সিটি করপোরেশন পুনঃনির্বাচন কি মামা বাড়ি আবদার
- আপডেট টাইম : ০৬:৩১:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
- / 111
নিউজ লাইট ৭১: ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পুনঃনির্বাচনের জন্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের দাবির জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সিটি করপোরেশন পুনঃনির্বাচন কি মামা বাড়ি আবদার। এমনটা কেউ বলবেনা ইলেকশন ফেয়ার হয়নি। জালিয়াতির কোনো সুযোগও ছিল না।
যদি ইলেকশনে কোনো প্রকার জালিয়াতি, কারচুপির ইলেকশন হতো, কারচুপি ও জালিয়াতি হতো তাহলে কথা ছিল। আসলে কারচুপি যাতে না হয় সেজন্য আধুনিক ব্যবস্থা।
বিএনপি এখন বলার জন্য বলছে। বিরোধিতা করার জন্য করছে। তারাও জানে এই নির্বাচনে ফেয়ার ইলেকশন হয়েছে। কিছু বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতা বিষয়টা ছিল না একেবারে। আমি বলবো, মোটামুটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে। যেটাই হোক জনগণের ভোট দ্বারা তারা নির্বাচিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ৬ ফেব্রুয়ারী) রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অসমাপ্ত জেলা সম্মেলন করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন,২৯টি জেলার সম্মেলন করেছি। আগামী ২৮ তারিখ রাঙ্গামাটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই মাসের ১২, ১৩ তারিখে আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় ও টুঙ্গিপাড়ায় সম্মেলন হবে। নেত্রী বলেছেন আমার এলাকা দিয়ে শুরু করো।
আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য সাংগঠনিক-কাঠামো টা পুনর্বিন্যাসের বাকি কাজ যেখানে যেখানে প্রয়োজন সে কাজটি সম্পন্ন করার ব্যাপারে অল্পদিনের মধ্যে আলাপ আলোচনা করেছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সামনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আছে সেজন্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ এবং মহানগর সম্মেলন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরে হবে। পাহাড়ে এলাকাতে তিনটা এলাকাতে দুটো সম্মেলন হয়েছে। শুধু রাঙ্গামাটির বাকি ছিল। রাঙ্গামাটি সম্মেলন আমরা করতে যাচ্ছি। যেসব জেলা গুলোর সম্মেলন করেনি, সেসব জেলার সম্মেলনের আগে তৃণমূলের কাজ সম্পন্ন করে জেলা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত হবে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আগামীকাল আমরা দুই মহানগর এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের ডেকেছি। তাদের সাথে বসবো। তাদের সাথে কেন্দ্রীয় নির্বাহীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ।
বিএনপি সমাবেশ করতে চাই এবং তাতে তারা সরকারের সহযোগিতা চান। আপনারা তাদের (বিএনপি) কে সহযোগীতা করবেন কী না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি আমাকে একটা উদাহরণ বলেন সুনির্দিষ্টভাবে। বিএনপি ঢাকা শহরে সমাবেশ করেছে বা বাংলাদেশের কোথাও সমাবেশ করেছে। সেই সমাবেশে আওয়ামী লীগ তাদের কে ডিস্টার্ব করেছে। আওয়ামী লীগ কোথাও কোনো সমস্যা বা প্রতিবন্ধকতা, বাঁধা দেয়ার কোন উদাহরণ নেই।
বিএনপিকে আওয়ামী লীগ তাদের অনুমতি দেবে। কেন? অনুমতির ব্যাপারটা আগে থেকেই চলে আসছে। সেখানে একটা অনুমতি নিতে হয়। সেখানে নিরাপত্তার একটা বিষয় আছে। সেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একটি ভূমিকা আছে। যে কারণে আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম না আমরাও পুলিশের পারমিশন নিয়েছি।
আনুষ্ঠানিক অনুমতি নেয়া ছাড়া কোনো সমস্যা আমি দেখছি না। সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার তাদের আছে। সরকার যেমন করবে অন্যান্য বিরোধী দলও করবে। বিরোধী দল সমাবেশ করতে পারবে না এটা গণতান্ত্রিক লক্ষণ নয়। এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে না। তাদের সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতি নেয়া ছাড়া কোনো বাধাঁ নেই।
যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী কাউন্সিলর হয়েছে তাদের বিষয়ে দলের অবস্থান কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী দেশে ফিরলে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করবো দ্রুত। সেখানে আমরা সিটি নির্বাচনের বিষয়ে আলাপ আলোচনা করবো। সেখানে আমরা সাফল্য নিয়ে যেমন আলোচনা করব তেমনি দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা করব। সেখানে আমরা সিটি নির্বাচনে দলীয় কর্মকাণ্ড কিভাবে পরিচালিত হয়েছে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রত্যেকে ভোট দিয়েছেন কিনা এবং আওয়ামী লীগের যে পরিমাণ ভোট রাজধানীতে রয়েছে তারা প্রত্যেকে ভোট দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে টার্ন আউট কেন হয়েছে এজন্যই আমরা মিটিং ডেকেছি। কালকে আমরা সিটি সহ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ডেকেছি। তাদের কোনো দুর্বলতা আছে কিনা সে বিষয়েও আলোচনা হবে।
গণতন্ত্রের দেশ বলে খ্যাত আমেরিকাতেও টার্ন আউট হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সন্তুষ্ট কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সন্তুষ্ট। আমরা সন্তুষ্ট যে একটা ভালো ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। কোনোরকম ভায়োলেন্স ছাড়া একটি নির্বাচন হয়েছে। এটা সরকারের জন্য স্বস্তির বিষয় আমরা স্বস্তি পাচ্ছি।
নির্বাচনে এত কম সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি বাংলাদেশে কিন্তু একটা রেকর্ড তাতে সরকারের বা নির্বাচন কমিশনের কোনো দায় আছে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএম একটা নতুন সিস্টেম। নির্বাচন কমিশন চেষ্টা করেছে। তাদের অধীনে নির্বাচন হয়েছে কাজেই একটি ভালো ইলেকশন হয়েছে। মোটামুটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে। ইলেকশন নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, অনেকে বলেছে যে নির্বাচনে বড় ধরনের সহিংসতা হবে সেটা তো হয়নি। এটা অবশ্যই স্বস্তিদায়ক।