ঢাকা ১০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঙাভাব ধরে রাখতে এবার নির্ভেজাল, পরিচ্ছন্নকর্মী খুঁজছে আওয়ামী লীগ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৮:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ মার্চ ২০২০
  • / 130

নিউজ লাইট ৭১: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকারে আসা আওয়ামী লীগ এখন আরো চাঙা। এই চাঙাভাব ধরে রাখতে এবার নির্ভেজাল, পরিচ্ছন্নকর্মী খুঁজছে দলটি। এই লক্ষ্যে একযোগে সারা দেশে সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। তবে দলীয় গঠনতন্ত্র মেনেই নতুন সদস্য নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে আগের তুলনায় আরো কঠোর আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।

দলীয় সূত্র জানায়, নতুন সদস্য করার বিষয়ে তৃণমূলকেও কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কোনো নেতার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের, বিএনপি থেকে আসা নেতারা যেন আওয়ামী লীগে ঢুকতে না পারেন, সেদিকে নজর রয়েছে। এছাড়া বিতর্কিত কারো পরিবারের সদস্যদেরও দলে না নেওয়ার সিদ্ধান্তেও অটল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুধু আওয়ামী লীগের আদর্শ ও নীতিতে বিশ্বাসী এমন মেধাবীদেরই দলে জায়গা দেওয়া হবে। প্রাধান্য দেওয়া হবে বিগত নির্বাচনে যারা দলের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন তাদের। এদিকে, বিভিন্নভাবে আবেদন যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সদস্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সুবিধাবাদী ও বিতর্কিতদের দলটিতে অনুপ্রবেশের সুযোগ কমবে বলে মনে করেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

এসব বিষয় মাথায় রেখেই দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্বোধন করেন। এ সময় কুড়িগ্রাম ও কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিদের হাতে সদস্য সংগ্রহের বই বিতরণ করেন তিনি।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জেলা পর্যায়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছি, যাতে কোনো বিতর্কিত কেউ প্রাথমিক সদস্য হতে না পারেন। স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমিদখলকারী মাদক কারবারি, স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তি এরা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না।

দলের শীর্ষ এক সূত্র জানিয়েছে, এবার আওয়ামী লীগ ৫টি বিষয়ে বিবেচনা করে সদস্য সংগ্রহ করবে। শর্ত পূরণ হলেই একজন আওয়ামী লীগার হতে পারবে। এই শর্তের মধ্যে রয়েছে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ, সম্পৃক্ততা বা রাজনৈতিক পরিচয় থাকবে না। সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজি মামলার আসামি বা অভিযুক্ত কাউকে আওয়ামী লীগের সদস্য করা হবে না। মাদকাসক্ত বা মাদক কারবারিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টটা রয়েছে এমন কেউ সদস্য হতে পারবে না। যাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদেরও দলে নেওয়া হবে না। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়েছেন বা অভিযুক্ত তাদেরও সদস্য করা হবে না।

এবারের সদস্য অভিযান প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, এবার আমরা কঠোরভাবে সদস্য সংগ্রহে নেমেছি। হাইব্রিড বা অনুপ্রবেশকারী যে কেউ চাইলে সদস্য হতে পারবে না। আবেদনকারীর জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাচাই করে তাকে বাছাই করা হবে।

এ বিষয়ে দলের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, এবার দলে নতুন সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে অনেক সচেতন আওয়ামী লীগ। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আওয়ামী লীগ।

এর আগে ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে সরকার গঠন করার পর ২০১০ সালে ৩০ জানুয়ারি সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের কাজ শুরু করে আওয়ামী। দীর্ঘ ৭ বছর বিরতি দিয়ে ২০১৭ সালের ২০ মে গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংগঠনের সদস্য পদ সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করার পর থেকে সারা দেশে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়। দলের গঠনতন্ত্রের ধারায় বলা হয়েছে, তিন বছর পরপর একেবারে তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত পুরোনো সদস্যদের সদস্য পদ নবায়ন করার কথা।

Tag :

শেয়ার করুন

চাঙাভাব ধরে রাখতে এবার নির্ভেজাল, পরিচ্ছন্নকর্মী খুঁজছে আওয়ামী লীগ

আপডেট টাইম : ০৮:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ মার্চ ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকারে আসা আওয়ামী লীগ এখন আরো চাঙা। এই চাঙাভাব ধরে রাখতে এবার নির্ভেজাল, পরিচ্ছন্নকর্মী খুঁজছে দলটি। এই লক্ষ্যে একযোগে সারা দেশে সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। তবে দলীয় গঠনতন্ত্র মেনেই নতুন সদস্য নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে আগের তুলনায় আরো কঠোর আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।

দলীয় সূত্র জানায়, নতুন সদস্য করার বিষয়ে তৃণমূলকেও কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কোনো নেতার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের, বিএনপি থেকে আসা নেতারা যেন আওয়ামী লীগে ঢুকতে না পারেন, সেদিকে নজর রয়েছে। এছাড়া বিতর্কিত কারো পরিবারের সদস্যদেরও দলে না নেওয়ার সিদ্ধান্তেও অটল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুধু আওয়ামী লীগের আদর্শ ও নীতিতে বিশ্বাসী এমন মেধাবীদেরই দলে জায়গা দেওয়া হবে। প্রাধান্য দেওয়া হবে বিগত নির্বাচনে যারা দলের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন তাদের। এদিকে, বিভিন্নভাবে আবেদন যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সদস্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সুবিধাবাদী ও বিতর্কিতদের দলটিতে অনুপ্রবেশের সুযোগ কমবে বলে মনে করেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

এসব বিষয় মাথায় রেখেই দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্বোধন করেন। এ সময় কুড়িগ্রাম ও কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিদের হাতে সদস্য সংগ্রহের বই বিতরণ করেন তিনি।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জেলা পর্যায়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছি, যাতে কোনো বিতর্কিত কেউ প্রাথমিক সদস্য হতে না পারেন। স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমিদখলকারী মাদক কারবারি, স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তি এরা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না।

দলের শীর্ষ এক সূত্র জানিয়েছে, এবার আওয়ামী লীগ ৫টি বিষয়ে বিবেচনা করে সদস্য সংগ্রহ করবে। শর্ত পূরণ হলেই একজন আওয়ামী লীগার হতে পারবে। এই শর্তের মধ্যে রয়েছে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ, সম্পৃক্ততা বা রাজনৈতিক পরিচয় থাকবে না। সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজি মামলার আসামি বা অভিযুক্ত কাউকে আওয়ামী লীগের সদস্য করা হবে না। মাদকাসক্ত বা মাদক কারবারিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টটা রয়েছে এমন কেউ সদস্য হতে পারবে না। যাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদেরও দলে নেওয়া হবে না। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়েছেন বা অভিযুক্ত তাদেরও সদস্য করা হবে না।

এবারের সদস্য অভিযান প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, এবার আমরা কঠোরভাবে সদস্য সংগ্রহে নেমেছি। হাইব্রিড বা অনুপ্রবেশকারী যে কেউ চাইলে সদস্য হতে পারবে না। আবেদনকারীর জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাচাই করে তাকে বাছাই করা হবে।

এ বিষয়ে দলের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, এবার দলে নতুন সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে অনেক সচেতন আওয়ামী লীগ। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আওয়ামী লীগ।

এর আগে ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে সরকার গঠন করার পর ২০১০ সালে ৩০ জানুয়ারি সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের কাজ শুরু করে আওয়ামী। দীর্ঘ ৭ বছর বিরতি দিয়ে ২০১৭ সালের ২০ মে গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংগঠনের সদস্য পদ সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করার পর থেকে সারা দেশে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়। দলের গঠনতন্ত্রের ধারায় বলা হয়েছে, তিন বছর পরপর একেবারে তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত পুরোনো সদস্যদের সদস্য পদ নবায়ন করার কথা।