ঢাকা ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চর্মরোগ বর্ষায় কেন বাড়ে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৪:০৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪
  • / 40

বর্ষাকালে ত্বকের রোগ বেড়ে যায়। বৃষ্টিতে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি হওয়ার কারণে এ সময়ে ত্বকে ছত্রাক বা ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমণ বেশি হয়। ত্বক হারায় কোমলতা, হয়ে ওঠে খসখসে। এতে চুলকানি হতে পারে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া জীবাণু শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাই এ সময় চর্মরোগ থেকে রক্ষা পেতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

অ্যাথলেট ফুট:

বৃষ্টির দিনগুলোতে অধিকাংশ সময় পা ভেজা থাকলে পায়ের পাতা কিংবা দুই পাতার মাঝখানে চুলকানি বা জ্বালা হতে পারে। এটাকে অ্যাথলেট ফুট বলে এবং এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ সমস্যায় পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে শুকনো রাখতে হবে। পাশাপাশি অ্যান্টি ফাংগাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে এবং খোলা জুতা পরতে হবে।

খোস-পাঁচড়া ছোঁয়াচে এবং পরিবারের একজনের হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এর চুলকানির তীব্রতা ভয়ংকর খোস-পাঁচড়া ছোঁয়াচে এবং পরিবারের একজনের হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এর চুলকানির তীব্রতা ভয়ংকর

টিনিয়াসিস বা দাদ:

বর্ষাকালে ঘাড়, পায়ের পাতা, বগলের নিচে গোল চাকার মতো লালচে ক্ষতস্থান সৃষ্টি হতে পারে, এটাকে টিনিয়াসিস বা দাদ বলে। শরীরের নানা ভাঁজে ছত্রাক বা ফাঙ্গাসের কারণে প্রচণ্ড চুলকানির পাশাপাশি কখনো কখনো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি হতে পারে। দাদা গলা, মুখ, কুঁচকি, মলদ্বার, বুক ও পিঠে বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার পোশাক পরতে হবে। কোনোভাবেই ক্ষতস্থানে কাটাছেঁড়া করা যাবে না।

খোস-পাঁচড়া: 

এটি ছোঁয়াচে এবং পরিবারের একজনের হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এর চুলকানির তীব্রতা ভয়ংকর। খোস-পাঁচড়া হলে পরিবারের সবারই চিকিত্সা নেয়া উচিত সুরক্ষার জন্য। সারকোপটিস স্ক্যাবি নামের একধরনের পরজীবী ত্বকের বিভিন্ন স্থানে দানা সৃষ্টি করে। শিশুদের ক্ষেত্রে সময়মতো চিকিত্সা না নিলে কিডনি জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।

সেবোরিক ডারমাটাইটিস:

বৃষ্টির দিনগুলোতে এর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এটা অনেকটা তৈলাক্ত ও হলুদাভ। প্রচণ্ড চুলকাতে পারে। যার কারণে চুল পড়া বেড়ে যাওয়া, ত্বকে জ্বালাবোধ ও ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। মূলত ইস্ট নামে একধরনের ছত্রাক মাথার ত্বক, ভ্রু, মুখমণ্ডল, নাকের দুই পাশ, বুক ও পিঠের মাঝখানে ছোট ছোট দানার সৃষ্টি করে।

একজিমা ও টিনিয়া ক্যাপিটিস: 

ত্বকে জ্বালা, ত্বক ফেটে যাওয়া এবং বারবার চুলকানি হওয়া এগুলো একজিমার লক্ষণ। আর টিনিয়া ক্যাপিটিস রোগে মাথার ত্বকে দাদ হয়। তবে এই ছত্রাকজনিত রোগের ফলে ক্ষতস্থান দেখা যেতে পারে ভ্রু, দাড়িতে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া জীবাণু শক্তিশালী হয়ে ওঠার কারণে এ সময় চর্মরোগ বেশি হয়।

ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতায় করণীয়

বর্ষায় চর্মরোগ থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা খুব দরকার। প্রতিদিন গোসল করার পাশাপাশি নিয়মিত মুখমণ্ডল পরিষ্কার করতে হবে। ব্যক্তিগত চিরুনি, তোয়ালে, সাবান, বিছানা-বালিশ কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করা যাবে না।

পথে-ঘাটে নোংরা পানি ত্বকে লাগলে বাড়ি ফিরে দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে। ঘেমে গেলে পোশাক পরিবর্তন করবেন। একই পোশাক কয়েকদিন পরবেন না। আর ত্বক শুষ্ক রাখবেন, বিশেষ করে শরীরের ভাঁজগুলো।

কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা

লেবু ও বেকিং সোডা দিয়ে তৈরি পেস্ট চুলকানি হওয়া স্থানে লাগালে চুলকানি কমে। দুই চামচ বেকিং সোডা ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন গোসলের আগে এই পেস্টটি ব্যবহার করলে চুলকানি কমে যাবে।  তবে চিকিত্সক এর পরামর্শ নিয়ে করা ভালো।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

চর্মরোগ বর্ষায় কেন বাড়ে

আপডেট টাইম : ০৪:০৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

বর্ষাকালে ত্বকের রোগ বেড়ে যায়। বৃষ্টিতে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি হওয়ার কারণে এ সময়ে ত্বকে ছত্রাক বা ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমণ বেশি হয়। ত্বক হারায় কোমলতা, হয়ে ওঠে খসখসে। এতে চুলকানি হতে পারে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া জীবাণু শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাই এ সময় চর্মরোগ থেকে রক্ষা পেতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

অ্যাথলেট ফুট:

বৃষ্টির দিনগুলোতে অধিকাংশ সময় পা ভেজা থাকলে পায়ের পাতা কিংবা দুই পাতার মাঝখানে চুলকানি বা জ্বালা হতে পারে। এটাকে অ্যাথলেট ফুট বলে এবং এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ সমস্যায় পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে শুকনো রাখতে হবে। পাশাপাশি অ্যান্টি ফাংগাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে এবং খোলা জুতা পরতে হবে।

খোস-পাঁচড়া ছোঁয়াচে এবং পরিবারের একজনের হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এর চুলকানির তীব্রতা ভয়ংকর খোস-পাঁচড়া ছোঁয়াচে এবং পরিবারের একজনের হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এর চুলকানির তীব্রতা ভয়ংকর

টিনিয়াসিস বা দাদ:

বর্ষাকালে ঘাড়, পায়ের পাতা, বগলের নিচে গোল চাকার মতো লালচে ক্ষতস্থান সৃষ্টি হতে পারে, এটাকে টিনিয়াসিস বা দাদ বলে। শরীরের নানা ভাঁজে ছত্রাক বা ফাঙ্গাসের কারণে প্রচণ্ড চুলকানির পাশাপাশি কখনো কখনো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি হতে পারে। দাদা গলা, মুখ, কুঁচকি, মলদ্বার, বুক ও পিঠে বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার পোশাক পরতে হবে। কোনোভাবেই ক্ষতস্থানে কাটাছেঁড়া করা যাবে না।

খোস-পাঁচড়া: 

এটি ছোঁয়াচে এবং পরিবারের একজনের হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এর চুলকানির তীব্রতা ভয়ংকর। খোস-পাঁচড়া হলে পরিবারের সবারই চিকিত্সা নেয়া উচিত সুরক্ষার জন্য। সারকোপটিস স্ক্যাবি নামের একধরনের পরজীবী ত্বকের বিভিন্ন স্থানে দানা সৃষ্টি করে। শিশুদের ক্ষেত্রে সময়মতো চিকিত্সা না নিলে কিডনি জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।

সেবোরিক ডারমাটাইটিস:

বৃষ্টির দিনগুলোতে এর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এটা অনেকটা তৈলাক্ত ও হলুদাভ। প্রচণ্ড চুলকাতে পারে। যার কারণে চুল পড়া বেড়ে যাওয়া, ত্বকে জ্বালাবোধ ও ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। মূলত ইস্ট নামে একধরনের ছত্রাক মাথার ত্বক, ভ্রু, মুখমণ্ডল, নাকের দুই পাশ, বুক ও পিঠের মাঝখানে ছোট ছোট দানার সৃষ্টি করে।

একজিমা ও টিনিয়া ক্যাপিটিস: 

ত্বকে জ্বালা, ত্বক ফেটে যাওয়া এবং বারবার চুলকানি হওয়া এগুলো একজিমার লক্ষণ। আর টিনিয়া ক্যাপিটিস রোগে মাথার ত্বকে দাদ হয়। তবে এই ছত্রাকজনিত রোগের ফলে ক্ষতস্থান দেখা যেতে পারে ভ্রু, দাড়িতে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া জীবাণু শক্তিশালী হয়ে ওঠার কারণে এ সময় চর্মরোগ বেশি হয়।

ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতায় করণীয়

বর্ষায় চর্মরোগ থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা খুব দরকার। প্রতিদিন গোসল করার পাশাপাশি নিয়মিত মুখমণ্ডল পরিষ্কার করতে হবে। ব্যক্তিগত চিরুনি, তোয়ালে, সাবান, বিছানা-বালিশ কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করা যাবে না।

পথে-ঘাটে নোংরা পানি ত্বকে লাগলে বাড়ি ফিরে দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে। ঘেমে গেলে পোশাক পরিবর্তন করবেন। একই পোশাক কয়েকদিন পরবেন না। আর ত্বক শুষ্ক রাখবেন, বিশেষ করে শরীরের ভাঁজগুলো।

কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা

লেবু ও বেকিং সোডা দিয়ে তৈরি পেস্ট চুলকানি হওয়া স্থানে লাগালে চুলকানি কমে। দুই চামচ বেকিং সোডা ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন গোসলের আগে এই পেস্টটি ব্যবহার করলে চুলকানি কমে যাবে।  তবে চিকিত্সক এর পরামর্শ নিয়ে করা ভালো।

নিউজ লাইট ৭১