ঢাকা ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এডিপি বাস্তবায়নে নেয়া হচ্ছে আট কৌশল

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১১:২২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০১৯
  • / 135

চলতি অর্থবছর (২০১৯-২০) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। কেননা এর মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ন বাজেটের প্রধান অংশটিই খরচ করা হয়। এ ক্ষেত্রে শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

এটি অর্জনে ৮টি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে : মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে প্রকল্প গ্রহণ, নতুন প্রকল্প গ্রহণ বা অনুমোদনে অগ্রাধিকার তালিকা নির্ধারণ, সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্প সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়ন, চলমান প্রকল্প যথাসময়ে সংশোধন ও মেয়াদ বাড়ানো, প্রকল্পের ব্যয় খাত সংশোধন ও পুনঃউপযোজন, বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়ানো, প্রকল্প বাস্তবায়ন মনিটরিং এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন বৃদ্ধি করা।

এসব কৌশল নিয়ে আগামী ৬ আগস্ট আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বসছে পরিকল্পনা কমিশন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এতে সদ্যসমাপ্ত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপির সুষ্ঠু ও গুণগতমান বজায় রেখে বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হবে।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান যুগান্তরকে বলেন, এডিপির মানসম্পন্ন বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এ ক্ষেত্রে যেসব কৌশল গ্রহণ করলে এডিপির সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হবে, আমরা সেসব কৌশলই নিচ্ছি। চলতি অর্থবছরও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করা হবে। এ ছাড়া বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ঢাকায় ডেকে আলোচনা করা হবে। সেই সঙ্গে খাতভিত্তিক প্রকল্প ধরে ধরে আলোচনা করা হবে। এককথায় প্রকল্পের মানসম্মত বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এডিপির সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) প্রাক্কলন, প্রক্ষেপণের হার এবং এমটিবিএফ সিলিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখেই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ফলে প্রকল্পগুলোর অনুকূলে প্রয়োজনীয় অর্থের অপ্রতুলতা দেখা দেয়। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পাদন করা যায় না। ফলে আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। সে জন্য এমটিবিএফ সিলিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

এ ছাড়া নতুন প্রকল্প গ্রহণ বা অনুমোদনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। সরকারি সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিজি নিজ মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব প্রকল্পগুলোর একটি অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন করবে। সে অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে।

এতে করে নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ (থোক) থেকে ওইসব প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া যৌক্তিক হবে। ফলে থোকে থাকা অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হবে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি অগ্রাধিকার তালিকা পরিকল্পনা কমিশনে পাওয়া গেছে। আগস্ট মাসের যে কোনো সময় এটি নিয়ে সভা করা হতে পারে।চলতি অর্থবছরের এডিপিতে ৩৫৫টি প্রকল্প সম্পন্ন করার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে ৩৪১টি এবং কারিগরি সহায়তা প্রকল্প রয়েছে ১৪টি। এসব প্রকল্প নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সমাপ্ত করে জনগণের কাছে সুফল পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থাগুলোকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

Tag :

শেয়ার করুন

এডিপি বাস্তবায়নে নেয়া হচ্ছে আট কৌশল

আপডেট টাইম : ১১:২২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০১৯

চলতি অর্থবছর (২০১৯-২০) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। কেননা এর মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ন বাজেটের প্রধান অংশটিই খরচ করা হয়। এ ক্ষেত্রে শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

এটি অর্জনে ৮টি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে : মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে প্রকল্প গ্রহণ, নতুন প্রকল্প গ্রহণ বা অনুমোদনে অগ্রাধিকার তালিকা নির্ধারণ, সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্প সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়ন, চলমান প্রকল্প যথাসময়ে সংশোধন ও মেয়াদ বাড়ানো, প্রকল্পের ব্যয় খাত সংশোধন ও পুনঃউপযোজন, বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়ানো, প্রকল্প বাস্তবায়ন মনিটরিং এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন বৃদ্ধি করা।

এসব কৌশল নিয়ে আগামী ৬ আগস্ট আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বসছে পরিকল্পনা কমিশন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এতে সদ্যসমাপ্ত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপির সুষ্ঠু ও গুণগতমান বজায় রেখে বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হবে।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান যুগান্তরকে বলেন, এডিপির মানসম্পন্ন বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এ ক্ষেত্রে যেসব কৌশল গ্রহণ করলে এডিপির সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হবে, আমরা সেসব কৌশলই নিচ্ছি। চলতি অর্থবছরও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করা হবে। এ ছাড়া বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ঢাকায় ডেকে আলোচনা করা হবে। সেই সঙ্গে খাতভিত্তিক প্রকল্প ধরে ধরে আলোচনা করা হবে। এককথায় প্রকল্পের মানসম্মত বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এডিপির সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) প্রাক্কলন, প্রক্ষেপণের হার এবং এমটিবিএফ সিলিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখেই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ফলে প্রকল্পগুলোর অনুকূলে প্রয়োজনীয় অর্থের অপ্রতুলতা দেখা দেয়। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পাদন করা যায় না। ফলে আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। সে জন্য এমটিবিএফ সিলিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

এ ছাড়া নতুন প্রকল্প গ্রহণ বা অনুমোদনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। সরকারি সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিজি নিজ মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব প্রকল্পগুলোর একটি অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন করবে। সে অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে।

এতে করে নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ (থোক) থেকে ওইসব প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া যৌক্তিক হবে। ফলে থোকে থাকা অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হবে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি অগ্রাধিকার তালিকা পরিকল্পনা কমিশনে পাওয়া গেছে। আগস্ট মাসের যে কোনো সময় এটি নিয়ে সভা করা হতে পারে।চলতি অর্থবছরের এডিপিতে ৩৫৫টি প্রকল্প সম্পন্ন করার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে ৩৪১টি এবং কারিগরি সহায়তা প্রকল্প রয়েছে ১৪টি। এসব প্রকল্প নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সমাপ্ত করে জনগণের কাছে সুফল পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থাগুলোকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।