তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘বিআরটিএ আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমি বিষয়টি দেখছি।’ এরপর সাইফুলকে এড়িয়ে যেতে থাকেন সাহেদ। এক পর্যায়ে ধমকও দেন।

সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে হুমকি দেন। এ নিয়ে ১৩ জুলাই চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেছেন সাইফুল ইসলাম। এরকম অর্ধশতাধিক প্রতারণা মামলার তথ্য র‌্যাবের কাছে এসেছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু তথ্য জোগাড়ও করেছে র‌্যাব। বাকিগুলোর তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলে র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, ২০০৯-১০ সালে সাহেদ ধানমণ্ডি এলাকায় বিডিএস কিক ওয়ান এবং কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি (কেকেএস) নামে দুটি এমএলএম কোম্পানি খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে গা-ঢাকা দেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা তার বিরুদ্ধে মামলা করলে ২০১১ সালে তিনি গ্রেফতারও হন। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান। পরে প্রতারণার ওই অর্থ দিয়ে তিনি রিজেন্ট গ্রুপের নামে নতুন করে প্রতারণায় নামেন। চালু করেন রিজেন্ট হাসপাতাল। এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। ইতোমধ্যে এরকম ২০টি মামলার রেফারেন্স র‌্যাবের হাতে এসেছে। তবে করোনা পরিস্থিতি এবং আদালত বন্ধ থাকার কারণে ওইসব নথিপত্র পেতে দেরি হচ্ছে উল্লেখ করে র‌্যাব জানায়, সাহেদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে তার বেশির ভাগই আদালতে হয়েছে। মামলাগুলোর বেশির ভাগই ২০০৯ সালের। এছাড়া ২০১৫, ২০১৮ ও চলতি বছরে করা কয়েকটি মামলার রেফারেন্সও সংগ্রহ করেছে র‌্যাব।

এ বিষয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতারণার ক্ষেত্রে সাহেদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করতেন। কখনও পদস্থ আমলা, কখনও সেনা কর্মকর্তা বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা বলতেন। প্রতারণার জন্য যখন যেভাবে নিজেকে হাজির করার প্রয়োজন হতো, তখন তিনি সেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতেন। একেকজন প্রতারিত তাকে একেক নামে চিনতেন। কেউ চিনতেন মো. সাহেদ হিসেবে। কেউ চিনতেন মেজর ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এবং কেউ চিনতেন কর্নেল ইফতেখার আহমেদ হিসেবে। কারও কাছে সাহেদ করিম আবার কারও কাছে সাহেদ হিসেবে পরিচয় দিতেন।

র‌্যাবের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, দ্য মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৫ সালে আদালতে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। মামলাগুলো যথাক্রমে এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ নম্বর ধারার সিআর মামলা নং- ৪২/২০১৫ এবং এনআই অ্যাক্টের ১৩৮/১৪০ নম্বর ধারার সিআর মামলা নং- ৪৩/২০১৫। তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর মধ্যে- পেনাল কোডের ৪৬১/৪৭১/৪০৬/৪২০/৩৪ নম্বর ধারায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের ডবলমুরিং থানার ২৪(০৭)২০ নম্বর, পেনাল কোডের ৪০৬/৪১৭/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১/২৬৯ ধারার ০৫(০৭)২০ নম্বর এবং পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ নম্বর ধারায় উত্তরা পশ্চিম থানার ১২ (০৩) ১৮ নম্বর মামলাগুলো তদন্তাধীন আছে। গত ১৫ জুলাই করা সিআর ৭৪৬/২০ ও ৭৪৭/২০ নম্বর মামলা দুটিতে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে। এই দুটি পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারায় দায়ের করা হয়। উত্তরা পূর্ব থানায় করা মামলায় যথাযথ সাক্ষীর অভাবে তাকে ২০১৪ সালের ২৯ জুন অব্যাহতি দেয়া হয়। পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ নম্বর ধারায় করা ওই মামলার নম্বর ৫৬ (০৫) ২০০৯। ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৫ (২) ধারা অনুযায়ী ২০১১ সালের ১ এপ্রিল তাকে অপর একটি মামলায় খালাস দেয়া হয়। পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ ধারায় উত্তরা পূর্ব থানায় করা ওই মামলা নম্বর ১০(০৮)২০০৯। ফৌজদারি কার্ডবিধির ৩৪৫(৬) ধারায় ২০১২ সালের ২০ মে আকেটি মামলায় সাহেদ বাদীর সঙ্গে আপস করেন। পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬ ধারায় করা উত্তরা পূর্ব থানার ওই মামলার নম্বর ছিল ২০(০৭)২০০৯। ২০০৯ সালের ১৫ জুলাই উত্তরা পূর্ব থানায় তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ ধারায় অপর একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ২০১০ সালের ৮ জুলাই তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পেনাল কোডের ৩৭৯/৪২০ ধারায় ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই সাহেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। একই বছরের ২৫ আগস্ট মামলাটি এফআরটি (ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু) হয়। এছাড়া সাহেদের বিরুদ্ধে র‌্যাব আরও যেসব মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করছে সেগুলোর মধ্যে আছে পেনাল কোডের ৪০৬/ ৪২০ ধারায় গুলশান থানার মামলা নম্বর ১০৭(০২)২০২০, পেনাল কোডের একই ধারায় লালবাগ থানার মামলা নম্বর ৪৭(০৫)২০০৯, লালবাগ থানার মামলা নম্বর ৫৮(০৫)২০০৯, আদাবর থানার মামলা নম্বর ৩০(০৭) ২০০৯, উত্তরা পূর্ব থানার মামলা নম্বর ১৬(০৭)২০০৯, বাড্ডা থানার মামলা নম্বর ৩৭(০৭)২০০৯, পেনাল কোডের ৩৭৯/৪০৬ নম্বর ধারায় শাহবাগ থানার মামলা নম্বর ৩৫(০৭)২০০৯ এবং পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬ নম্বর ধারায় উত্তরা পূর্ব থানার মামলা নম্বর ২৫(০৯)২০০৯।

জানতে চাইলে র‌্যাব পরিচালক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর জানান, প্রতারক সাহেদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে বলে আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি এবং ভার্চুয়াল আদালতের কারণে সব মামলার নথিপত্র এখনও পাওয়া যায়নি। যেসব মামলার রেকর্ডপত্র পেয়েছি সেগুলো নিয়ে তদন্ত চলছে। অন্য মামলাগুলোর রেফারেন্স উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, অনেক ভুক্তভোগী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাদের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের নমুনা সংগ্রহ করা এবং ভুয়া সনদ দেয়ার অভিযোগ ৬ জুলাই সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। বুধবার সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।