ঢাকা ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা সব ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৩:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০
  • / 112

করোনাভাইরাস মানুষের সব ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের এক কিংবদন্তি চিকিৎসক। তিনি হলেন নয়াদিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালে সেন্টার ফর চেস্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. অরবিন্দ কুমার।

ভারতের প্রখ্যাত এ চিকিৎসক বলেন, এ ভাইরাসের মানুষের সব ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে একটি হাসপাতালেই ডজনে ডজনে মানুষ মারা যাচ্ছেন, এটা

আপনি কল্পনা করতে পারেন?

ডা. অরবিন্দ কুমার বলেন, ১৩০ কোটি মানুষের চলাচল ও প্রাত্যহিক জীবন-যাপনে কড়াকড়ি আরোপে ভারত সরকারের নেয়া নজিরবিহীন সিদ্ধান্তই দেশটিতে করোনার হট স্পট শনাক্ত করার সবচেয়ে ভালো সুযোগ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী এবং ভ্যান্টিলেটর উৎপাদনের মূল্যবান সময় দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘খোদার কসম আমরা যদি ইউরোপের মতো পরিস্থিতিতে পৌঁছাই, তাহলে আমরা এটিকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।’

ভারতের আরেক চিকিৎসক নরেশ ত্রিহান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের আলামত পেয়েছি। কিন্তু এটা কীভাবে ছড়াচ্ছে সেটা অজানা। আমরা যে ধরনের প্রস্তুতিই নিই না কেন, যখন এটি একেবারে চূড়ান্ত মাত্রায় সংক্রমণ ঘটাবে তখন কী ঘটবে সেটা ভেবেই আঁতকে উঠি। আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় শয্যা, ভ্যান্টিলেটর, পিপিইর এক চতুর্থাংশও নেই। এসব কিছুই দরকার।

করোনাভাইরাসের চরম ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে ভারত। মুম্বাইয়ে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর দেশটির শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনার সম্ভাব্য ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য ভারতকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হলে করোনায় মৃত্যুপরী ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত।

দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। তিন দিনে দ্বিগুণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ২৫১ জন থেকে তিন দিনে বেড়ে তিন হাজার ৮২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, জুনের তৃতীয় সপ্তাহে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মার্কিন সংস্থা বোস্টন কনসাল্টিং গ্র“পের এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, জুনের শেষ সপ্তাহ অথবা

সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেশটিতে লকডাউন চলতে পারে। রোববার রাত ৯টা থেকে ৯ মিনিটের জন্য বাড়িঘরের আলো নিভিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাড়িতেও দূরত্ব বজায় রেখে দুই সপ্তাহ চলার পরামর্শ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেশটিতে করোনা ভাইরাসে মোট ৮৬ জন মারা গেছে এবং মোট তিন হাজার ৮২ জন আক্রান্ত হয়েছে।

সূত্র: সিএনএন, আনন্দবাজার, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এনডিটিভি

Tag :

শেয়ার করুন

করোনা সব ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে

আপডেট টাইম : ০৯:৪৩:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাস মানুষের সব ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের এক কিংবদন্তি চিকিৎসক। তিনি হলেন নয়াদিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালে সেন্টার ফর চেস্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. অরবিন্দ কুমার।

ভারতের প্রখ্যাত এ চিকিৎসক বলেন, এ ভাইরাসের মানুষের সব ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে একটি হাসপাতালেই ডজনে ডজনে মানুষ মারা যাচ্ছেন, এটা

আপনি কল্পনা করতে পারেন?

ডা. অরবিন্দ কুমার বলেন, ১৩০ কোটি মানুষের চলাচল ও প্রাত্যহিক জীবন-যাপনে কড়াকড়ি আরোপে ভারত সরকারের নেয়া নজিরবিহীন সিদ্ধান্তই দেশটিতে করোনার হট স্পট শনাক্ত করার সবচেয়ে ভালো সুযোগ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী এবং ভ্যান্টিলেটর উৎপাদনের মূল্যবান সময় দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘খোদার কসম আমরা যদি ইউরোপের মতো পরিস্থিতিতে পৌঁছাই, তাহলে আমরা এটিকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।’

ভারতের আরেক চিকিৎসক নরেশ ত্রিহান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের আলামত পেয়েছি। কিন্তু এটা কীভাবে ছড়াচ্ছে সেটা অজানা। আমরা যে ধরনের প্রস্তুতিই নিই না কেন, যখন এটি একেবারে চূড়ান্ত মাত্রায় সংক্রমণ ঘটাবে তখন কী ঘটবে সেটা ভেবেই আঁতকে উঠি। আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় শয্যা, ভ্যান্টিলেটর, পিপিইর এক চতুর্থাংশও নেই। এসব কিছুই দরকার।

করোনাভাইরাসের চরম ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে ভারত। মুম্বাইয়ে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর দেশটির শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনার সম্ভাব্য ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য ভারতকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হলে করোনায় মৃত্যুপরী ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত।

দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। তিন দিনে দ্বিগুণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ২৫১ জন থেকে তিন দিনে বেড়ে তিন হাজার ৮২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, জুনের তৃতীয় সপ্তাহে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মার্কিন সংস্থা বোস্টন কনসাল্টিং গ্র“পের এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, জুনের শেষ সপ্তাহ অথবা

সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেশটিতে লকডাউন চলতে পারে। রোববার রাত ৯টা থেকে ৯ মিনিটের জন্য বাড়িঘরের আলো নিভিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাড়িতেও দূরত্ব বজায় রেখে দুই সপ্তাহ চলার পরামর্শ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেশটিতে করোনা ভাইরাসে মোট ৮৬ জন মারা গেছে এবং মোট তিন হাজার ৮২ জন আক্রান্ত হয়েছে।

সূত্র: সিএনএন, আনন্দবাজার, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এনডিটিভি