ইমারত বিধিমালা না মেনে এবং নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মাণ করা বহুতল ভবনের বিরুদ্ধে
- আপডেট টাইম : ০৮:৫২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
- / 165
নিউজ লাইট ৭১: ইমারত বিধিমালা না মেনে এবং নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মাণ করা বহুতল ভবনের বিরুদ্ধে অভিযানে নামছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। খুব শিগগিরই দ্বিতীয় দফায় একযোগে আটটি জোনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ অভিযান চালানো হবে।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকা-ের ঘটনার পর নগরীর ১০তলার বেশি বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য ত্রুটি-বিচ্যুতির ঘটনায় তদন্তে নামে রাজউক। রাজধানীর বহুতল ভবনগুলোর নির্মাণ, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয় খতিয়ে দেখতে আটটি জোনে ২৪টি টিম গঠন করে। পরে ১ এপ্রিল থেকে টিমগুলো ১০তলার অধিক উচ্চতার এক হাজার ৮১৮টি ভবন সরেজমিন পরিদর্শন করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিদর্শন করা ভবনগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খুঁজে পায়নি রাজউক। এছাড়া বহুতল ভবনে অগ্নিকা-ের সময় দ্রুত প্রস্থানের বিকল্প সিঁড়ি ব্যবস্থাও পায়নি সংস্থাটি। এছাড়া যেসব ভবনে সিঁড়ি আছে সেগুলোর অনেকগুলোই ব্যবহারের অনুপযোগী।
রাজউকের ২৪ দলের তদন্তে সবচেয়ে বেশি অনিয়মের চিত্র মিলেছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায়। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র যেমন- ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার অ্যালার্ম, হোস পাইপ, ফায়ার হাইড্রেন ব্যবস্থা নেই বেশিরভাগ ভবনে।
এর আগে রাজউক অনুমোদিত নকশার বাইরে যারা ভবন নির্মাণ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলেও এবার ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামছে সংস্থাটি। এবার অভিযানে অভিযোগ গুরুতর প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে ভবন সিলগালা করে দেওয়ারও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সংস্থাটি।
রাজধানীর বহুতল ভবনের নকশা দেখাতে গত বছরের ২ মে পর্যন্ত মালিকদের সময় বেঁধে দিয়েছিল রাজউক। তবে ওই সময়ের মধ্যে নকশা দেখাতে যারা ব্যর্থ হয়েছে সেসব ভবনে নকশা নেই বলে গণ্য করা হবে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের প্রতিটি জোনের পরিচালক দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন পদধারী রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এর আগে অভিযানে রাজধানীর সব বহুতল ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা যাচাই-বাছাই করে ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করা হবে। একই সঙ্গে প্রতিটি ভবনের রাজউকের নিয়মানুযায়ী কোনটার কী সুবিধা নেই তা বের করা হবে।
বিশেষ করে ভবনগুলোর ফায়ার সেফটির কী অবস্থা ও রাজউক কর্তৃক চিঠি দেওয়ার পরও কোনো প্রকার পরিবর্তন পরিবর্ধন বা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রতিপালনে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ২০১৬ সালে করা জরিপ অনুযায়ী, রাজউক আওতাধীন এলাকায় ২২ লাখের বেশি ইমারত রয়েছে। এর মধ্যে ৮৪ শতাংশ ছোট ভবন। আর ১০তলার অধিক তিন হাজার ২৭৩টি বহুতল ভবন রয়েছে।
২০১৬ সালের পর গত তিন বছরে এ সংখ্যা বেড়েছে। সব মিলিয়ে বহুতল ভবনের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার বেশি। কিন্তু এসব ভবনের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে মাত্র ১ হাজার ৮১৮টির তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছে রাজউক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের এক কর্মকর্তা বলেন, ২৪টি পয়েন্ট ধরে পরীক্ষা করা ভবনগুলোর মধ্যে যেসব ভবনে এসব নিয়ম মানা হয়নি সেসব ভবনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।