ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ পদ্মা সেতুর দুই বছর পূর্তি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪
  • / 27

ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা সেতু চালুর দুই বছর পূর্তি হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন)। চালুর পর পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সহজ করে দিয়েছে। এখন ঢাকার সায়েদাবাদ পার হওয়ার পর থেকে বরিশালে যাওয়া যাচ্ছে তিন-চার ঘণ্টায়। খুলনায় চার ঘণ্টায় পৌঁছে যাচ্ছে মানুষ। মালামাল পরিবহনও হয়েছে সহজ। 

তবে যোগাযোগ খাতের যুগান্তকারী এই স্থাপনা নির্মাণ প্রকল্প শেষ হতে দেড় দশক লেগেছে। এর ফলে প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নানা জটিলতার পর দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল দুই ঠিকাদার চীনের। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার। ব্যবহৃত মালামালের ৯০ শতাংশই বিদেশ থেকে কেনা। অর্থ মন্ত্রণালয় যে টাকা বিনিয়োগ করেছে, এর বেশির ভাগই ঠিকাদার ও পরামর্শকদের বিল বাবদ ডলারে পরিশোধ করা হয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয় সেতু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে।

এদিকে পদ্মা সেতু এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা টোল আদায়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। দেশের বৃহত্তম এই সেতু চালু হওয়ার পর থেকে চলতি বছর ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজার ৫০২ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। গেল ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতু সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত সেতুর উভয় প্রান্ত দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে এক কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৫টি। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পারাপার হয়েছে ৫৬ লাখ এক হাজার ২৩২টি। আর জাজিরা প্রান্ত থেকে যানবাহন পারাপার হয়েছে ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৩টি। এছাড়া কোরবানি ঈদে পদ্মা সেতুতে গত ১৩ দিনে টোল আদায় হয়েছে ৪২ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫০ টাকা। গত ১০ জুন থেকে ২২ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এই টোল আদায় হয়েছে বলে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।

রবিবার পদ্মা সেতু সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী জানান, গত ১০ জুন থেকে ২২ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্ত দিয়ে এই টোল আদায় হয়েছে। ১৩ দিনে দুই প্রান্ত দিয়ে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ১১০টি যানবাহন পদ্মা সেতু পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৫টি যানবাহন আর জাজিরা প্রান্ত দিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ২৪০টি যানবাহন পদ্মা সেতু পার হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি টোল আদায় হয়েছে ১৪ জুন। ওই দিন ৪ কোটি ৮২ লাখ ১৮ হাজার ৬০০ টাকা টোল আদায় হয়। এ ছাড়া গত ২২ জুন ৩ কোটি ৭৮ লাখ, ৯২ হাজার ২৫০ টাকা, ২১ জুন টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ, ৬২ হাজার ৫০ টাকা, ২০ জুন টোল আদায় হয় ২ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার ১৫০ টাকা। এর আগে ১৫ জুন টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৩০ লাখ ৮২ হাজার ৯০০ টাকা, ১৬ জুন ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৭১ হাজার ১৫০ টাকা, ১৭ জুন ঈদের দিন ১ কোটি ৬৭ লাখ ১৬ হাজার ৫৫০ টাকা, ১৮ জুন ২ কোটি ৭১ লাখ ২২ হাজার টাকা এবং ১৯ জুন ২ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর আগে ১০ জুন টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা, ১১ জুন ২ কোটি ৮২ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা, ১২ জুন ৩ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৫০ টাকা এবং ১৩ জুন টোল আদায় হয় ৩ কোটি ৬৮ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। ২৬ জুন থেকে সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেতু চালু হওয়ার পর প্রথম দিন ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন সেতু ব্যবহার করেছিল। সেদিন টোল আদায় হয় দুই কোটি ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫৫০ টাকা। উদ্বোধনের পর থেকে গেল বছরের ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতু পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ খরচ হয়েছে ১৪২ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ২৫ টাকা। সেতুর টোল আদায় কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা, সংযোগ সড়ক ও মূল সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও নদীশাসন কাজ রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হয়েছে এ টাকা। বর্তমানে পদ্মা সেতুর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করছে কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) এবং পদ্মা সেতুর নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমবিইসি) জয়েন্ট ভেঞ্চার।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচ বছরের জন্য পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি। এর মধ্যে কেইসি লিড হিসেবে কাজ করছে এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দুটি দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছে। এর মধ্যে কেইসি সার্ভিস এরিয়া ও সংযোগ সড়ক, টোল আদায় ও পরিচালনা, ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম (আইটিএস) স্থাপন এবং ট্রাফিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে। অন্যদিকে এমবিইসি মেইন ব্রিজ (টোল মনিটরিং সিস্টেম ও অ্যানালাইসিস ছাড়া) ও নদীশাসন কাজ দেখাশোনা করছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ কেইসি ও এমবিইসির জয়েন্ট ভেঞ্চার পাবে ৬৯৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচ বছরের জন্য যে দুটি প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে, কোম্পানি গঠনের পর তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি সরঞ্জাম গ্রহণ করা হবে। দুই কোম্পানির নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ স্বতন্ত্র কোম্পানির মাধ্যমে সেতু কর্তৃপক্ষ নিজেই করবে।

সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থ বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঋণ চুক্তি অনুযায়ী, ১ শতাংশ সুদসহ ৩৫ বছরে ঋণের টাকা ফেরত দেবে সেতু কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে অর্থ বিভাগ থেকে নেয়া ঋণের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা কিস্তিও পরিশোধ করেছে সংস্থাটি।

চুক্তি অনুযায়ী বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে সেতুটির ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের এ ঋণ পরিশোধের জন্য ২০৫৬-৫৭ অর্থবছর পর্যন্ত সময় পাবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ঋণ পরিশোধের শিডিউল অনুযায়ী প্রতি অর্থবছরে চারটি কিস্তি করে সর্বমোট ১৪০টি কিস্তিতে সুদ-আসল পরিশোধ করা হবে।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

আজ পদ্মা সেতুর দুই বছর পূর্তি

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

পদ্মা সেতু চালুর দুই বছর পূর্তি হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন)। চালুর পর পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সহজ করে দিয়েছে। এখন ঢাকার সায়েদাবাদ পার হওয়ার পর থেকে বরিশালে যাওয়া যাচ্ছে তিন-চার ঘণ্টায়। খুলনায় চার ঘণ্টায় পৌঁছে যাচ্ছে মানুষ। মালামাল পরিবহনও হয়েছে সহজ। 

তবে যোগাযোগ খাতের যুগান্তকারী এই স্থাপনা নির্মাণ প্রকল্প শেষ হতে দেড় দশক লেগেছে। এর ফলে প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নানা জটিলতার পর দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল দুই ঠিকাদার চীনের। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার। ব্যবহৃত মালামালের ৯০ শতাংশই বিদেশ থেকে কেনা। অর্থ মন্ত্রণালয় যে টাকা বিনিয়োগ করেছে, এর বেশির ভাগই ঠিকাদার ও পরামর্শকদের বিল বাবদ ডলারে পরিশোধ করা হয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয় সেতু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে।

এদিকে পদ্মা সেতু এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা টোল আদায়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। দেশের বৃহত্তম এই সেতু চালু হওয়ার পর থেকে চলতি বছর ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজার ৫০২ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। গেল ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতু সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত সেতুর উভয় প্রান্ত দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে এক কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৫টি। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পারাপার হয়েছে ৫৬ লাখ এক হাজার ২৩২টি। আর জাজিরা প্রান্ত থেকে যানবাহন পারাপার হয়েছে ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৩টি। এছাড়া কোরবানি ঈদে পদ্মা সেতুতে গত ১৩ দিনে টোল আদায় হয়েছে ৪২ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫০ টাকা। গত ১০ জুন থেকে ২২ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এই টোল আদায় হয়েছে বলে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।

রবিবার পদ্মা সেতু সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী জানান, গত ১০ জুন থেকে ২২ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্ত দিয়ে এই টোল আদায় হয়েছে। ১৩ দিনে দুই প্রান্ত দিয়ে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ১১০টি যানবাহন পদ্মা সেতু পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৫টি যানবাহন আর জাজিরা প্রান্ত দিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ২৪০টি যানবাহন পদ্মা সেতু পার হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি টোল আদায় হয়েছে ১৪ জুন। ওই দিন ৪ কোটি ৮২ লাখ ১৮ হাজার ৬০০ টাকা টোল আদায় হয়। এ ছাড়া গত ২২ জুন ৩ কোটি ৭৮ লাখ, ৯২ হাজার ২৫০ টাকা, ২১ জুন টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ, ৬২ হাজার ৫০ টাকা, ২০ জুন টোল আদায় হয় ২ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার ১৫০ টাকা। এর আগে ১৫ জুন টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৩০ লাখ ৮২ হাজার ৯০০ টাকা, ১৬ জুন ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৭১ হাজার ১৫০ টাকা, ১৭ জুন ঈদের দিন ১ কোটি ৬৭ লাখ ১৬ হাজার ৫৫০ টাকা, ১৮ জুন ২ কোটি ৭১ লাখ ২২ হাজার টাকা এবং ১৯ জুন ২ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর আগে ১০ জুন টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা, ১১ জুন ২ কোটি ৮২ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা, ১২ জুন ৩ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৫০ টাকা এবং ১৩ জুন টোল আদায় হয় ৩ কোটি ৬৮ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। ২৬ জুন থেকে সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেতু চালু হওয়ার পর প্রথম দিন ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন সেতু ব্যবহার করেছিল। সেদিন টোল আদায় হয় দুই কোটি ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫৫০ টাকা। উদ্বোধনের পর থেকে গেল বছরের ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতু পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ খরচ হয়েছে ১৪২ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ২৫ টাকা। সেতুর টোল আদায় কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা, সংযোগ সড়ক ও মূল সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও নদীশাসন কাজ রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হয়েছে এ টাকা। বর্তমানে পদ্মা সেতুর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করছে কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) এবং পদ্মা সেতুর নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমবিইসি) জয়েন্ট ভেঞ্চার।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচ বছরের জন্য পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি। এর মধ্যে কেইসি লিড হিসেবে কাজ করছে এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দুটি দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছে। এর মধ্যে কেইসি সার্ভিস এরিয়া ও সংযোগ সড়ক, টোল আদায় ও পরিচালনা, ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম (আইটিএস) স্থাপন এবং ট্রাফিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে। অন্যদিকে এমবিইসি মেইন ব্রিজ (টোল মনিটরিং সিস্টেম ও অ্যানালাইসিস ছাড়া) ও নদীশাসন কাজ দেখাশোনা করছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ কেইসি ও এমবিইসির জয়েন্ট ভেঞ্চার পাবে ৬৯৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচ বছরের জন্য যে দুটি প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে, কোম্পানি গঠনের পর তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি সরঞ্জাম গ্রহণ করা হবে। দুই কোম্পানির নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ স্বতন্ত্র কোম্পানির মাধ্যমে সেতু কর্তৃপক্ষ নিজেই করবে।

সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থ বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঋণ চুক্তি অনুযায়ী, ১ শতাংশ সুদসহ ৩৫ বছরে ঋণের টাকা ফেরত দেবে সেতু কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে অর্থ বিভাগ থেকে নেয়া ঋণের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা কিস্তিও পরিশোধ করেছে সংস্থাটি।

চুক্তি অনুযায়ী বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে সেতুটির ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের এ ঋণ পরিশোধের জন্য ২০৫৬-৫৭ অর্থবছর পর্যন্ত সময় পাবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ঋণ পরিশোধের শিডিউল অনুযায়ী প্রতি অর্থবছরে চারটি কিস্তি করে সর্বমোট ১৪০টি কিস্তিতে সুদ-আসল পরিশোধ করা হবে।

নিউজ লাইট ৭১