বাসে নার্সকে ধর্ষণ ও হত্যা: ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল
- আপডেট টাইম : ০৯:০৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০১৯
- / 123
চলন্ত বাসে নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান। বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার পরের তারিখ আগামী ১২ সেপ্টেম্বর।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলো- বাসের ড্রাইভার গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সালুয়াটেকি গ্রামের মো. নূরুজ্জামান নূরু (৩৯), হেলপার বীর উজুলি গ্রামের মো. লালন মিয়া (৩৩), বীর উজুলি গ্রামের মো. বোরহান (৩২), ভেঙ্গুরদি গ্রামের আল আমিন (২৮), লোহাদি গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম রফিক (৩০), কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ভোগপাড়া গ্রামের মো. খোকন মিয়া (৩৮), বাজিতপুর উপজেলার নিলক্ষী গ্রামের মো. বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংরা বকুল (৫০), গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও গ্রামের মো. পারভেজ সরকার পাভেল (৪০) ও একই উপজেলার ঘোড়াদিয়া গ্রামের মো. আল মামুন (৩৬)।
এদের মধ্যে পলাতক রয়েছে বোরহান, পারভেজ সরকার পাভেল ও স্বর্ণলতা পরিবহনের এমডি মো: আল মামুন।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আসামি নূরুজ্জামান নূরু, মো. লালন মিয়া ও রফিকুল ইসলাম রফিক ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণ, ধর্ষণে সহায়তা এবং ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আবদুল্লাহ আল মামুনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৪৫ জনকে।
মামলার আলামত হিসেবে একটি মোবাইল ফোন, স্বর্ণলতা পরিবহনের দুটি বাস (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৪২৭৪ এবং ঢাকা মেট্রো ব ১৪-৬২৮৫), আসামি নূরুজ্জামান নূরুর পরিহিত একটি খয়েরি রংয়ের প্রিন্টের হাফ হাতা শার্ট ও একটি কালো রংয়ের প্যান্ট এবং তার ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো: মাশরুকুর রহমান খালেদ আদালতে চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য আবেদন জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মে বিকালে কটিয়াদী উপজেলার বাহেরচর গ্রামের মো. গিয়াসউদ্দিনের কন্যা ও ঢাকার কল্যাণপুর ইবনে সিনা হাসপাতালের নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়া বাড়িতে আসার জন্য বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ড থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন।
রাত সাড়ে আটটার দিকে তানিয়ার অবস্থান জানার জন্য বাড়ি থেকে ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাত সাড়ে দশটার দিকে তানিয়ার মোবাইল থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোন করে জানান, তানিয়া দুর্ঘটনায় আহত হয়ে কটিয়াদী হাসপাতালে ভর্তি আছে। পরে আত্মীয়স্বজন দ্রুত কটিয়াদী হাসপাতালে এসে জরুরি বিভাগে তানিয়াকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
জানা যায়, ওই বাসটি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে আসার পর তানিয়া ব্যতীত সকল যাত্রী নেমে যায়। বাসটি বাজিতপুরের পিরিজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর আসামিরা তানিয়াকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও পরে তাকে হত্যা করে। পরে তার লাশ কটিয়াদী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে পালিয়ে যায়।
ইত্তেফাক/অনি